পেট্রাপোলে সুসংহত চেকপোস্টের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হল বৃহস্পতিবার। দিল্লি থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, ঢাকা থেকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ে এনে উদ্বোধনের ব্যবস্থা হয়েছিল। দিল্লিতে মোদীর সঙ্গে হাজির ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজও। এ দিন দুপুরে পেট্রাপোলে চেকপোস্টের মূল ভবনে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল এই উপলক্ষে।
শুরুতে কথা ছিল, বিকেল ৪টেয় আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে। কিন্তু মমতা দিল্লিকে জানিয়ে দেন, একুশে জুলাইয়ের সমাবেশ উপলক্ষে তিনি ব্যস্ত থাকবেন। মমতাকে অনুষ্ঠানে সামিল করার জন্যই উদ্বোধনের সময় পিছিয়ে বিকেল সাড়ে ৪টে করা হয় বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। অনুষ্ঠানে হাজির থাকার জন্য মমতাকে পরে ধন্যবাদ জানান মোদী। পাল্টা সৌজন্য হিসাবে মমতা জানান, অনুষ্ঠানে থাকতে পেরে তিনি কৃতজ্ঞ। দু’দেশের প্রধানমন্ত্রীকে এ জন্য ধন্যবাদও জানান।
ধর্মতলায় একুশের সমাবেশ থেকে মমতা মোদী সরকারের বিরুদ্ধে লাগাতার তোপ দেগেছেন। ঘটনাচক্রে এ দিনই চেকপোস্টের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ভারত-বাংলাদেশ সুসম্পর্ক বজায় রাখার ক্ষেত্রে এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকার তারিফ করেন মোদী। দু’দেশের সম্পর্কের স্বার্থে দুই প্রধানমন্ত্রীকে মমতাও বলেন, ‘‘আপনারা যে ভাবে বলবেন, সে ভাবেই কাজ করব।’’
বক্তারা সকলেই পেট্রাপোলে সুসংহত চেকপোস্টের মাধ্যমে দু’দেশের সামগ্রিক সম্পর্কের উন্নতি নিয়ে আশা প্রকাশ করেছেন। মোদী আবার বাংলাদেশে সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলার নিন্দা করে বলেন, ‘‘জঙ্গি মোকাবিলায় আপনারা নিজেদের একা ভাববেন না। গোটা ভারত আপনাদের সঙ্গে আছে।’’ যে ভাবে কঠিন পরিস্থিতির মোকাবিলা করছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী, তার প্রশংসা করেছেন মোদী।
হাসিনার আশা, বাণিজ্য যত বাড়বে, দু’দেশের আর্থ-সামাজিক পরিকাঠামোও তত বাড়বে। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা এর আগে যে কোনও সমস্যা দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়েছি। পরেও মিটিয়ে ফেলব।’’
অন্য দিকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক গঙ্গা, তিস্তা, বাণিজ্যের মতো অনেক কিছুর উপরে নির্ভর করে।’’ সুসংহত চেকপোস্ট চালু হওয়ায় দু’দেশের মধ্যে ব্যবসার নতুন সীমানা উন্মোচিত হল বলে তাঁর মত।
দ্বিতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ায় মমতাকে এ দিন অভিনন্দন জানিয়েছেন হাসিনা। তাঁকে ইদের শুভেচ্ছা জানান মমতা।