—ফাইল চিত্র।
ছেলে ল়ড়ছে সেনার সঙ্গে। খবর পেয়েই উদ্বেগে প্রায় পাগলের মতো হয়ে গিয়েছিলেন মহম্মদ ইশাক নাইকু। কিছু ক্ষণ পরেই অসুস্থ মহম্মদকে নিয়ে হাসপাতালে দৌড়ন আত্মীয়েরা। চিকিৎসকেরা জানান, তিনি মৃত। হৃদ্রোগে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। পরে জানা গিয়েছে, দক্ষিণ কাশ্মীরের শোপিয়ানে বাহিনীর সঙ্গে নিহত দুই জঙ্গির মধ্যে আদৌ নেই মহম্মদের ছেলে জিনাত নাইকু।
সেনা জানিয়েছে, আজ শোপিয়ানের কুন্দালানে জঙ্গি গতিবিধির খবর পেয়ে তল্লাশি শুরু করে যৌথ বাহিনী। জঙ্গিরা বাহিনীকে লক্ষ্য করে গুলি করলে সংঘর্ষ শুরু হয়। সেই সময়েই শোপিয়ানের মেমদার গ্রামের কয়েক জন বাসিন্দার কানে আসে গ্রামের ছেলে জিনাত নাইকু কুন্দালানে বাহিনীর সঙ্গে লড়ছে। পরে গ্রামের মসজিদের মাইকেও একই কথা ঘোষণা করা হয়। গ্রামের ছেলে জিনাতকে বাঁচাতে স্থানীয় বাসিন্দাদের ঘটনাস্থলে যেতেও বলা হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বছর বাষট্টির মহম্মদ নাইকু তখন প্রাতরাশ খেতে বসেছিলেন। তাঁর ছেলে কুন্দালানে বাহিনীর সঙ্গে লড়ছে শুনেই ছটফট করতে শুরু করেন তিনি। কয়েক বছর ধরে ডায়াবিটিসে ভুগছিলেন মহম্মদ। উদ্বেগের ফলে শেষ পর্যন্ত হৃদ্রোগে আক্রান্ত হন ওই দিনমজুর। শোপিয়ান জেলা হাসপাতালে নিয়ে এলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
সংঘর্ষের সময়ে বাহিনীকে লক্ষ্য করে পাথর ছুড়তে থাকেন স্থানীয়দের একাংশ। পরিস্থিতি সামলাতে গুলি চালায় বাহিনী। তাতে আহত হন ৪৫ জন। গুরুতর আহত চার জনকে শ্রীনগরের হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখানেই মৃত্যু হয় তামশিল আহমেদ খান নামে এক যুবকের।
পরে সংঘর্ষে নিহত দুই জঙ্গির পরিচয় প্রকাশ করে সেনা। তাদের মধ্যে রয়েছে জইশ ই মহম্মদের পাকিস্তানি কম্যান্ডার বাবর। দ্বিতীয় জঙ্গির নাম সামির আহমেদ শেখ। সে স্থানীয় বাসিন্দা। কেবল গুজব থেকেই মহম্মদ নাইকুর মৃত্যুতে ব্যথিত মেমদারা গ্রাম তথা গোটা এলাকার বাসিন্দারা। এ দিনই বিএসএফের গুলিতে আহত এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। ২৫ জুন উত্তর কাশ্মীরের বারামুলায় বাহিনীকে লক্ষ্য করে পাথর ছোড়ে এক দল ছাত্র। পরিস্থিতি সামলাতে গুলি চালায় বিএসএফ। তাতে গুরুতর আহত হয় একাদশ শ্রেণির পড়ুয়া উবেইদ মনজুর লোন। আজ হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে তার।