নিখিল সোমবংশী (২৫)। — ফাইল চিত্র।
ফের বেঙ্গালুরুতে মৃত্যু হল তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় কর্মরত যুবকের। চলতি মাসের শুরুতে বেঙ্গালুরুর আগরা লেকের কাছে ঘটনাটি ঘটেছে। ২৫ বছর বয়সি ওই ইঞ্জিনিয়ার বেঙ্গালুরুর একটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় কাজ করতেন। তাঁর মৃত্যুর প্রায় দু’সপ্তাহ পর সমাজমাধ্যমে তাঁর ‘আত্মহত্যা’র কথা স্বীকার করেছেন সংস্থারই কিছু কর্মী। নিজেদের পরিচয় গোপন রেখে তাঁরা সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, বিষাক্ত কর্মসংস্কৃতি এবং শোষণের কারণেই আত্মহত্যা করেছেন ওই ইঞ্জিনিয়ার।
গত ৮ মে বেঙ্গালুরুতে ওলার তথ্যপ্রযুক্তি শাখা ক্রুট্রিম-এ কর্মরত ইঞ্জিনিয়ার নিখিল সোমবংশীর (২৫) দেহ উদ্ধার হয়। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান ছিল, তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন। তবে ওই ঘটনার প্রায় দুই সপ্তাহ পর রবিবার সমাজমাধ্যমে এই খবর প্রকাশ্যে আসে। শুরু হয় বিতর্ক। গত ৮ মে একটি হ্রদে নিখিলের দেহ মিলেছিল। বছর পঁচিশের প্রাণবন্ত যুবক নিখিল ২০২৪ সালে বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স (আইআইএসসি) থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ওই বছরই আগস্ট মাসে ওলার মালিকানাধীন সংস্থা ক্রুট্রিমে মেশিন লার্নিং ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে যোগদান করেন তিনি। ছাত্রজীবনেও পড়াশোনায় তুখোড় ছিলেন নিখিল। তবে অভিযোগ, সংস্থায় কাজ শুরুর পরেই তাঁর উপর নানা ভাবে বাড়তি চাপ সৃষ্টি করতে থাকেন তাঁর ঊর্ধ্বতনেরা। কখনও কখনও কর্মচারীদের অকথ্য ভাষায় তিরস্কারও করা হত বলে অভিযোগ। এর ফলে সম্প্রতি বাধ্য হয়ে অনেকে সংস্থা থেকে পদত্যাগও করেছিলেন। কিন্তু নিখিল রয়ে যান। তবে ক্রমেই মানসিক ভাবে ভেঙে পড়ছিলেন তিনি। শেষমেশ চলতি মাসের শুরুতে আত্মহননের পথ বেছে নেন ওই যুবক।
তাঁর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করে সংস্থার তরফে বলা হয়েছে, ঘটনার সময় নিখিল ছুটিতে ছিলেন। সমাজমাধ্যমে সংস্থাটির কিছু প্রাক্তন কর্মী এক সিনিয়র ম্যানেজারের নামে অভিযোগ তুলেছেন। উল্লেখ্য, গত বছরের অগস্ট মাসেই ‘কাজের চাপে’ মৃত্যু হয়েছিল পুণের বহুজাতিক সংস্থা আর্নস্ট অ্যান্ড ইয়ং (ইওয়াই)-এ কর্মরত চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট অ্যানা সেবাস্টিয়ানের (২৬)। এই ঘটনায় বিতর্ক শুরু হয় নানা মহলে। সংস্থাকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে চিঠিও লেখেন মৃতার মা। পাল্টা মুখ খোলে সংস্থাও। ওই ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রক। ওই ঘটনার পর থেকে কর্পোরেটগুলিতে কাজের পরিবেশ বদলের জন্য সুর চড়াতে শুরু করেছেন অনেকে। সমাজমাধ্যমেও চলছে বিস্তর লেখালিখি। তার মাঝেই ফের কর্মীমৃত্যুর ঘটনা ঘটল।