তিন জনে ছিল হরিহর আত্মা। আজ সকালে কুয়োর বেদিতে বসে গল্প করছিল তিন জনে। অসাবধানতায় এক বন্ধু পড়ে যায় কুয়োর মধ্যে। বন্ধুকে বাঁচাতে প্রথমে এক বন্ধু ঝাঁপ দেন কুয়োতে। এরপর দুই বন্ধুর কেউই উঠছে না দেখে তৃতীয় বন্ধুও ঝাঁপ দিল ওই কুয়োতে। শেষ পর্যন্ত কেউই কুয়ো থেকে বেঁচে উঠতে পারল। একই সঙ্গে মারা গেল তিন বন্ধু।
বোকারো জেলার বেরমোর জোরিডিহতে আজকের এই ঘটনা সম্পর্কে পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের নাম আব্দুর রহমান (৩০), জকি কুমার (২৫) ও রকি নিষাদ (২৬)। সময় মতো দমকলের উদ্ধারকারী দল না আসায় কাউকেই বাঁচানো গেল না, এই অভিযোগে স্থানীয় বাসিন্দারা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভও দেখান। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল দশটা নাগাদ দুর্ঘটনাটি ঘটে। তিন বন্ধু মাঝেমধ্যেই ওই কুয়োতলার বেদিতে বসে গল্প করত। আজও সে রকমই গল্প করছিল ওরা। স্থানীয়রা জানায়, প্রথমে পড়ে যায় আব্দুর। তাকে পড়তে দেখে জকি ও নিষাদ চিৎকার চেচামেচি শুরু করে। বন্ধু হাবুডুবু খাচ্ছে দেখে কুয়োতে ঝাঁপিয়ে পড়ে জকি। কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, ঘটনার সময় কুয়োতলার সামনে ভিড় জমে গিয়েছিল। দু’জনের কেউই উঠছে না দেখে রকিও ওদের বাঁচাতে ঝাঁপ মারতে যায়। তারা রকিকে বারণ করেছিল। কিন্তু শোনেনি সে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, তিন বন্ধুই কিন্তু সাঁতারে দক্ষ ছিল। গ্রামের পুকুরে ডুবন্ত মানুষকে তারা উদ্ধার করেছে এরকম ঘটনাও ঘটেছে। যে কুয়োয় তিনজন পড়ে যান সেই কুয়ো বেশ গভীর হলেও তাতে জল বেশি ছিল না। ফলে কুয়ো থেকে তিনজনই উঠতে পারবে, এমনটাই ভেবেছিলেন তাঁরা। কিন্তু তিন জনের দেহই ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে যায়। পরে তাদের দেহ দমকল উদ্ধার করে। তাদের কয়েকজন জানিয়েছেন, জল বেশি না থাকলেও ওই কুয়োয় বিষাক্ত গ্যাস থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ তাঁরা গ্যাসের কটু গন্ধ পেয়েছেন। বোকারোর ডিসি রাই মহিমাপত রায় বলেন, ‘‘পুরো ঘটনার তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। তিন জনের দেহই ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।’’