জেলে বসেই এমএ পড়ছেন প্রৌঢ় ফকরুদ্দিন

জেলে আসার আগেই স্নাতক হন ফকরুদ্দিন। এ বার ভর্তি হন সমাজবিদ্যার এমএ পাঠ্যক্রমে। অন্য ৮ বন্দি নাম লেখান স্নাতক প্রস্তুতি পাঠ্যক্রমে।

Advertisement

উত্তম সাহা

শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০১৮ ০৩:১৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

জেলে বসে এমএ পরীক্ষা দিচ্ছেন ৫২ বছরের ফকরুদ্দিন বড়ভুইয়া।

Advertisement

একে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত, তার উপর গত ২২ বছরে পড়াশোনার সঙ্গে কোনও সংশ্রব ছিল না তাঁর। তবু মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় শিলচর জেলে তাদের ‘স্টাডি সেন্টার’ গড়লে নতুন উদ্যমে পড়াশোনা করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

জেলে আসার আগেই স্নাতক হন ফকরুদ্দিন। এ বার ভর্তি হন সমাজবিদ্যার এমএ পাঠ্যক্রমে। অন্য ৮ বন্দি নাম লেখান স্নাতক প্রস্তুতি পাঠ্যক্রমে। জেলের স্কুল ঘরেই পরীক্ষা গ্রহণের ব্যবস্থা হয়। এমএ-তে ফকরুদ্দিন একা বলে তাঁর জন্যই প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্র নিয়ে শিলচর জেলে হাজির হন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনভিজিলেটর।

Advertisement

এই বয়সে চাকরি-বাকরির ব্যাপার তো নেই। তবু ফকরুদ্দিন দু’টি বিষয়ে বিশ্বাস করেন। প্রথমত, শিক্ষার কোনও বয়স নেই।

দ্বিতীয়ত, কোনও শিক্ষাই কখনও বৃথা যায় না। তাঁর আশা, একদিন জেল থেকে বেরনোর সুযোগ পাবেন। সে দিন এই শিক্ষাকেই সমাজের কাজে লাগানোর চেষ্টা করবেন।

আরও একটি কারণ অবশ্য রয়েছে। ফকরুদ্দিনের কথায়, ‘‘১৯৯৬ সালে বিএ পাশ করে একটি বেসরকারি স্কুলে শিক্ষকতা করতাম। খুনের মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে ১০ বছর ধরে শিলচর জেলে রয়েছি। কিন্তু এক জায়গায় এত বছর ধরে বসে কীই বা করা যায়! তাই স্টাডি সেন্টারে ভর্তি হলাম।’’ তাঁর কাছে এই চ্যালেঞ্জ সময় কাটানোরও সুযোগ করে দিয়েছে।

শিলচরের সেন্টার কো-অর্ডিনেটর হেমন্ত কুমার বরার কথায়, ৫২ বছর বয়স হলেও অবিবাহিত ফকরুদ্দিন পুরোদস্তুর ছাত্রের মতোই পড়াশোনা করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠন সামগ্রীর বাইরেও ভাল নম্বরের আশায় পড়ছেন নানা সহায়ক বই। তাঁকে নিয়ে আশাবাদী জেল সুপার হরেনচন্দ্র কলিতাও। ফকরুদ্দিনের নিয়মিত পড়াশোনা জেলের ভিতরের পরিবেশটাই বদলে দিয়েছে। হরেনবাবুর সেটাই লাভ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement