Balakrishna Aiya Goa

পাথর কেটে খরাক্লিষ্ট গ্রামে জল আনলেন ৭৬ বছরের বৃদ্ধ! গোয়ার বালকৃষ্ণের ঝুলিতে বহু সম্মান

৭৬ বছর বয়সি ওই বৃদ্ধের নাম বালকৃষ্ণ আইয়া। গোয়ার কানাকোনার লোলিয়েমের বাসিন্দা বালকৃষ্ণ এককালে শিক্ষকতা করতেন। পরে মাটির প্রতিমা গড়া শুরু করেন। ঊষর মাড্ডি-টলপ এলাকায় জল এনে সকলকে অবাক করে দিয়েছেন তিনি।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০২৫ ১৩:২৬
Share:

বালকৃষ্ণ আইয়া। ছবি: সংগৃহীত।

গোয়ার মাড্ডি-টলপ। খটখটে শুকনো পাথুরে জমিতে আর্দ্রতার ছিটেফোঁটাও নেই। আর এ হেন জমিতেই অদ্ভুত উদ্ভাবনী শক্তিতে জলের ব্যবস্থা করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন এক বৃদ্ধ।

Advertisement

সংবাদমাধ্যম ‘টাইম্‌স অফ ইন্ডিয়া’র একটি প্রতিবেদন সূত্রে জানা গিয়েছে, ৭৬ বছর বয়সি ওই বৃদ্ধের নাম বালকৃষ্ণ আইয়া। গোয়ার কানাকোনার লোলিয়েমের বাসিন্দা বালকৃষ্ণ এককালে শিক্ষকতা করতেন। পরে মাটির প্রতিমা গড়া শুরু করেন। ঊষর মাড্ডি-টলপ এলাকায় জল এনে সকলকে অবাক করে দিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘সবাই বলেছিল, এখানে কূপ খনন করা অসম্ভব।’’ কিন্তু তাতে দমেননি বৃদ্ধ। অদ্ভূত বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে পাথর কেটে ওই এলাকার বাসিন্দাদের কাছে জল পৌঁছে দিয়েছেন তিনি। কোঙ্কণি ভাষায় ‘মাড্ডি-টলপ’ কথার অর্থ হল ‘পাথুরে এলাকা’। নাম থেকেই এ কথা স্পষ্ট যে, জল এখানকার বাসিন্দাদের কাছে খুবই অপ্রতুল এবং দামি। ভূমিরূপগত কারণে মাড্ডি-টলপে জলের আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন ভূতাত্ত্বিকেরাও। কারণ, মাড্ডি-টলপের মাটির ত্রিস্তরীয় বিন্যাস রয়েছে। প্রথমে রয়েছে একটি পাথুরে উপরিস্তর, মাঝে কাদামাটি এবং একেবারে নীচে রয়েছে শক্ত কালো পাথরের দেওয়াল।

বালকৃষ্ণের কথায়, ‘‘আমি দিনের পর দিন এই জমি নিয়েই পড়ে ছিলাম। প্রচুর পড়াশোনাও করেছি। তার পর আমার মাথায় এমন এক বুদ্ধি এল যা আগে কেউ চেষ্টা করে দেখেনি।’’ জলের জন্য মাটি খোঁড়ার এক পদ্ধতি আবিষ্কার করেন বালকৃষ্ণ। তাঁর উদ্ভাবনকে বৈপ্লবিক বলে মনে করছেন গ্রামবাসীরা। কারণ, এর আগে গভীর কুয়ো খনন করতে গেলেই মাঝে নরম কাদামাটি থাকার কারণে উপরের পাথরের দেওয়াল হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ত। ফলে পাথরের নীচে আটকা পড়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়তেন শ্রমিকেরা। সব দেখে বালকৃষ্ণ ঠিক করেন, খননকার্য শুরুর আগেই প্রথমে ভূপৃষ্ঠ থেকে কাদামাটির স্তর পর্যন্ত ধাপে ধাপে একটি সিঁড়ি তৈরি করা হবে। যাতে কোনও বিপদে পড়লেই নিরাপদে পালাতে পারেন শ্রমিকেরা। নিরাপত্তা সুনিশ্চিত হওয়ায় এর পর থেকে নির্ভয়ে মাটির আরও গভীর পর্যন্ত খনন করতে শুরু করেন শ্রমিকেরা। আর কালো পাথরের স্তরে খানিক খোঁড়ার পরেই দেখা মেলে বহু আকাঙ্ক্ষিত জলের!

Advertisement

বালকৃষ্ণের বুদ্ধিতে শুধু তাঁরই নয়, বরং গোটা গ্রামের জলের সমস্যার সমাধান হয়ে গিয়েছে। শুধু খননই নয়, পাইপের সাহায্যে মাড্ডি-টলপের আরও ২৫টি পরিবারের কাছে জল পৌঁছে দিয়েছেন তিনি। গোয়ার জীববৈচিত্র বোর্ড থেকে তাঁর কাজের জন্য পুরষ্কৃত করা হয়েছে বালকৃষ্ণকে। এ ছাড়া, কলা গৌরব পুরস্কারও পেয়েছেন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement