বিজেপি কর্মীর হাতুড়িতে প্রাণ গেল ষাঁড়ের

গত কাল সন্ধেয় ঘটনাটা ঘটে স্টিমারঘাট রোড এলাকায়। রাজনৈতিক দলমত নির্বিশেষে স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই ‘নিরীহ প্রাণিহত্যার’ প্রতিবাদে ফেটে পড়েন। তার ওপরে আছে ধর্ম-যোগ।

Advertisement

উত্তম সাহা

শিলচর শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০১৭ ১২:৪৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

মাথায় প্রায় আকাশ ভেঙে পড়ছিল শিলচরের বিজেপি নেতাদের। ঠিক আকাশ নয়, হাতুড়ি।

Advertisement

এ যে সেমসাইড গোল! গো-হত্যা বন্ধ করতে নয়া আইন জারি থেকে শুরু করে দলের কর্মী-সমর্থকদের চমকানি— সব বন্দোবস্তই বিজেপি করছে বলে অভিযোগ উঠছে রোজ। গণপ্রহারে প্রাণ যাচ্ছে সন্দেহভাজন ‘গরু পাচারকারীর’। সেখানে শিলচরে বিজেপি কর্মীর হাতুড়ির ঘায়েই কি না প্রাণ গেল শিবের বাহনের! আর অসমে বিজেপিই তো শাসক দল। অতএব বিড়ম্বনা তীব্র।

গত কাল সন্ধেয় ঘটনাটা ঘটে স্টিমারঘাট রোড এলাকায়। রাজনৈতিক দলমত নির্বিশেষে স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই ‘নিরীহ প্রাণিহত্যার’ প্রতিবাদে ফেটে পড়েন। তার ওপরে আছে ধর্ম-যোগ। রোষের মুখে পড়েন স্থানীয় বিজেপির সক্রিয় সদস্য হরিশ ভর। তিনিই হাতুড়ি মেরেছিলেন ষাঁড়টির মাথায়। এলাকার অনেকে জলটল ঢেলে সেবা করলেও বাঁচানো যায়নি তাকে।

Advertisement

দলের কর্মীকে উদ্ধার করতে শেষে মাঠে নামেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কবীন্দ্র পুরকায়স্থ। আজ নিজের বাড়িতে সভা ডাকেন তিনি। হরিশ সেখানে বলেন, তাঁর শিশুসন্তানের দিকে তেড়ে এসেছিল ষাঁড়টি। তাই তিনি নিজের মাথা ঠিক রাখতে পারেননি। হাতের কাছে থাকা হাতুড়ি বসিয়ে দেন ষাঁড়ের মাথায়। সভায় সিদ্ধান্ত হয়, হরিশকে একটি এঁড়ে বাছুর কিনে শিবের নামে ছাড়তে হবে। ধর্মীয় রীতি মেনে ষাঁড়-খুনের জন্য প্রায়শ্চিত্তও করতে হবে। স্টিমারঘাট রোড এলাকার বাড়ি বাড়ি গিয়ে চাইতে হবে ক্ষমা।

পুলিশ জানিয়েছে, ষাঁড়টিকে পুরসভার ট্রেঞ্চিং গ্রাউন্ডে সমাধি দেওয়া হয়েছে। কেউ অভিযোগ না করায় এ নিয়ে কোনও মামলা হয়নি। রাজনীতির ‘মামলা’ অবশ্য শুরু হয়ে গিয়েছে। পশুর প্রতি নিষ্ঠুরতার জন্য হরিশের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছে জেলা কংগ্রেস। কবীন্দ্রবাবুর অবশ্য বক্তব্য, ষাঁড় মেরে ‘মহাপাপ’ করেছেন হরিশ। কিন্তু ওই কর্মী অনুতপ্ত। তাই তাঁকে মাফ করে দেওয়ারই পক্ষে তিনি।

এখানেই বিরোধীদের প্রশ্ন, বিজেপি কর্মী না হলে কি শত অনুতাপেও ছাড় পেতেন হরিশ? জেলা কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ দে এবং প্রদেশ মুখপাত্র সঞ্জীব রায় বলেছেন, ‘‘এই ঘটনায় গরু নিয়ে বিজেপি নেতাদের দ্বিমুখী নীতিই প্রকাশ্যে এল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন