মানবজমিন আবাদ হচ্ছে ক্লাসে। আর ধান থেকে বেগুন-পটলের চাষ হচ্ছে কৃষিজমিতে। দু’টিতেই কুশীলব খুদে পড়ুয়ারা। মাঠে ধান কাটতে যাচ্ছে নবম-দশম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীরা। সেই কাটা ধান খামারে নিয়ে এসে ঝাড়াইয়ের কাজটাও করছে তারা।
কৃষিকাজকে এ ভাবেই স্কুলের রুটিনের আওতায় এনেছে কেরলের ত্রিশুর জেলার কুন্নামকোরামের একটি স্কুল। প্রধান শিক্ষিকা অনিলা ফিলিপ বলেন, “আমাদের স্কুলের প্রতিটি ক্লাসের ছাত্রছাত্রীদেরই সপ্তাহে এক দিন হাতেকলমে কৃষিকাজ করতে হয়। সেই অনুযায়ী রুটিন তৈরি হয়েছে।”
মফস্সল শহর কুন্নামকোরামের ওই স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির প্রধান ভিক্টর টি আই জানান, স্কুলের লাগোয়া জমিতেই আনাজ ফলানো হয়। আর স্কুলের একটু দূরেই ধানখেত। ভিক্টর বলেন, “চতুর্থ থেকে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীরা স্কুলের বাগানে উচ্ছে, বেগুন, পটল ফলায়। খেতে গিয়ে ধান চাষ করার পদ্ধিতে শেখানো হয় নবম-দশম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের।”
পাঠ্যবইয়ের বাইরে হাতেকলমে এই ভাবে কৃষিকাজ শেখানোকে রুটিনে আনা হল কেন? ভিক্টরের মতে, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষক হওয়ার মতো কৃষিকাজও যে একটা ভাল পেশা, তা পড়ুয়াদের মনে গেঁথে দিতেই এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
এক ছাত্রীর অভিভাবক পদম কুমার বললেন, “আমাদের গ্রামে অনেকেরই জমি আছে, যেখানে ফসল ফলানো যায়। কিন্তু প্রশিক্ষণ নেই বলে সেই জমিতে পরবর্তী প্রজন্ম আর চাষ করছে না। অন্যকে দিয়ে চাষ করাতে হয়। স্কুল যদি এই ব্যাপারে উৎসাহ দেয়, তা হলে খুব ভাল হয়।” নবম, দশম, শ্রেণির পড়ুয়া নিহাল, ডেভিড, সন্ধ্যারা কৃষিকাজকে রুটিনের মধ্যে পেয়ে খুব খুশি। তারা জানায়, চাষের কাজ হাতেকলমে শিখতে গিয়ে তারা অন্যান্য বিষয়ও শিখছে। বই পড়ে তারা এটা শিখতে পারত না। এখন তারা পড়াশোনার ফাঁকে বাবার সঙ্গে চাষের কাজে হাত লাগাতেও পারছে।