Arrest

গত দু’বছরে নিজের সন্তান-সহ চার শিশুকে খুন! নেপথ্যে লুকিয়ে একটাই কারণ, পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকারোক্তি ধৃতের

গত সোমবার পরিবারের সঙ্গে পানিপতের ইজ়রানা এলাকার নাউলথা গ্রামে এক আত্মীয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে এসেছিল বিধি। পরিবার সূত্রে খবর, বিয়ের অনুষ্ঠান চলাকালীন নাবালিকার বাবার ফোনে একটি ফোন আসে। তখন তিনি তাঁর কন্যার নিখোঁজের খবর পান।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ০১:৪৪
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

সুন্দর ভাবে সেজে বিয়েবাড়ি আসাই কাল হয়েছিল! এই অপরাধে নিজের কাকিমার হাতে খুন হতে হল ছ’বছরের ভাইঝিকে। তদন্তে নেমে এমন তথ্যই হাতে পেল পানিপত পুলিশ। খুনের অপরাধে বুধবার ওই মহিলাকে গ্রেফতার করে তারা। অভিযুক্ত মহিলার নাম পুনম। তবে এটাই প্রথম খুন নয়। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত স্বীকার করেন, এই নিয়ে দু’বছরে নিজের সন্তান-সহ চার শিশুকে হত্যা করেছেন। নেপথ্যে লুকিয়ে একটাই কারণ। পুনম কখনওই চাইতেন না যে পরিবারে তাঁর চেয়ে ‘বেশি সুন্দর’ আর কেউ থাকুক।

Advertisement

পরিবার ও পুলিশ সূত্রে খবর, মৃত নাবালিকার নাম বিধি। তার বাড়ি সোনপতে। গত সোমবার পরিবারের সঙ্গে পানিপতের ইজ়রানা এলাকার নাউলথা গ্রামে এক আত্মীয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে সেজেগুজে এসেছিল। বিয়ের অনুষ্ঠান চলাকালীন নাবালিকার বাবার ফোনে একটি ফোন আসে। তখন তিনি তাঁর কন্যার নিখোঁজের খবর পান। এর পরেই অনুষ্ঠান বাড়ির সকলে বিধির খোঁজ শুরু করেন। প্রায় এক ঘণ্টা পর বিধির ঠাকুমা উমাবতী তাঁর নাতনির খোঁজে তাঁদের আত্মীয়ের বাড়ির গুদামঘরের সামনে যান। ঘরের দরজা বাইরে থেকে আটকানো ছিল। দরজা খুলে তিনি দেখেন, বিধির মাথা জলের গামলার মধ্যে ডুবোনো আর পা মাটিতে রয়েছে। ওখান থেকে দ্রুত নাবালিকাকে উদ্ধার করে এনসি মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এর পরেই নাবালিকার দাদু পাল সিংহ পুলিশের কাছে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন।

তদন্তে নেমে পুনমকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে, সোমবার বিয়েবাড়ি চলাকালীন পুনম লক্ষ করেন বিধিকে ছাদের দিকে যেতে। তিনিও সকলের চোখ এড়িয়ে নাবালিকার পিছু নেন। ছাদেই একটি গুদামঘর ছিল। সেখানে বিধির সঙ্গে কিছু ক্ষণ গল্প করেন পুনম। এর পর একটি গামলা ভর্তি জলে নাবালিকাকে প্রথমে পা ডোবাতে বলেন অভিযুক্ত। জলের মধ্যে পা ডোবানো মাত্রই, বিধির মাথা ও ঘাড় জলের নীচে জোর করে চেপে ধরে রাখেন পুনম। এর কিছু ক্ষণ পর ঘরের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে চলে যান তিনি।

Advertisement

পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের সময় আরও জানতে পারে, ২০২৩ সালে পুনম তাঁর জায়ের ন’বছরের কন্যা ঈশিকাকে জলের ট্যাঙ্কে ডুবিয়ে খুন করেছিলেন। ধরা পড়ার আশঙ্কায় তিনি তাঁর তিন বছরের পুত্রসন্তান শুভমকেও জলে ডুবিয়ে হত্যা করেন। চলতি বছরের অগস্ট মাসে পুনম সিওয়াহ গ্রামে তাঁর তুতো ভাইয়ের ছ’বছরের কন্যা জিয়াকেও খুন করেন। পুনমের দাবি ঈশিকা, জিয়া এবং বিধি— প্রত্যেকেই তাঁর থেকে ‘বেশি সুন্দর’ দেখতে। সেই ‘অপরাধে’ খুন হতে হয়েছে। এই নিয়ে দু’বছরে নিজের সন্তান-সহ চার শিশুকে একই ভাবে জলে ডুবিয়ে হত্যা করেছেন তিনি। এত দিন পর্যন্ত এই খুনের ঘটনাগুলিকে নিছক দুর্ঘটনা বলেই মনে করা হচ্ছিল। কিন্তু বিধির মৃত্যুর পর পুলিশের কাছে খুনের দায় স্বীকার করে নেন পুনম।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement