ফাইল চিত্র।
নরেন্দ্র মোদী সরকার আধারকে সব সামাজিক প্রকল্পে বাধ্যতামূলক করতে চাওয়ায় গোপনীয়তা খর্বের প্রশ্ন উঠেছে। সেই বিতর্কের মধ্যেই গোপনীয়তার অধিকার সাংবিধানিক অধিকার কি না, তা খতিয়ে দেখতে ৯ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ গঠন করল সুপ্রিম কোর্ট। বিভিন্ন ক্ষেত্রে আধার বাধ্যতামূলক হয়ে যাওয়ায় নাগরিকদের গোপনীয় তথ্য ফাঁস হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ। প্রশ্ন উঠেছে, গোপনীয়তা কি মানুষের সাংবিধানিক অধিকারের মধ্যে নয়? এই প্রশ্নের নিষ্পত্তির জন্য নয় সদস্যের বেঞ্চ গঠন করল সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি জে এস খেহরের নেতৃত্বে আগামিকাল থেকে শুরু হবে শুনানি।
বিভিন্ন সামাজিক প্রকল্পে আধার বাধ্যতামূলক করায় সরকারের পদক্ষেপকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়। ১২ জুলাই আধারের গোপনীয়তা সংক্রান্ত বিষয়টি দেখার জন্য ৫ সদস্যের বেঞ্চ গঠন করে কোর্ট। এ বার আরও বড় বেঞ্চের সামনে মামলাটিকে রাখা হচ্ছে। যদিও কেন্দ্র সুপ্রিম কোর্টে জানিয়েছে, গোপনীয়তার অধিকার সাধারণ আইনি অধিকার, দেশের মানুষের সাংবিধানিক অধিকার নয়।
১৯৫৪ সালে সুপ্রিম কোর্টের ৮ বিচারপতির বেঞ্চ ও ১৯৬২ সালে ৬ বিচারপতির বেঞ্চ জানায়, গোপনীয়তার অধিকার সাংবিধানিক অধিকার নয়। একে হাতিয়ার করেই কেন্দ্র জানিয়েছে, আধার-এ গোপনীয়তার সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে— এই যুক্তিতে কোনও জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা যাবে না।
সব প্রকল্পের ক্ষেত্রে আধার ব্যবহার করার উপকারিতা নিয়ে নানা মঞ্চে সওয়াল চালিয়ে যাচ্ছে কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ মঙ্গলবার ইন্ডিয়ান চেম্বারের সভায় ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’-র কথা বলতে গিয়ে আধার কার্ডের নানা উপকারিতা তুলে ধরেন।
তাঁর দাবি, আধার নম্বরের ভিত্তিতে কারও পরিচয় জানা গেলে কেবলমাত্র ব্যক্তির পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চয়তা পাওয়া যায়। তাঁর ব্যক্তিগত তথ্য হাতে পাওয়া যায় না। তিনি বলেন, ‘‘কেউ, এমনকী আমি তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী হয়েও যদি বেআইনি ভাবে এই তথ্য প্রকাশ করি, তাহলে কড়া শাস্তিও রয়েছে।’’ রবিশঙ্করের দাবি, অনুপ্রবেশের মতো কার্যকলাপ রুখতেও আধার নম্বর কাজে লাগবে। যেমন কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রক গাড়ি চালানোর লাইসেন্সের সঙ্গে আধার নম্বর জোড়ায় কোনও গাড়িচালক দুর্ঘটনা ঘটালে তাঁকে ধরা সহজ হবে।