প্রতীকী ছবি।
বিমা করাতে ব্যক্তিগত তথ্য বেসরকারি সংস্থাকে দিতে হয়, মোবাইল সংযোগ নিতেও বেসরকারি সংস্থাকে ব্যক্তিগত তথ্য জমা দিতে হয়। তা হলে আধারের জন্য কোনও বেসরকারি সংস্থাকে ব্যক্তিগত তথ্য দিতে মানুষ কেন আপত্তি করবেন? বৃহস্পতিবার আধার মামলার শুনানির সময়ে এই মন্তব্য করে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ।
আধার কার্ড দেওয়ার দায়িত্বে থাকা নানা বেসরকারি সংস্থাকে সাধারণ মানুষ কেন তাঁর ব্যক্তিগত তথ্য দেবেন, সে প্রশ্ন তুলে সর্বোচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন কেরলের সিপিএম নেতা ভি এস অচ্যুতানন্দন, কর্নাটক হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি কে এস পুত্তাস্বামী এবং মানবাধিকার কর্মী অরুণা রায় ও শান্তা সিংহরা। তাঁদের পক্ষে আইনজীবী শ্যাম দিভান আদালতে বলেন, বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থাকে দিয়ে আধারের তথ্য সংগ্রহ করছে সরকার। তাদের সঙ্গে সরকারের এমন কোনও চুক্তি নেই যে তারা ওই তথ্য অন্য কোনও ব্যবসায়িক সংস্থাকে সরবরাহ করবে না। দিভানের প্রশ্ন, এই সব বেসরকারি সংস্থাকে কোন বিশ্বাসে সাধারণ মানুষ তাঁদের ব্যক্তিগত তথ্য তুলে দেবেন? তিনি বলেন, গোড়া থেকেই এই বিষয়টি অসাংবিধানিক।
দিভান বলেন— নিয়ম মাফিক সরকার নোটিস দিয়েছে, কেউ কোনও ব্যক্তিগত তথ্য জানাতে না চাইলে জানাবেন না। বিষয়টি ঐচ্ছিক। কিন্তু বাস্তবে এটা একটা প্রহসন। কারণ, কেউ কোনও তথ্য জানাতে না-চাইলে বেসরকারি সংস্থা সাফ জানিয়ে দিচ্ছে, তাঁর আধার কার্ড করা যাবে না। সম্প্রতি বিভিন্ন সংবাদ চ্যানেল স্টিং অপারেশন করে দেখিয়ে দিয়েছে, অর্থের বিনিময়ে ভুয়ো তথ্য দিয়ে কী ভাবে নকল আধার কার্ড তৈরি করে ফেলা যায়। সে বিষয়টিও শুনানির সময়ে উল্লেখ করেন দিভান। বলেন, সাধারণ মানুষ এর পরে কী করে এদের ওপর আস্থা রাখবেন?
এর পরেই বিচারক বলেন, বেসরকারি সংস্থাকে ব্যক্তিগত তথ্য দিতে আপত্তিই বা কেন? বিমা বা মোবাইল ফোনের সংযোগ নিতে যদি বেসরকারি সংস্থাকে ব্যক্তিগত তথ্য দেওয়া যায়, আধার কার্ডে কেন নয়? পরবর্তী শুনানি হবে মঙ্গলবার।