অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
সংসদে উত্তর দিতে গিয়ে অনেক সময় বিরোধীদের চাপে দিশাহারা হন তাবড় মন্ত্রীরাও। কিন্তু তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আটকে গেলেন প্রশ্নেই! দু’দিনের ব্যবধানে পরপর দু’বার। যা নিয়ে দৃশ্যতই বিড়ম্বনায় তৃণমূল সংসদীয় দল।
আজ প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ সড়ক যোজনা প্রকল্পে কেন্দ্রের অংশীদারি কমিয়ে দেওয়া নিয়ে প্রশ্নোত্তর পর্বে বলতে ওঠেন অভিষেক। এক ঘণ্টার প্রশ্নোত্তর পর্বের শেষ প্রশ্নটি ধার্য ছিল অভিষেকের জন্য। কিন্তু তিনি উঠে দাঁড়িয়ে নিজের বক্তব্যই জানাতে থাকেন। সময় শেষ হয়ে আসছে দেখে দেরি না-করে তাঁকে প্রশ্ন করতে বলেন স্পিকার সুমিত্রা মহাজন। তার পরেও প্রশ্ন করার বদলে অভিষেক নিজের মতামত জানিয়েই চলেছেন দেখে স্পিকার উষ্মার সুরে বলেন, ‘‘প্রশ্নোত্তর পর্ব প্রশ্ন-উত্তরের জন্য। আমি বুঝতে পারছি না, কেন আপনি প্রশ্ন করছেন না!’’ শেষমেশ নিজের প্রশ্ন করেন অভিষেক। হাঁফ ছাড়ে দল।
দু’দিন আগে এই স্পিকারই কিন্তু অভিষেক প্রশ্ন করতে গিয়ে হোঁচট খেলে তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। সাধারণত সংসদে খুব একটা প্রশ্ন করতে দেখা যায় না অভিষেককে। গত পরশু লোকসভায় ভারী শিল্প নিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে প্রশ্ন করতে উঠে নিজের বক্তব্য তালগোল পাকিয়ে ফেলেন তিনি। কী প্রশ্ন করতে হবে, বুঝতে না-পেরে কিছু ক্ষণ থতমত খেয়ে দাঁড়িয়ে পড়েন। অভিষেকের ওই অপ্রস্তুত অবস্থা দেখে তত ক্ষণে চাপা হাসির রোল উঠেছে বিজেপি শিবিরে। প্রথম বারের সাংসদের সাহায্যে তখন এগিয়ে আসেন স্পিকারই। বলেন, ‘‘সাংসদকে সংসদের কার্যপ্রণালী শিখতে দিন।’’
খেই হারানো অভিষেককে সাহায্য করতে প্রম্পটারের ভূমিকায় নামেন সৌগত রায়, সুব্রত বক্সীরা। চাপা স্বরে বুঝিয়ে দেন, কী ভাবে প্রশ্ন করতে হবে। কিছুটা সময় নিয়ে প্রশ্নটি করে ফেলেন অভিষেক। জবাবও দেন বাবুল। পরে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, ‘‘প্রশ্ন করতে গিয়ে সাংসদ যে ভাবে আটকেছিলেন, সেটা হোমওয়ার্কের অভাব থেকেই হয়।’’ এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তৃণমূল নেতা বলেন, ‘‘অভিষেককে সংসদীয় রীতিনীতি শিখিয়ে দেওয়ার দায়িত্বে যাঁরা ছিলেন, এটা তাঁদেরই ব্যর্থতা।’’