আমেরিকা বা অস্ট্রেলিয়ায় বেশ কিছু ঘটনায় আক্রান্ত হয়েছেন ভারতীয়রা। অভিযোগ উঠেছে জাতিবিদ্বেষের। ভারতের মাটিতে সেই জাতিবিদ্বেষের অভিযোগেই এ বার সরব হলেন আফ্রিকানরা। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখতে উত্তরপ্রদেশ সরকারকে নির্দেশ দিলেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ।
সোমবার গ্রেটার নয়ডায় ৫ নাইজেরীয় যুবকের নিগ্রহের ঘটনায় ভারতে আফ্রিকান ছাত্রদের সংগঠন বলেছে, এ দেশ তাদের জন্য আর নিরাপদ নয় বলেই মনে করছে তারা।
ঘটনার সূত্রপাত মনীশ খারি নামে দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রের মৃত্যুকে ঘিরে। এনএসজি ব্ল্যাকক্যাট এনক্লেভের বাসিন্দা এই ছেলেটিকে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। পড়শিদের কেউ কেউ বলে, তাকে পাঁচ জন নাইজেরীয় যুবকের সঙ্গে দেখা গিয়েছে। তার পরেই গুজব রটে যায়, আফ্রিকানরা নরমাংসভোজী। তারা ছাত্রটিকে খেয়ে ফেলেছে! তখনই ওই নাইজেরীয়দের বাড়িতে চড়াও হয় জনতা। পরে মনীশ কিছুটা অপ্রকৃতিস্থ অবস্থায় বাড়ি ফিরে আসে। শনিবার মারা যায় সে। ডাক্তারদের ধারণা, অতিরিক্ত মাদকের প্রভাবেই মৃত্যু হয়েছে তার। ছেলেটির পরিবার পুলিশে অভিযোগ করে, নাইজেরীয়রাই মনীশকে মাদক খাইয়েছে। পুলিশ তখন পাঁচ নাইজেরীয়কে আটক করে।
আরও পড়ুন: বিরোধীদের ঘর ভেঙে শক্তি বাড়ানোর ছক
ঘটনার পরের পর্ব সোমবার। প্রমাণের অভাবে পুলিশ ওই পাঁচ জনকে ছেড়ে দিলে লোকজন প্রতিবাদ মিছিল বের করেছিল। সেই মিছিলই হিংস্র হয়ে উঠে রাস্তায় আফ্রিকানদের যাকে পায়, তাকেই মারধর করতে শুরু করে। একটি মল-এ ঢুকেও হামলা করে। এতে গুরুতর আহত হন চার নাইজেরীয় ছাত্র। মনীশের ঘটনার সঙ্গে কোনও ভাবেই যাঁদের যোগ নেই। আহতেরা হতবাক হয়ে পরে বলেছেন, ‘‘আমরা এখানে কোনও ক্লাবে যাই না। মদও খাই না। অথচ আমাদের ধরে মারা হল।’’
অ্যাসোসিয়েশন অব আফ্রিকান স্টুডেন্টস-এর প্রধান স্যামুয়েল জ্যাক এই ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে বলেছেন, ‘‘এলাকার লোকে হুমকি দিয়ে বলছে, আমাদের এ দেশে দেখতে চায় না। এটা জাতিবিদ্বেষ ছাড়া কী? ছাত্রদের বলছি, অবস্থার উন্নতি না হলে এখানে পড়তে আসার দরকার নেই।’’
বিষয়টির গুরুত্ব বুঝে নড়ে বসেছে রাজ্য সরকার। শতাধিক লোককে আটক করা হয়েছে, গ্রেফতার পাঁচ জন। সুষমা ঘটনাটি নিয়ে যোগী আদিত্যনাথের সঙ্গে কথা বলেছেন। কড়া হাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে বলেছেন তাঁকে। যোগী আশ্বস্ত করেছেন সুষমাকে।