গুজরাতের অহমদাবাদে জঙ্গিযোগের অভিযোগে গ্রেফতার তিন সন্দেহভাজন। — ফাইল চিত্র।
প্রাণঘাতী রাসায়নিক তৈরির চেষ্টা করছিলেন গুজরাতের অহমদাবাদে জঙ্গিযোগের সন্দেহে ধৃতেরা। প্রাথমিক তদন্তে এমনটাই জানতে পেরেছে গুজরাত পুলিশের সন্ত্রাসদমন শাখা। ধৃতদের মধ্যে এক জন চিকিৎসক। তাঁর কাছে ‘চিনা মেডিক্যাল ডিগ্রি’ পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি তদন্তকারীদের। অভিযোগ, ওই চিকিৎসকই বিষাক্ত রাসায়নিক ‘রিসিন’ তৈরির চেষ্টা করছিলেন। এই ‘রিসিন’ রাসায়নিক এবং জৈব অস্ত্র তৈরির কাজে ব্যবহার হয়।
নাশকতার পরিকল্পনার আগে এলাকা বাছাই করতে ধৃত ওই চিকিৎসক দেশের একাধিক শহর ঘুরে বেড়িয়েছেন। জঙ্গিদমন শাখার এক আধিকারিক জানান, অহমদাবাদ ছাড়াও দিল্লি এবং লখনউয়ের বেশ কিছু এলাকা ঘুরে দেখেছেন তিনি। সংবাদমাধ্যম ‘ইন্ডিয়া টুডে’ অনুসারে, দিল্লির আজ়াদপুর মান্ডি, অহমদাবাদের নারোদায় ফলের বাজার ঘুরে দেখেছিলেন তিনি। অহমদাবাদ থেকে গ্রেফতার হওয়া ওই তিন জনের সঙ্গে জঙ্গি সংগঠন ‘আইএস’-এর যোগাযোগ ছিল বলে সন্দেহ করছেন তদন্তকারীরা।
ধৃত তিন জনকে ইতিমধ্যে শনাক্ত করছে গুজরাত পুলিশের জঙ্গিদমন শাখা। ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন হায়দরাবাদের বাসিন্দা ৩৫ বছর বয়সি চিকিৎসক আহমেদ মহিউদ্দিন সঈদ, উত্তরপ্রদেশের শামলির বাসিন্দা ২০ বছর বয়সি আজ়াদ সুলেমান শেখ এবং লখিমপুরখেরির বাসিন্দা ২৩ বছর বয়সি পড়ুয়া মহম্মদ সুহেল। ধৃতদের থেকে তিনটি পিস্তল এবং ৩০টি কার্তুজ পাওয়া গিয়েছে।
গুজরাত পুলিশের জঙ্গিদমন শাখার ডিআইজি সুনীল জোশী জানান, পুলিশি জেরায় নাশকতার পরিকল্পনার কথায় স্বীকার করে নিয়েছেন সঈদ। তিনিই ‘রিসিন’ নামে ওই রাসায়নিকটি তৈরি করছিলেন। ডিআইজি বলেন, “সঈদ ‘রাইজ়িন’ (রিসিন) নামে একটি অত্যন্ত মারাত্মক বিষ তৈরি করছিলেন। এর জন্য তিনি গবেষণা শুরু করেছিলেন। সরঞ্জাম, কাঁচামাল সংগ্রহ করেন এবং এর প্রস্তুতির জন্য প্রয়োজনীয় প্রাথমিক রাসায়নিকও জোগাড় করতে শুরু করেন।”
গত এক বছর ধরে এই তিন জন গুজরাতের সন্ত্রাসদমন শাখার নজরে ছিলেন। অস্ত্রের লেনদেন করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়েন রবিবার। গুজরাত এটিএস একটি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, দেশের একাধিক শহরে সুপরিকল্পিত এবং বড়সড় হামলার ছক কষছিলেন এই তিন জন। আর কারা এই চক্রান্তের সঙ্গে জড়িত, ধৃতদের জেরা করে তা জানার চেষ্টাও চলছে।