মণিপুরে টহল নিরাপত্তাবাহিনীর। — ফাইল চিত্র।
মণিপুরে অসম রাইফেল্সের গাড়িতে হামলার ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে দুই জওয়ানের। গুলির লড়াইয়ে গুরুতর আহত অন্তত পাঁচ জন। সেই ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দুই সন্দেহভাজনকে আটক করল পুলিশ। বাজেয়াপ্ত করা হল হামলায় ব্যবহৃত গাড়িটিও।
পুলিশের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, শনিবার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দু’জনকে আটক করা হয়েছে। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। অন্য দিকে, ঘটনাস্থল থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে ইম্ফলের মুটুম ইয়াংবি থেকে খোঁজ মিলেছে হামলায় ব্যবহৃত গাড়িটির। ওই গাড়ির একাধিক মালিক রয়েছে। তাঁদেরকেও শনাক্ত করা হয়েছে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘‘গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যের সামগ্রিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উত্তেজনাপূর্ণ ছিল, তবে এখন পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। নাম্বোল সবাল লেইকাইয়ে অসম রাইফেল্সের দুই জওয়ান শহিদ হওয়ার পর থেকেই শান্তিপুর এবং ইশোক এলাকায় বিশাল অভিযান শুরু করেছে নিরাপত্তাবাহিনী।’’
শুক্রবার সন্ধ্যায় মণিপুরের বিষ্ণুপুর জেলায় অসম রাইফেল্সের গাড়ি লক্ষ্য করে হামলা চালান স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রধারী একদল যুবক। কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের নিয়ে একটি মিনি ট্রাক রাজধানী ইম্ফলের পাতসোই কোম্পানির ঘাঁটি থেকে বিষ্ণুপুর জেলা সদরের নাম্বোল ঘাঁটির উদ্দেশে যাচ্ছিল। সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ নাম্বোল সবাল লেইকাই এলাকায় ২ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর অতর্কিতে ওই গাড়ির উপর হামলা চালায় ‘জঙ্গি’রা। তাতে দুই জওয়ান নায়েব সুবেদার শ্যাম গুরুং এবং রাইফেলম্যান রঞ্জিত সিংহ কাশ্যপের মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত হন আরও পাঁচ জন।
ঘটনাচক্রে, মাত্র এক সপ্তাহ আগে ওই পথ দিয়েই গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী! সেই সফরের এক সপ্তাহের মাথায় এমন ঘটনা ঘটায় নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। হামলার খবর পেয়েই ওই অঞ্চলে বাড়তি বাহিনী পাঠানো হয়। শুরু হয় পাহাড়-জঙ্গল ঘিরে চিরুনি তল্লাশি। মণিপুরের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করতে পর দিনই একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক ডাকেন রাজ্যপাল অজয় কুমার ভল্লা। বৈঠকে ছিলেন রাজ্যের শীর্ষ আধিকারিক এবং ঊর্ধ্বতন পুলিশকর্তারা। রাজভবন সূত্রে খবর, অপরাধীদের দ্রুত শনাক্তকরণের চেষ্টা চলছে। ইতিমধ্যে দু’জনকে আটক করে চলছে জিজ্ঞাসাবাদ। জাতীয় সড়ক, বিভিন্ন ট্রানজ়িট রুট এবং সীমান্তবর্তী অঞ্চলে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।