Acid Attack

সর্বস্ব হারিয়ে এখন অসহায়! ২৮ বছর পর অ্যাসিড হামলায় আক্রান্ত সেই মহিলা পেলেন ক্ষতিপূরণ

উত্তরপ্রদেশের ওই ভুক্তভোগীর জন্য সেই সময় প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় ত্রাণ তহবিল থেকে এক লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করা হয়। শুধু তা-ই নয়, তৎকালীন উত্তরপ্রদেশ সরকার চার লক্ষ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথাও জানায়। ২৮ বছর পর সেই ক্ষতিপূরণের টাকা হাতে পেলেন ভুক্তভোগী।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০২৫ ১৭:৩৭
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

সালটা ১৯৯৭। বিয়ে ভেঙে দেওয়ার কারণে এক কিশোরীর গায়ে অ্যাসিড ছুড়ে মারার অভিযোগ উঠেছিল এক যুবকের বিরুদ্ধে। তখন ওই কিশোরীর বয়স ছিল মাত্র ১৫ বছর। ওই ঘটনায় ওই কিশোরীর একটা চোখ নষ্ট হয়ে যায়। বিকৃত হয়ে যায় মুখও। এখন ওই ভুক্তভোগীর বয়স ৪৩। ২৮ বছর দীর্ঘ লড়াইয়ের পর এত দিনে সেই অ্যাসিড হামলার ঘটনায় সরকারি ক্ষতিপূরণের টাকা হাতে পেলেন ওই মহিলা।

Advertisement

অ্যাসিড হামলার ঘটনা ওই মহিলার জীবনের গতিপথ পাল্টে দিয়েছিল। বছরের পর বছর ধরে শারীরিক এবং মানসিক যন্ত্রণায় ভুগেছেন তিনি। অ্যাসিড হামলার কারণে দেহের প্রায় ৪৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। করতে হয় জটিল অস্ত্রোপচারও। তার জন্য অনেক টাকা খরচ হয়। শুধু তা-ই নয়, তার পর থেকে ওষুধ এবং অন্যান্য চিকিৎসার জন্য মাসে ১০ হাজার টাকা খরচ হত।

উত্তরপ্রদেশের ওই ভুক্তভোগীর জন্য সেই সময় প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় ত্রাণ তহবিল থেকে এক লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করা হয়। শুধু তা-ই নয়, তৎকালীন উত্তরপ্রদেশ সরকার চার লক্ষ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথাও জানায়। মোট পাঁচ লক্ষ। কিন্তু সেই টাকা হাতে পাননি ওই মহিলা।

Advertisement

১৯৯৭ সালের ২৮ অক্টোবর শাহজানপুরে নিজের বাড়িতে অ্যাসিড হামলায় আক্রান্ত হন বছর পনেরোর ওই কিশোরী। মুখ, মাথা, ঘাড়-সহ শরীরের নানা অংশ পুড়ে যায়। ওই মহিলার কথায়, ‘‘আমার বাবা পেশায় ছিলেন এক জন দর্জি। আর মা ঘরের কাজ করতেন। আমার উপর হামলার পর গোটা পরিবার ভেঙে পড়েছিল। দু’বছর পুরো শয্যাশায়ী ছিলাম। বাবার সমস্ত সঞ্চয় খরচ হয়ে যায়। চেয়েচিন্তে চিকিৎসা চলত। অস্ত্রোপচার মিলিয়ে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা খরচ হয়ে গিয়েছিল।’’

বছরের পর বছর ধরে সেই হামলার মানসিক ক্ষতে জর্জরিত হয়ে পড়েন ওই মহিলা। কয়েক বছরের মধ্যেই হারান মা এবং বাবা— দু’জনকেই। ভাইবোনেরাও নিজেদের মতো করে সংসার পাতেন। একলা হয়ে পড়েন ওই মহিলা। জীবননির্বাহের জন্য ছোটখাটো কাজ করতেন। পরে বাড়ি থেকেই শাড়ির বিভিন্ন কাজ শুরু করেন। তবে টাকার অভাব লেগেই ছিল তাঁর। বর্তমানে একটি মহিলা আশ্রয়কেন্দ্রের বাসিন্দা তিনি। দীর্ঘ লড়াইয়ের পর অবশেষে ক্ষতিপূরণের পাঁচ লক্ষ টাকা পেয়েছেন।

শাহিন মালিক নামে এক আইনজীবী জানান, ওই মহিলার ক্ষতিপূরণের জন্য অনেক লড়াই করতে হয়েছে। এত দিনে পাঁচ লক্ষ টাকা পেয়েছেন। কিন্তু এই ২৮ বছরের তাঁর অনেক খরচ হয়ে গিয়েছে। অন্তত ৫০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ পাওয়া উচিত তাঁর। সেই নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার ভাবনাচিন্তা চলছে বলেও জানান শাহিন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement