—প্রতীকী চিত্র।
মহিলা চিকিৎসককে চার বার পুলিশের সাব-ইনস্পেক্টরের ধর্ষণ করেছেন বলে অভিযোগ। হাতের তালুতে সুইসাইড নোট লেখা ওই মহিলা চিকিৎসককে ভুয়ো মেডিক্যাল রিপোর্ট লিখতে বাধ্য করা হয়েছিল দাবি করল পরিবার। যা নিয়ে মহারাষ্ট্রের সাতরা জেলায় মহিলা চিকিৎসকের আত্মহত্যার ঘটনায় নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়ে গিয়েছে। অন্য দিকে, অভিযুক্ত দু’জন পলাতক। তাঁদের খোঁজ চলছে।
শুক্রবার মৃত মহিলা চিকিৎসকের ভাই জানান, বছর দুয়েক আগে ফলটনের উপ-জেলা হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার হিসাবে নিযুক্ত হন তাঁর দিদি। কিন্তু কর্মক্ষেত্রে ক্রমাগত হুমকির মুখে পড়েন তিনি। মহিলা চিকিৎসকের ভাইয়ের অভিযোগ, দিদিকে দিয়ে জোর করে ভুয়ো ময়নাতদন্তের রিপোর্ট থেকে ফিটনেস রিপোর্ট তৈরি করানো হত। তাঁর কথায়, ‘‘দিদিকে বাধ্য করা হত রোগী বা রোগীর পরিজনদের অনুপস্থিতে ওই সমস্ত রিপোর্ট তৈরি করতে।’’
গত বৃহস্পতিবার মহিলা মেডিক্যাল অফিসারের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তাঁর হাতের তালুতে লেখা ছিল মৃত্যুর কারণ। দাবি, ওটিই সুইসাইড নোট। মহিলা চিকিৎসকের হবাঁ হাতের তালুতে লেখা ছিল ‘‘পুলিশ ইনস্পেক্টর গোপাল বাদনেই আমার মৃত্যুর কারণ। ও আমাকে চার বার ধর্ষণ করেছে। পাঁচ মাসেরও বেশি সময় ধরে ও আমাকে ধর্ষণ, মানসিক এবং শারীরিক নির্যাতন করেছে।’’
ইতিমধ্যে অভিযুক্ত এসআই-কে বরখাস্ত করেছে মহারাষ্ট্রের পুলিশ দফতর। সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডনবীসের নির্দেশ মতো তদন্ত শুরু হলেও জোর চাপানউতর চলছে। কর্মক্ষেত্রে মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। এই প্রেক্ষিতে মৃতার ভাই জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের একমাত্র রেসিডেন্সিয়াল মেডিক্যাল অফিসার বা আরএমও ছিলেন তাঁর দিদি। তিনি বলেন, ‘‘দু’-তিন বার ও গুরুতর অভিযোগ করেছিল। উর্ধ্বতন তথা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চেয়েও ব্যর্থ হয়। এসপি থেকে ডিএসপি-কে চিঠিও দেয়। তার পরেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘এক বার দিদি চিঠিতে লিখেছিল, ওর কিছু হয়ে গেলে কে দায় নেবে? হাসপাতালের নিরাপত্তার সমস্যা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিল দিদি। কারও সাড়া পায়নি।’’ মৃত চিকিৎসকের ভাই তথা পুরো পরিবার দোষীদের মৃত্যুদণ্ড চেয়েছেন।
জানা যাচ্ছে, গত ১৯ জুন ফলটন গ্রামীণ পুলিশের দু’জনের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ করে পুলিশ আধিকারিককে চিঠি পাঠিয়েছিলেন মহিলা চিকিৎসক। কিন্তু কেউ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।
চিকিৎসকের দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্টের অপেক্ষায় পুলিশ। তবে এখনও পর্যন্ত আটক বা গ্রেফতারির কোনও খবর নেই। সাতারা জেলার পুলিশ সুপারতুষার দোশী বলেন, ‘‘একজন মহিলা ডাক্তার আত্মহত্যা করেছেন। তাঁর হাতের তালুতে একজন পুলিশকর্মী-সহ দু’জনের নাম লেখা ছিল। তাঁদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ এবং আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্ত এসআইকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমাদের বাহিনী দুই অভিযুক্তকে খুঁজে বার করার চেষ্টা করছে। পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’