পারলে গাঁধীদের জেলে পাঠান, চ্যালেঞ্জ অধীরের

লোকসভায় রাষ্ট্রপতির বক্তৃতায় ধন্যবাদ জ্ঞাপন বিতর্ক শুরু করতে মোদী বেছে নেন ‘ওড়িশার মোদী’, মন্ত্রী প্রতাপচন্দ্র ষড়ঙ্গীকে। তাঁর বক্তৃতার আগাগোড়াই ছিল প্রধানমন্ত্রীর ‘ভজনা’ আর গাঁধীদের প্রতি খোঁচা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০১৯ ০২:৪০
Share:

বক্তা: লোকসভায় বক্তৃতা দিচ্ছেন অধীর চৌধুরী। পাশে সনিয়া গাঁধী। সোমবার। ছবি: পিটিআই।

নরেন্দ্রনাথ দত্তের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদীর তুলনার বিরোধিতা করতে গিয়ে এক বার কুকথা বলে ফেললেন অধীররঞ্জন চৌধুরী। পরে অবশ্য ক্ষমাও চেয়ে নিলেন। কিন্তু এই ঘটনা বাদ দিলে সপ্তদশ লোকসভায় তাঁর প্রথম বক্তৃতার মতো আজ ফের নজর কাড়লেন বাংলার নেতাটি। নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহকে চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন, দুর্নীতিতে জড়িত হলে রাহুল ও সনিয়া গাঁধীকে জেলে পাঠান।

Advertisement

লোকসভায় রাষ্ট্রপতির বক্তৃতায় ধন্যবাদ জ্ঞাপন বিতর্ক শুরু করতে মোদী বেছে নেন ‘ওড়িশার মোদী’, মন্ত্রী প্রতাপচন্দ্র ষড়ঙ্গীকে। তাঁর বক্তৃতার আগাগোড়াই ছিল প্রধানমন্ত্রীর ‘ভজনা’ আর গাঁধীদের প্রতি খোঁচা। মোদীর তুলনা করলেন স্বামী বিবেকানন্দ, সর্দার পটেলের সঙ্গে। বিরোধীদের বিঁধে বললেন, ‘‘দেশ ভেজালের জোট নয়, ‘আসল মাল’ চায়। ১৫-২০ দল মিলে কী করল? স্মৃতিদিদি (ইরানি) তো কেরলে পাঠিয়ে দিলেন! ভারতে থাকার অধিকার নেই ‘টুকড়ে-টুকড়ে গ্যাং’-এর।’’ মোদীর কাছে ক্ষমাও চাইতে বললেন। আর বললেন, ইউপিএ আমলে টুজি, থ্রিজি এত দুর্নীতি, আর কংগ্রেসের প্রথম পরিবার চোখ বুজে ছিল। বেইমানকে ইমানদার করা যায় না।

ষড়ঙ্গীর বক্ততার মধ্যেই রে-রে করে ওঠেন কংগ্রেস সাংসদরা। কংগ্রেসের বক্তৃতার পালা এলে, আক্রমণে নামেন অধীর। রাহুল সংসদ ভবনে এলেও লোকসভায় থাকেননি। সারাক্ষণ ছিলেন সনিয়া। অধীর গোড়াতেই বললেন, ‘‘কিছু মনে করবেন না, নরেন্দ্র মোদীর স্তুতি করতে গিয়ে সীমা পার করে ফেলেছেন। প্রধানমন্ত্রীকে আমিও শ্রদ্ধা করি, কিন্তু স্বামী বিবেকানন্দের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর তুলনা করাটা ভুল।’’ সংসদীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী বলেন, ‘‘আমরা তা-ও ইন্দিরা ইজ ইন্ডিয়ার পর্যায়ে যাইনি।’’ এতে শুরু হয় বাদানুবাদ। অধীর কুকথা বলে ফেললে রেকর্ড থেকে তা বাদ যায়। পরে অধীর জানান, তাঁর হিন্দি জ্ঞান ভাল না। খারাপ কথা বলতে চাননি, তাই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছেন।

Advertisement

আরও পড়ুন: অধীর রঞ্জন চৌধুরী সম্পর্কে এই এই তথ্যগুলো জানেন?

ইউপিএ আমলের দুর্নীতি নিয়ে খোঁচার জবাবে অধীর বলেন, ‘‘মোদী সরকারের ষষ্ঠ বছর চলছে। কিন্তু সনিয়া গাঁধী, রাহুল গাঁধীকে জেলে রাখতে পেরেছেন? যাঁদেরকে ‘চোর’ বানিয়ে রেখেছেন, তাঁরা জেলের বাইরে কেন? প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তো আছেন, পাঠান না জেলে! এত কিছুর পরেও তো টুজি-থ্রিজি নিয়ে ভোটে যাননি। প্রধানমন্ত্রী অনেক বড় ‘সেলস্‌ম্যান’। আপনাদের ফাঁপা পণ্য বিক্রি হয়েছে। আমরা পারিনি। তাই বিরোধী আসনে।’’ স্বাধীনতার পর থেকে কংগ্রেসের অবদানের কথা উল্লেখ করে অধীর বক্তৃতা শেষ করেন রবীন্দ্রনাথকে লেখা তাঁর এক বন্ধুর চিঠি দিয়ে। যেখানে বলা হয়েছিল, হিটলারের লাল জামা বা মুসোলিনির বাদামি জামা সভ্যতা রচনা করবে না, করবে জামা না-পরা গাঁধীই।

আগের দিনের মতোই আজও অধীরের বক্তৃতা শেষ হতেই হ্যান্ডশেক করেন সনিয়া। বাহবা দিয়ে বলেন, ‘‘ভেরি গুড।’’ শশী তারুরও হাত মেলাতে আসেন। তৃণমূলের সৌগত রায় বলেন, ‘‘ওয়ান্ডারফুল।’’ কাল প্রধানমন্ত্রী এর জবাব দেবেন।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন