সেনার পর এ বার এক পদ এক পেনশনের দাবি পুলিশেও

সেনাবাহিনীর ‘কামান’ কোনওক্রমে সামলাতে পেরেছিলেন। এবার পুলিশের ‘বন্দুক’-এর সামনে কি মুখ পুড়বে নরেন্দ্র মোদীর সরকারের?

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ১৭:১২
Share:

সেনাবাহিনীর ‘কামান’ কোনওক্রমে সামলাতে পেরেছিলেন। এবার পুলিশের ‘বন্দুক’-এর সামনে কি মুখ পুড়বে নরেন্দ্র মোদীর সরকারের?

Advertisement

আসলে নরেন্দ্র মোদীর সরকার প‌্যান্ডোরার বাক্স খুলে দিয়েছে। সেনাকর্মীদের জন‌্য ‘এক পদ এক পেনশন’ নীতি রূপায়ণের ঘোষণার পর মাত্র দিনকয়েক কেটেছে। এবার ধাক্কা অন‌্য উর্দিধারীদের দিক থেকে। সপ্তম বেতন কমিশনের কাছে এবার পুলিশের দাবি, সেনাবাহিনীর মতো ‘এক পদ এক পেনশন’ নীতি কার্যকর করতে হবে তাঁদের ক্ষেত্রেও।

অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মীদের জন‌্য ‘এক পদ এক পেনশন’ নীতি রূপায়ণের কথা ঘোষণা করে কেন্দ্র স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিল। প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পর্রীকরের ঘোষণার পর কেন্দ্রীয় সরকার তথা বিজেপি কংগ্রেসকে তীব্র শ্লেষে বিঁধেছে। ৪২ বছর ধরে অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মীরা এই দাবি জানিয়ে এলেও, কংগ্রেসের অনিচ্ছাতেই তা রূপায়িত হয়নি বলে উচ্চস্বরে দাবি করেছেন একের পর এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। পুলিশের দাবি সামনে আসায়, হঠাৎ বিজেপির সেই চড়া সুর খানিকটা নরম। অন‌্যান‌্য মহল থেকেও ‘এক পদ এক পেনশন’-এর দাবি যে উঠবে, সে আশঙ্কা ছিলই। তবে এত তাড়াতাড়ি উঠবে বলে আশা করেননি সাউথ ব্লক-নর্থ ব্লকের কর্তারা। দেশের পুলিশ বাহিনীর তরফে সপ্তম বেতন কমিশনে পাঠানো প্রতিনিধি দল জানিয়েছে, ২০০৬ সালের আগে অবসর নেওয়া পুলিশকর্মীরা ওই বছরের পরে অবসর নেওয়া কর্মীদের চেয়ে অনেক কম হারে বেতন পাচ্ছেন। এই বৈষম অবিলম্বে মেটাতে হবে। প্রেজেন্টেশন দিয়ে দিয়ে তাঁদের দাবি, সেনাবাহিনীর চেয়ে অনেক বেশি ঝুঁকির কাজ তাঁদের বাহিনীকে করতে হয়। পুলিশের তরফে তুলে ধরা পরিসংখ‌্যান বলছে, শুধুমাত্র ২০১৩ সালেই কর্তব‌্যরত অবস্থায় মৃত‌্যু হয় অন্তত ৪০০০ পুলিশকর্মীর। জখম হন অন্তত ৩৫০০ জন। ২০১৪ সালে ৩০০০ পুলিশকর্মী কর্তব‌্যরত অবস্থায় প্রাণ হারিয়েছেন। অপরপক্ষে, ২০১২ থেকে ২০১৫ সালের ৩ অগস্ট অবধি কর্তব‌্যরত অবস্থায় সেনা-সহ বিভিন্ন সশস্ত্র বাহিনীর কর্মীর মৃত‌্যুর সংখ‌্যা ২০১।

Advertisement

ইন্ডিয়ান পুলিশ অ‌্যাসোসিয়েশনের চালানো এই সমীক্ষার রিপোর্ট বলছে, দেশের প্রত‌্যেক পুলিশকর্মীকে দিনে ১২-১৩ ঘণ্টা কাজ করতে হয়। অনেক সময়ই তাঁরা সাপ্তাহিক ছুটি পান না। এমনকী, গোটা মাসেও ছুটি পান না। বিভিন্ন উৎসবের দিনে পুলিশকর্মীদের মাত্র ৭.৮৫ শতাংশ কোনওক্রমে ছুটি পান। উৎসবের দিন হোক বা সাধারণ দিন, রাতবিরেতে এবং অসময়ে কাজের রুটিন তাঁদের জন‌্য নিত‌্যনৈমিত্তিক। অসময়ে কাজের জন‌্য নিচুতলার কর্মীদের ক্ষেত্রে ঘণ্টার হিসেবে ১০০ শতাংশ এবং আধিকারিকদের জন‌্য ১০ শতাংশ অতিরিক্ত বেতনের দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছ।

কেন্দ্রের তরফে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে খুব তাড়াতাড়ি যে পুলিশের দাবি মেনে নেওয়া কেন্দ্রের পক্ষে সম্ভব হবে না, তা বলাই বাহুল‌্য। পরিস্থিতির মোকাবিলা কীভাবে করেন নরেন্দ্র মোদী-রাজনাথ সিং, রাজনৈতিক মহলের নজর এখন সেদিকেই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement