—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
পোশাকি নাম, ‘অর্গানাইজেশন ফর কাউন্টার টেরোরিস্ট অপারেশনস’ বা অক্টোপাস। আদতে ছত্তীসগঢ় থেকে অনুপ্রবেশকারী মাওবাদী জঙ্গিদের খোঁজে অন্ধ্রপ্রদেশ পুলিশের বিশেষ তল্লাশি অভিযান।
প্রায় দু’দশক আগে অবিভক্ত অন্ধ্রপ্রদেশ পুলিশের বিশেষ মাওবাদী দমন বাহিনী গ্রে হাউন্ডের হানাদারি এড়াতে ছত্তীসগঢ়ের বস্তার ডিভিশনের জঙ্গলে পাড়ি দিয়েছিলেন মাওবাদী নেতারা (তখন অবশ্য অন্ধ্রে সক্রিয় ওই গোষ্ঠীর নাম ছিল পিপলস ওয়ার গ্রুপ বা জনযুদ্ধ)। গত এক বছরে অবুঝমাঢ়ের জঙ্গলে যৌথবাহিনীর ধারাবাহিক হামলায় পর্যুদস্ত মাওবাদীরা আবার তাঁদের একদা ঘাঁটি তেলঙ্গানা-অন্ধ্রপ্রদেশে প্রত্যাবর্তনের চেষ্টা চালাচ্ছেন। তাঁদের মধ্যে ৩১ জন মঙ্গলবার ‘অপারেশন অক্টোপাসে’র ফাঁদে পড়েছেন।
মঙ্গলবার সকালে ছত্তীসগঢ়ের সুকমা জেলা এবং তেলঙ্গানার ভদ্রাদী কোঠাগুড়েম জেলা লাগোয়া অন্ধ্রপ্রদেশের আলুরি সীতারামরাজু জেলায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন নিষিদ্ধ সংগঠন সিপিআই (মাওবাদী)-র কেন্দ্রীয় কমিটির তরুণতম সদস্য মাধবী হিডমা। তার কয়েক ঘণ্টা পরে তিন রাজ্যের সীমানা লাগোয়া ওই এলাকা এবং আশপাশের জেলাগুলিতে তল্লাশি অভিযান চালিয়ে পুলিশ গ্রেফতার করেছে ৩১ জন সন্দেহভাজন মাওবাদীকে। ধৃতদের মধ্যে নিষিদ্ধ সংগঠন সিপিআই (মাওবাদী)-র সশস্ত্র বাহিনী পিএলজিএ (পিপলস লিবারেশন গেরিলা আর্মি)-র কয়েক জন জঙ্গি রয়েছেন বলে দাবি পুলিশের। বাকিরা মাওবাদীদের প্রতি সহানুভূতিসম্পন্ন। ধৃতদের মধ্যে অধিকাংশই ছত্তীসগঢ় থেকে পালিয়ে এসে আলুরি সীতারামরাজু, কৃষ্ণা, গোদাবরী, বিজয়ওয়াড়া এবং এনটিআর জেলায় লুকিয়েছিলেন বলে অন্ধ্র পুলিশের এডিজি মহেশচন্দ্র লাড্ডা জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার রাতে মহেশচন্দ্র বলেন, ‘‘৩১ জনের মধ্যে ন’জন সিপিআই (মাওবাদী)-এর সাধারণ সম্পাদক থিপ্পিরি তিরুপতি ওরফে দেবুজি ওরফে চেতনদেওজির দেহরক্ষী বাহিনীর সদস্য।’’ আর তাঁদের মধ্যে কয়েক জনকে জেরা করেই গঢ়চিরৌলী-অবুঝমাঢ়ের ‘রেড করিডর’ থেকে মাওবাদীদের তেলুগুভাষী অঞ্চলে পরিযাণের খবর জানা গিয়েছে বলে মহেশচন্দ্রের দাবি। প্রসঙ্গত, চলতি বছরে মাওবাদী সাধারণ সম্পাদক নাম্বালা কেশব রাও ওরফে বাসবরাজু ওরফে গগন্না, পলিটব্যুরো সদস্য রামচন্দ্র রেড্ডি ওরফে চলপতি, তাঁর স্ত্রী রবি ভেঙ্কাটা লক্ষ্মী চৈতন্য ওরফে অরুণা, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নরসিংহচলম ওরফে সুধাকরের মতো শীর্ষ নেতা-নেত্রীরা বস্তারের জঙ্গলে নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন। জীবিত নেতাদের মধ্যে এখনও সক্রিয় রয়েছেন মাওবাদী সাধারণ সম্পাদক ‘দলিত মুখ’ হিসাবে পরিচিত দেবুজি। দেহরক্ষী বাহিনীর ন’সদস্যকে গ্রেফতারের পরে পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, মাওবাদী সাধারণ সম্পাদক এখন অন্ধ্রেই গা-ঢাকা দিয়েছেন।