(বাঁ দিকে) সুশীল নাথানিয়াল। (ডান দিকে) জ়েনিফার নাথানিয়াল। —ফাইল চিত্র।
‘অপারেশন সিঁদুর’-এ তিনি খুশি। কিন্তু তৃপ্ত নন। তিনি ইনদওরের বাসিন্দা জ়েনিফার নাথানিয়াল। গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁও থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে বৈসরন উপত্যকায় যাঁর চোখের সামনে স্বামীকে গুলি করে মেরেছিল চার জঙ্গি। মৃত সুশীল নাথানিয়ালের স্ত্রী ওই চার জঙ্গিকেই জীবিত কিংবা মৃত অবস্থায় দেখতে চান। তাঁর কথায়, ‘‘এই ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর জন্য ভারত সরকারকে ধন্যবাদ। কিন্তু ওই চার জন কোথায়?’’
গত ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিহানায় নিহত হন ২৫ পর্যটক এবং এক স্থানীয় বাসিন্দা। ওই ঘটনার ১৫ দিনের মাথায় পাকিস্তান এবং পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে জঙ্গি সংগঠনগুলির নয়টি ‘ঠিকানা’য় প্রত্যাঘাত করেছে ভারতীয় সেনা। তাতে আর পাঁচ জন ভারতীয়ের মতো খুশি জ়েনিফার। তবে তিনি বলছেন, ন্যায়প্রতিষ্ঠা তখনই হবে যখন চার জঙ্গি যারা তাঁর স্বামীকে মেরেছিল, তাদের খুঁজে বার করা হবে।
জ়েনিফারেরা খ্রিস্টান। সে দিন জঙ্গিদের সামনে ‘কলমা’ পড়তে পারেননি স্বামী। তাই তাঁর স্বামীকে গুলি করে মেরেছিল চার জঙ্গী। মধ্যপ্রদেশের ইনদওরের বাড়িতে বসে অশ্রুসজল চোখে মহিলা বলেন, ‘‘ওই চার জন যা করেছে, কোনও জন্তুও এমন করে না। আমি চাই, ওই চার জনকে যেন কড়া শাস্তি দেওয়া হয়। ওই চার জনের মরাই উচিত।’’ জে়নিফার জানান, গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁও থেকে তাঁদের ফেরার কথা ছিল। ফেরার প্রস্তুতিই নিচ্ছিলেন তাঁরা। তিনি বলেন, ‘‘আমি ওখানকার একটি শৌচাগারে গিয়েছিলাম। বেরিয়ে প্রচণ্ড চিৎকার শুনতে পাই বাইরে। প্রথমে ভেবেছিলাম, রোপওয়ে ভেঙে গিয়েছে বুঝি। কিন্তু পিছনের দিকে ফিরে দেখলাম এক জনকে গুলি করে খুন করে দিল এক জন। লোকটির পাশে এক জন মহিলা ছিলেন। তিনি কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘আমাকেও মেরে ফেলো।’ সে সব গ্রাহ্য করেনি খুনিরা।’’ কিন্তু তখনই জ়েনিফার জানতেন এর পরের ‘পালা’ তাঁদের। তিনি জানান, চার জঙ্গি তাঁর স্বামীকে ঘিরে কলমা পড়তে বলে। জ়েনিফারেরা খ্রিস্টান। তাই কলমা পড়তে পারেননি তাঁর স্বামী। অতএব খুন! স্ত্রী এবং মেয়ের চোখের সামনে মৃত্যু এলআইসি-র কর্মী সুশীলের।
বুধবার সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে সুশীলের স্ত্রী বলেন, ‘‘ছুটি কাটাতে ভূস্বর্গে গিয়েছিলাম সকলে। যে ভয়ডরহীন ভাবে ওরা (জঙ্গি) নৃশংস কাণ্ডকারখানা করেছিল, ঠিক একই ভাবে ওদের শাস্তি দেওয়া উচিত।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘সে দিন যারা ওই কাজ করেছিল, আমি চাই, তাদের প্রত্যেককে যেন খুঁজে বার করতে পারে আমাদের সেনা। আমার আস্থা, ওরা পারবে।’’