National News

বিদেশ থেকে ফিরে এসে ছেলে দেখল ঘরে মায়ের কঙ্কাল

বহু দিন আর মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ হয়নি তাঁর। কিন্তু দেশে ফিরে যে সেই মায়েরই কঙ্কাল ছাড়া আর কিছুই দেখতে পাবেন না এমনটা বোধ হয় ঘুণাক্ষরেও ভাবেননি পেশায় ইঞ্জিনিয়র ওই বৃদ্ধার ছেলে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

মুম্বই শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০১৭ ১১:০৫
Share:

—প্রতীকী ছবি।

গত বছর এপ্রিল মাসে শেষ বারের মতো কথা হয়েছিল বিদেশে থাকা ছেলের সঙ্গে। তখনই ছেলের কাছে দুঃখ করে বলেছিলেন ‘ওয়েলস কট সোসাইটি’র এই বহুতলে তাঁর বড্ড একা লাগে। এমনকী একাকিত্ব কাটাতে ছেলের কাছে অনুরোধও করেছিলেন তাঁকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসার। এর পর বহু দিন আর মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ হয়নি তাঁর। কিন্তু দেশে ফিরে যে সেই মায়েরই কঙ্কাল ছাড়া আর কিছুই দেখতে পাবেন না এমনটা বোধ হয় ঘুণাক্ষরেও ভাবেননি পেশায় ইঞ্জিনিয়র ওই বৃদ্ধার ছেলে।

Advertisement

রবিবার সাত সকালেই আমেরিকা থেকে মুম্বইয়ের লোখণ্ডওয়ালার ওশিয়ারার ওই ফ্ল্যাটে পৌঁছেছিলেন ৪৩ বছরের ঋতুরাজ সহানি। ১৯৯৭ সালে একটি ইঞ্জিনিয়ারিং ফার্মে চাকরি নিয়ে আমেরিকায় চলে গিয়েছিলেন ঋতুরাজ। ২০১৩ সালে স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে ওই বহুতলেরই ১০ তলায় একা থাকতেন আশা সাহানি।

আরও পড়ুন: স্বামীকে মারার আগে মদ-মাংস

Advertisement

এ দিন সকালে ফ্ল্যাটে পৌঁছে ঋতুরাজ দেখেন ফ্ল্যাটের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। বারবার ডাকা সত্ত্বেও কেউ দরজা না খোলায় সন্দেহ হয় ঋতুরাজের। তড়িঘড়ি একজন চাবিওয়ালাকে ডেকে ফ্ল্যাটের তালা ভাঙেন তিনি। শোওয়ার ঘরে গিয়ে দেখেন, বিছানায় পড়ে রয়েছে ৬৩ বছরের মায়ের ‘দেহ’। সেই দেহে অবশ্য মাংসের কণামাত্র অবশিষ্ট ছিল না। শুধুই পড়ে ছিল মায়ের কঙ্কাল। এরপরেই ওশিয়ারা থানায় খবর দেন ঋতুরাজ।

আরও পড়ুন: বাঁধের গায়ে ঘোগের বাসা, হন্যে কর্তারা

ওশিয়ারা থানার সিনিয়র ইনস্পেক্টর সুভাষ কনভিলকর জানিয়েছেন, সম্ভবত বহু দিন আগেই মারা গিয়েছেন আশাদেবী। তাঁর শরীর খুবই ক্ষীণকায় থাকায় পচন ধরার কয়েক মাসের মধ্যে শুধু কঙ্কালই অবশিষ্ট ছিল। দেহে কোনও রকম আঘাতের চিহ্ন না থাকায় এবং দরজা ভিতর থেকে বন্ধ থাকায় একে স্বাভাবিক মৃত্যু বলেই প্রাথমিক ভাবে অনুমান পুলিশর। ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে আশাদেবীর দেহ।

আরও পড়ুন: স্কুলের দরজায় প্রায় দু’ঘণ্টা আটকে ছাত্রী

আশাদেবীর প্রতিবেশীদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাঁদের দাবি, বন্ধ ফ্ল্যাট থেকে কোনও রকম গন্ধ পাননি তাঁরা। তাঁদের বয়ান রেকর্ড করছে পুলিশ। কিন্তু দীর্ঘ দিন ধরে ঋতুরাজ তাঁর মায়ের কোনওরকম খোঁজ খবর নেননি কেন, উঠছে সেই প্রশ্নও। জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে ঋতুরাজকেও। কিন্তু আইনের গণ্ডি পেরিয়ে উঠছে অন্য প্রশ্ন। দেশে থাকা মায়ের সঙ্গে বিদেশে থাকা ছেলের বছর দেড়েক কোনও যোগাযোগ ছিল না। তা হলে কি মা-ছেলের সম্পর্কে কোনও রকম তিক্ততা ছিল? না কি চরম ঔদাসিন্যই এর মূল কারণ? অত্যাধুনিক কর্মব্যস্ত জীবনে অতি প্রিয় সম্পর্কগুলোর পরিণতি কি এতটাই শোচনীয়? তবে এ ক্ষেত্রে বাস্তবটা কী, তা পরিষ্কার নয় এখনও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন