গেরুয়ার পোঁচে ক্ষোভ, ফের সাদা

সাদা থেকে গেরুয়া। ত্রিপুরায় রাজনীতির পালাবদলে রং পাল্টে দেওয়া হয়েছিল রাজ আমলের দুর্গাবাড়ির! তবে খুবই অল্প সময়ের জন্য। তীব্র সমালোচনার মুখে রাজ্যের বিজেপি সরকার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই গেরুয়া মুছে সাবেক সাদা রং ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আগরতলা শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০১৮ ০৪:০৪
Share:

গেরুয়া মুছে সাদা রং ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আগরতলায় রবিবার। ছবি: বাপি রায়চৌধুরী

সাদা থেকে গেরুয়া। ত্রিপুরায় রাজনীতির পালাবদলে রং পাল্টে দেওয়া হয়েছিল রাজ আমলের দুর্গাবাড়ির! তবে খুবই অল্প সময়ের জন্য। তীব্র সমালোচনার মুখে রাজ্যের বিজেপি সরকার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই গেরুয়া মুছে সাবেক সাদা রং ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছে।

Advertisement

ত্রিপুরা রাজ্য ভারতে যুক্ত হয়েছিল ১৯৪৯ সালে। তখন চুক্তি হয়, রাজাদের অধীনে যত মন্দির আছে তার দায়দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে। সেই থেকেই রাজাদের দুর্গাবাড়ি রাজ্য সরকারের অধীনে। এই দুর্গাবাড়িটি তৈরি হয়েছিল মহারাজা রাধাকিশোর মাণিক্যের সময়, ১৯১০-১৯১১ সালে। তখন থেকেই এর রং ছিল সাদা| প্রত্যেক বার দুর্গাপুজোর আগে এটি নতুন করে রং করা হয়। এ বারও তা শুরু হয়েছে গত কাল। কিন্তু গেরুয়া রং দেখে মানুষজন বেজায় বিরক্ত হন। সোশ্যাল নেটওয়ার্কে এর তীব্র সমালোচনা শুরু হয়।

ত্রিপুরার বর্তমান মহারাজা প্রদ্যুৎকিশোর মাণিক্যবাহাদুর দেববর্মা বলেন, ‘‘এটা অপ্রত্যাশিত। এই ভাবে একটি ঐতিহ্যবাহী মন্দিরের রং পাল্টে দিল নতুন সরকার! ভগবানকে নিয়ে রাজনীতি করা ঠিক নয়।’’

Advertisement

সমালোচনার আঁচ বাড়তে দেখে প্রমাদ গোনেন সরকারি কর্তারা। তড়িঘড়ি আজ সকাল থেকে আবার আগের মতো সাদা রং করতে শুরু করেন শ্রমিকরা। তাঁদেরই এক জন বললেন, ‘‘অফিসের লোকজন কাল আমাদের যে রং দিয়েছিলেন, আমরা সেই রং করেছি। আজকে আবার সাদা রং দিয়েছে। সাদা ফেরাচ্ছি।’’

রং করতে বলা হয়েছিল রাজ্যের গ্রামোন্নয়ন দফতরকে। তাদের এগ্‌জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সোনারঞ্জন দেববর্মা বলেন, ‘‘ভুল করে মিস্ত্রি করে ফেলেছিল।’’ জেলাশাসক অফিসের পুজার্চন বিভাগের কর্মচারী প্রজেশ ভট্টাচার্যও বলেন, ‘‘ভুলবশত গেরুয়া রং হয়ে গিয়েছিল। আবার আগের সাদা রং করা হবে।’’

কী ভাবে এই ভুল হল? কার নির্দেশে? এ সবের সদুত্তর মেলেনি প্রশাসনের কোনও কর্তার কাছ থেকে। উল্টে সোনারঞ্জন যে গত কাল থেকে অসত্য বলে যাচ্ছেন, আজ তার প্রমাণ মিলেছে। তিনি জানিয়েছিলেন, যে রং মিস্ত্রি ভুল করেছেন, তিনি পালিয়ে গিয়েছেন। যদিও আজ সকালে একই মিস্ত্রিকে দুর্গাবাড়িতে রং করতে দেখা গিয়েছে।

রাজ্য সরকারের মুখ তো পুড়লই, অকারণে খরচও হল বাড়তি— এর দায় কে নেবে? সিনিয়র ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ধীরাজ দেববর্মা বলেন, ‘‘আগামিকাল অফিস খোলার পর এই বিষয়ে বলা যাবে।

‘‘পর পর ধাক্কা খেয়ে রাজ্যের বিজেপি-আইপিএফটি জোট সরকার বোধ হয় নতুন কোনও চ্যালেঞ্জ নিতে রাজি নয়, তাই আবার পুরনো রং ফিরিয়ে দিয়েছে,’’ কটাক্ষ ছুড়েছেন স্থানীয় কংগ্রেস নেতা তাপস দে। আর ত্রিপুরার মহারাজা প্রদ্যুৎকিশোর ফেসবুকে লিখেছেন “দুর্গাবাড়ির রং রাজ্য সরকার ফিরিয়ে দিয়েছে। এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন