ব্রহ্মসের সাফল্যের পর ওই ক্ষেপাণস্ত্রকে আরও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে পাঁচ দফা কর্মসূচি শুরু হয়েছে। —ফাইল চিত্র।
শুধু লাহৌর, ইসলামাবাদ কিংবা রাওয়ালপিন্ডি নয়, এ বার চিনের অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ সামরিক পরিকাঠামোয় আঘাত হানতে পারবে ভারত-রাশিয়া যৌথ উদ্যোগে তৈরি সুপারসনিক (শব্দের চেয়ে বেশি গতিবেগ সম্পন্ন) ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ব্রহ্মস। ইন্ডিয়া টুডে-তে প্রকাশিত একটি খবরে দাবি, ‘অপারেশন সিঁদুর’-এ ব্রহ্মসের সাফল্যের পর ওই ক্ষেপাণস্ত্রকে আরও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে পাঁচ দফা কর্মসূচি শুরু হয়েছে।
উত্তর-পূর্ব ভারতের ব্রহ্মপু্ত্র এবং রাশিয়ার মস্কোভা নদীর নাম মিলিয়ে ‘ব্রহ্মস’ শব্দটি তৈরি করা হয়েছে। ক্ষেপণাস্ত্রটির উৎপাদনকারী সংস্থা ‘ব্রহ্মস অ্যারোস্পেস লিমিটেড’ হল ভারতীয় প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থা (‘ডিফেন্স রিসার্চ ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজ়েশন’ বা ডিআরডিও) এবং রুশ প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থা ‘এনপিও মাশিনোস্ট্রোয়েনিয়া’-র যৌথ উদ্যোগ। বর্তমানে ভারত যে ‘ব্রহ্মস’ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে, তার চারটি শ্রেণিবিভাগ রয়েছে। স্থলভূমিতে স্থায়ী বা ভ্রাম্যমাণ (সাধারণ ভাবে সামরিক ট্রাক) উৎক্ষেপণ ব্যবস্থার পাশাপাশি যুদ্ধজাহাজ, সুখোই-৩০ যুদ্ধবিমান এবং ডুবোজাহাজ থেকে একে ছোড়া যায়। প্রথাগত বিস্ফোরকের পাশাপাশি ক্ষেপণাস্ত্রটি পরমাণু হাতিয়ার বহনেও সমান ভাবে সক্ষম। গতিবেগ শব্দের প্রায় তিনগুণ।
স্থলভূমি বা যুদ্ধজাহাজ থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য ব্রহ্মসের পাল্লা ২৯০ থেকে ৪০০ কিলোমিটার। বিমান বা ডুবোজাহাজে ব্যবহৃত সংস্করণের কিছুটা কম। নতুন পাঁচ দফা পরিকল্পনায় ব্রহ্মসের পাল্লা এবং গতিবেগ দু’টিই বাড়ানো হচ্ছে। নয়া সংস্করণে স্থলভূমি বা যুদ্ধজাহাজ থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য ব্রহ্মসের পাল্লা হবে ৮০০ কিলোমিটার। পাশাপাশি, সুপারসনিক থেকে হাইপারসনিক (শব্দের চেয়ে পাঁচ গুণ বা তার বেশি গতিবেগসম্পন্ন) ক্ষেপণাস্ত্রের স্তরে উন্নীত হবে ব্রহ্মস। বস্তুত, ইতিমধ্যেই রাশিয়া নয়া হাইপারসনিক ‘ব্রহ্মস মার্ক-২’ ব্যবহার শুরু করেছ, যা ভারতীয় সেনার হাতে এলে পাকিস্তানের পাশাপাশি চিনের বিস্তীর্ণ অংশও নাগালে চলে আসবে।
বর্তমানে বায়ুসেনার ব্যবহৃত ব্রহ্মসের ওজন ১২০০ কিলোগ্রাম বা তার কিছু বেশি। স্থল বা যুদ্ধজাহাজ সংস্করণের ওজন প্রায় ৩০০০ কিলোগ্রাম। নতুন পরিকল্পনায় ১০০০ কিলোগ্রামেরও কম ওজনের ব্রহ্মস নির্মিত হবে। রাফাল বা তেজসের মতো হালকা যুদ্ধবিমান থেকে যা ছোড়া যাবে। এ ছাড়া ব্রহ্মসের নতুন সংস্করণে আরও শক্তিশালী বিস্ফোরক ব্যবহারেরও পরিকল্পনা রয়েছে সেনার। প্রায় সাড়ে আট মিটার লম্বা ‘ব্রহ্মস’ ক্ষেপণাস্ত্র ৩০০ কেজি বিস্ফোরক বহনে সক্ষম। নতুন পরিকল্পনা কার্যকর হলে তা আরও বিধ্বংসী হয়ে উঠবে। এ ছাড়া পি-৭৫১ কর্মসুচিতে ডুবোজাহাজে ব্যবহৃত ব্রহ্মস উন্নততর করে তোলাও পাঁচ দফা পরিকল্পনার অন্যতম অঙ্গ।