আচমকা ঘোষণা নয়। হিন্দি বলয়ে জয়ের পর থেকেই গরিবদের জন্য ন্যূনতম আয় সুনিশ্চিত করতে আলোচনা শুরু করে ফেলেছিলেন রাহুল গাঁধী।
কংগ্রেস সূত্রের দাবি, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ ও প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমের সঙ্গে রাহুল বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন। অন্য কয়েক জন অর্থনীতিবিদের সঙ্গেও আলোচনা হয়। কংগ্রেসের সামনে ছিল ২০১৭ সালে দেওয়া তৎকালীন মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা অরবিন্দ সুব্রহ্মণ্যনের প্রস্তাব। তিনি সকলের জন্য ন্যূনতম আয় সুনিশ্চিত করার দাওয়াই দিয়েছিলেন। কংগ্রেস নেতারা স্থির করেন, রূপায়ণ করা সম্ভব এমন প্রতিশ্রুতিই লোকসভা ভোটের ইস্তাহারে প্রকাশ করা হবে। স্থির হয়, কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে প্রথম ধাপে শহর-গ্রামে যাঁরা সবচেয়ে গরিব, তাঁদের জন্যই এই প্রকল্প শুরু করা হবে। পরে কোষাগারের হাল দেখে প্রকল্পের পরিধি বাড়ানো যেতে পারে।
কংগ্রেস নেতাদের মতে, এই ঘোষণা আরও পরে করার কথা ছিল। কিন্তু নরেন্দ্র মোদীও এমন কোনও প্রকল্পের কথা ভাবছেন জেনে আগেই ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু তার আগে প্রাথমিক অঙ্ক কষে ফেলেছিলেন চিদম্বরমরা। স্থির হয়, কংগ্রেস যে অঙ্কটিই ন্যূনতম আয় হিসেবে ধরুক তার পুরোটা তুলে দেওয়া হবে না গরিব পরিবারের হাতে। দলের এক নেতা আজ জানান, ‘‘ধরা যাক, মাসে একশো টাকা ন্যূনতম আয় ধরা হচ্ছে। কোনও পরিবার যদি আশি টাকা উপার্জন করে, তাহলে তাদের কুড়ি টাকা দেওয়া হবে। পরের বছর পরিবারের আয় বেড়ে ৯০ টাকা হলে শুধু দশ টাকা দেওয়া হবে। মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টিও হিসেবে ধরা হবে।’’
আরও পড়ুন: চাকরি নিয়ে নীরব, মোদীর উৎসাহ খেলায়
এই প্রকল্পের জন্য অর্থ আসবে কোথা থেকে? চিদম্বরম আজ বলেন, ‘‘খোদ অরবিন্দ সুব্রহ্মণ্যন হিসেব করেছেন। বছরে পরিবার পিছু ১৮ হাজার টাকা করে দিতে হলে সেটি জিডিপির ১.৫%-এর বেশি হবে না। আমাদের লক্ষ্য, কোনও পরিবার যেন খাবার, ওষুধ থেকে বঞ্চিত না হয়।’’ তবে কংগ্রেস নেতারা স্বীকার করছেন, এটি কার্যকর করার জন্য কিছু ভর্তুকি প্রকল্প তুলে দিতে হবে। তবে মিড-ডে মিল, আইসিডিএস চালু থাকবে।
আজ রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত নিজের রাজ্যে এই প্রকল্প রূপায়ণ করার ঘোষণা করেছেন। মোদীকে খোঁচা দিয়ে রাহুল কোচিতে বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী অনিল অম্বানী-সহ ১৫ জন বন্ধুকে আয়ের গ্যারান্টি দিয়েছেন। আমরা দেশের সব গরিবের জন্য ন্যূনতম আয়ের গ্যারান্টি দেব।’’