দুর্ন়ীতির প্রতিবাদ করায় ম্যাজিস্ট্রেটের সামনেই আক্রান্ত হলেন একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্যরা। সার্কল অফিসারের ডাকা বৈঠকে পরিস্থিতি এতটাই অশান্ত হয় যে ঘটনাস্থল থেকে কার্যত পালিয়ে যান সরকারি কর্তা, কর্মীরা। বৃহস্পতিবার ইলাকান্দির কাটলিছড়া থানা এলাকার ঘটনা।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে খবর, গণবণ্টন, মিড ডে মিল, শিক্ষা-স্বাস্থ্য বিভাগে দুর্নীতি নিয়ে কয়েক দিন ধরে আন্দোলন চালাচ্ছিল স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটির সদস্যরা। গত ১৭ মার্চ এ নিয়ে জেলাশাসক ও কাটলিছড়ার সার্কল অফিসারের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। তার জেরে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের ডাক দেন সার্কল অফিসার জেমস আইন্ড। পুলিশ সূত্রে খবর, এ দিন বেলা ১২টা নাগাদ কাটলিছড়ার নজরুল ভবনে বৈঠক শুরু হয়। প্রবীণ নাগরিক নিশিকান্ত দেবের সভাপতিত্বে আলোচনা চলতে থাকে। হাজির ছিলেন জেমস আইন্ড, গণবণ্টন বিভাগের পরিদর্শক প্রসূন মৈত্র-সহ বিভিন্ন সরকারি বিভাগের কর্তারা। স্থানীয় প্রচুর মানুষও ছিলেন। গণবণ্টন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে তাঁরা ক্ষোভ
প্রকাশ করেন।
পুলিশ জানায়, ওই সময়ই কয়েক জন যুবক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যদের উপর চড়াও হয়। অভিযোগ, সংগঠনের সচিব বাচ্চু পালকে বেধড়ক মারধর করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখে সেখান থেকে বেরিয়ে যান জেমস আইন্ড, প্রসূনবাবুরা। সভা পণ্ড হয়ে যাওয়ার পর হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েন সাধারণ মানুষ।
ঘটনাস্থলে পৌঁছে বাচ্চুবাবুর প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করে পুলিশ। কিন্তু অভিযোগ, কয়েক জনের বিরুদ্ধে তাঁর লিখিত অভিযোগ নেওয়া হয়নি। বাচ্চুবাবু বলেন, ‘‘প্রথম থেকেই একটি সিন্ডিকেট আমাদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। সরকারি টাকা নয়ছয় করছে তারাই। সভায় হামলার ছক ওই সিন্ডিকেটের।’’ তাঁর অভিযোগ, পুলিশ মামলা
রুজু করেনি। তাঁকে আদালতে যেতে বলা হয়েছে। এ নিয়ে স্থানীয় থানার ওসি অমলেন্দু দাস কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
অন্য দিকে, ঝড়ে গৃহহারা পরিবারগুলিকে আর্থিক সাহায্যের দাবি তুলল কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতি। ৬ ও ৭ এপ্রিল হাইলাকান্দিতে প্রচণ্ড ঝড়ে গ্রামাঞ্চলে শতাধিক ঘর ভেঙে পড়ে। অভিযোগ, আপিনরংপুর, টান্টুধানপুর, ধলাছড়া বিলাইপুরের মতো পঞ্চায়েত এলাকায় গৃহহারারা কোনও সরকারি সাহায্য পাননি।
কৃষক মুক্তির নেতা জহিরউদ্দিন বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত ৮২ জনের নামতালিকা মিলেছে। সেগুলি প্রশাসনের হাতে তুলে দেওয়া হবে। আরও অনেকই এখনও খোলা আকাশের নীচে রাত কাটাচ্ছেন।’’ এ বিষয়ে লালার বিডিও সরফরাজ হক বলেন, ‘‘সব কিছু দেখা হচ্ছে।’’
বনধ ডিমা হাসাওয়ে। ডিমা হাসাও জেলায় ২৪ ঘণ্টার বনধে মিশ্র সাড়া মিলেছে। পুলিশ জানিয়েছে, কোথাও কোনও অপ্রীতিকর ঘটনার খবর নেই। কাউকে গ্রেফতারও করা হয়নি। তবে অবরোধে বাসে আটকে যাওয়া এক যাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে হারাঙ্গাজাও প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়।
ডিমা হাসাও জেলা দু’ভাগ করে অ-ডিমাসা উপজাতিদের জন্য পৃথক জেলার দাবিতে আজ ২৪ ঘণ্টার বনধ ডাকে ইন্ডিজেনাস স্টুডেন্টস ফোরাম ও ইন্ডিজেনাস উওম্যান ফোরাম। প্রশাসনিক সূত্রে খবর,
হাফলং, হারাঙ্গাজাও এবং মাহুরে বনধে সাড়া মেলে।
অন্য ছবি ছিল মাইবাং, উমরাংশু, দিয়ংমুখ এলাকায়। হারাঙ্গাজাওয়ে করিমগঞ্জ-লামডিং দু’টি যাত্রীবাহী বাসকে সকাল থেকে আটকে রাখে অবরোধকারীরা। তাতেই এক যাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে, স্থানীয় মানুষ অসুস্থ ওই ব্যক্তিকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান। পুলিশ জানিয়েছে, চিকিৎসার পর ওই ব্যক্তি সুস্থ রয়েছেন।