পেঁয়াজের মালা ঝুলিয়ে ক্ষোভ মহিলা কংগ্রেসের

বছর দু’য়েক আগে হঠাৎ আলু-পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেলে গুয়াহাটির সাংসদ বিজয়া চক্রবর্তী পেঁয়াজের মালা পরে মিছিলে হেঁটেছিলেন। শিলচরে জেলাশাসকের অফিসের সামনে আলু-পেঁয়াজের দোকান খুলেছিলেন বিজেপি নেতা দিলীপকুমার পাল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলচর শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০১৫ ০৩:৩১
Share:

পেঁয়াজের মালা পরে বিক্ষোভ মহিলা কংগ্রেসের। বক্তা বিধায়ক রুমি নাথ (নীল জামা)। বৃহস্পতিবার শিলচরে। ছবি: স্বপন রায়।

বছর দু’য়েক আগে হঠাৎ আলু-পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেলে গুয়াহাটির সাংসদ বিজয়া চক্রবর্তী পেঁয়াজের মালা পরে মিছিলে হেঁটেছিলেন। শিলচরে জেলাশাসকের অফিসের সামনে আলু-পেঁয়াজের দোকান খুলেছিলেন বিজেপি নেতা দিলীপকুমার পাল।

Advertisement

আজ পেঁয়াজ ও ডালের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে তাঁদের খোঁচা দিল মহিলা কংগ্রেস। পেঁয়াজের মালা পরে উন্নয়ন ভবনের সামনে ডাল নিয়ে বসেন সংগঠনের সদস্যরা। বিজয়া চক্রবর্তী এখনও গুয়াহাটির সাংসদ। দিলীপবাবু শিলচরের বিধায়ক। মহিলা কংগ্রেস জানতে চায়, এখন পেঁয়াজের দাম তিন সংখ্যার কাছাকাছি পৌঁছলেও তাঁরা নীরব কেন? দিলীপবাবুর দোকান কোথায় তা জিজ্ঞাসা করেন বড়খলার কংগ্রেস বিধায়ক রুমি নাথ।

মহিলা কংগ্রেসের বিক্ষোভে সামিল হয়ে শিলচরের সাংসদ সুস্মিতা দেব কেন্দ্রীয় সরকারকে তুলোধোনা করেন। সংসদে কোন পরিস্থিতিতে তাঁদের লাগাতার বিক্ষোভ দেখাতে হল, তা ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, ‘‘অন্যায়-অবিচার-দুর্নীতি-স্বজনপোষণ চলতে থাকলে কংগ্রেস সাংসদরা বার বার লোকসভার ভেতরে-বাইরে আন্দোলন করবেন।’’

Advertisement

মঙ্গলবার বিজেপি শিলচরে সুস্মিতা দেবের বিরুদ্ধে ধিক্কার সমাবেশ করে। সেখানে প্রধান বক্তা ছিলেন দার্জিলিংয়ের বিজেপি সাংসদ সুরিন্দর সিংহ অলুহওয়ালিয়া। সেই প্রসঙ্গ টেনে সুস্মিতাদেবী হুঁশিয়ারির সুরে বলেন, ‘‘শিলচরে এসে আমাকেই ধিক্কার! আমার ক্ষমতা ছিল অলুহওয়ালিয়ার সভা বানচাল করে দেওয়ার। কিন্তু আমি তা করিনি। আশায় ছিলাম, অলুহওয়ালিয়ার মতো প্রবীণ নেতা এই অঞ্চলের জন্য নতুন কিছু ঘোষণা করতে পারেন। কিন্তু কী মিলল, সেই পুরনো কথা।’’ আসলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দল ভাষণ দিয়েই দেশ চালাতে চায় বলে মন্তব্য করেন সুস্মিতাদেবী।

যুব কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদিকা ইন্দ্রাণী মিশ্র, প্রদেশ যুব কংগ্রেস সভাপতি হীরণ্য ভুঁইঞা, মহিলা কংগ্রেস সভাপতি সঞ্চিতা আচার্য পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধি রোধে কেন্দ্রের ব্যর্থতার সমালোচনা করেন।

তবে, পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধির আন্দোলনের বদলে বিজেপি নেতারা সুস্মিতা দেবের হুঁশিয়ারি নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেন। শিলচরের বিধায়ক দিলীপবাবু পাল্টা চ্যালেঞ্জ জানান। তিনি বলেন, ‘‘ক্ষমতা থাকলে আগামী দিনে আমাদের কোনও একটি সভা বানচাল করুন।’’ দিলীপবাবুর কথায়, ‘‘কোনও রাজনৈতিক দলের সভা ভণ্ডুলের কথা বলা ভয়ঙ্কর ব্যাপার। এরা যে অরাজকতা তৈরি করার দল, তা ওই কথাতেই স্পষ্ট। এটা স্বৈরাচারী, অগণতান্ত্রিক। কোনও সাংসদের মুখে শোভা পায় না।’’

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ রাজ্য সরকারের এক্তিয়ারভুক্ত বলে তিনি গগৈ সরকারকে পাল্টা দোষারোপ করেন। অভিযোগ জানান, খাদ্য ও সরবরাহ মন্ত্রী নজরুল ইসলাম দাম নিয়ন্ত্রণে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছেন। কংগ্রেস এখন মানুষকে ভুল বোঝানোর চেষ্টা করছেন। পরিকল্পিত ভাবে মোদী সরকারকে দোষারোপ করা হচ্ছে। এতে কোনও লাভ হবে না বলে দিলীপবাবু মন্তব্য করেন। সঙ্গে সতর্ক করে দেন— মানুষকে বোকা ভাবার পরিণাম শেষ পর্যন্ত মঙ্গলদায়ক
হয় না।

এআইডি এসও নেতা প্রশান্ত ভট্টাচার্য মহিলা কংগ্রেসের আন্দোলনকে ‘নাটক’ বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘‘দু’বছর আগে একই নাটক বিজেপি করেছিল। এখন তারা সরকারে গিয়ে কর্পোরেট সংস্থাগুলির জন্য কাজ করছে। আসলে একই সঙ্গে নৈশভোজ সারেন সুস্মিতা-সুরিন্দর।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন