উল্লাস: রাজ্যসভা ভোটে আহমেদ পটেলের জয়ের পরে উৎসবের মেজাজে কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকেরা। বুধবার নয়াদিল্লিতে। পিটিআই।
রাত ১টা ৪০। বন্ধ দরজার বাইরে এল খবরটা— ৪৪ ভোট পেয়ে জিতে রাজ্যসভায় যাচ্ছেন আহমেদ পটেল। সঙ্গে সঙ্গে উল্লাস। কাঁদলেনও কেউ কেউ। নেতারা বললেন, বহু প্রলোভন আর হুমকিতেও ‘ইমান’ বেচেননি ‘গরিব’ কংগ্রেস বিধায়কেরা।
গণনা কেন্দ্রে ঠায় বসে অমিত শাহ। রাত জেগে সনিয়া গাঁধীও। ফোনে তাঁকে খবরটা দিয়ে আহমেদ টুইট করলেন, ‘সত্যমেব জয়তে।’
২০১০ সালে সোহরাবুদ্দিন ভুয়ো সংঘর্ষ মামলায় জেলে যান অমিত। বিজেপির ধারণা, তাতে আহমেদেরও হাত ছিল। সাত বছর পরে আহমেদকে সামনে পেয়ে হারাতে মরিয়া ছিলেন অমিত। তাই কংগ্রেসের বিধায়ক ভাঙাতে হাতিয়ার করেছিলেন শঙ্করসিন বাঘেলাকে। কিন্তু ৬ জনকে ভাঙানোর পরেই ৪৪ বিধায়ক নিয়ে আহমেদ চলে গেলেন বেঙ্গালুরু। সেখানেও চলল আয়কর হানা। দমেননি আহমেদ।
অমিতের অঙ্ক ছিল, ৪৫-এর নীচে নামিয়ে আনা আহমেদকে। তা হলেই দ্বিতীয় পছন্দের ভোটে বাজি মারবেন বিজেপির প্রার্থী বলবন্তসিন রাজপুত। কিন্তু অভিযোগ উঠল, কংগ্রেসের দুই বিধায়ক নিয়ম-বিরুদ্ধ ভাবে ভোট দেখিয়েছেন বিজেপিকে।
আরও পড়ুন: যত সব বেয়াদবের দল, মন্ত্রীদের ধমক জেটলির
রাজ্য নির্বাচন কমিশনে খারিজ হল অভিযোগ। খবর পেলেন সনিয়া। দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনে হাজির হলেন কংগ্রেসের প্রতিনিধি। অমিতের নির্দেশে কমিশনে ছুটলেন অরুণ জেটলি, রবিশঙ্কর প্রসাদ-সহ সাত মন্ত্রী। বড় টিম পাঠালেন সনিয়া। নেতৃত্বে পি চিদম্বরম। স্লগ ওভার জমজমাট।
রাত সাড়ে ১১টা। ভিডিও দেখে কমিশনের রায়, দুই কংগ্রেস বিধায়কের ভোট বাতিল। বিজেপি দাবি তুলল, ভিডিওতে বোঝাই যাচ্ছে না, ওই দু’জন বিজেপিকে ভোট দেখিয়েছেন। লাভ হল না। গণনা শুরু হতে হতে ১টা। ফল ঘোষণা চল্লিশ মিনিট পরেই।
কংগ্রেসের এক বিধায়ক বিজেপিকে ভোট দেওয়ায় আহমেদের হাতে ভোট ছিল ৪৩টি। কংগ্রেস বলছে, ৪৪তম ভোটটি দিয়েছে জেডিইউ। আবার এনসিপি-র দাবি, তাদের এক বিধায়ক বিজেপিকে, এক জন কংগ্রেসকে ভোট দিয়েছেন।
কাজেই রহস্য রইল। তবু ‘জো জিতা ওহি সিকন্দর।’ সিকন্দরের হাসিটা হাসছেন আহমেদই। অমিত শাহকে হারানোর হাসি।