কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে এ বার সরাসরি পাঠ্যক্রমের সঙ্গে জুড়তে চলেছে কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রক। ছবি: (এআই সহায়তায় প্রণীত)।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাই (এআই) কি ভবিষ্যৎ? পক্ষে, বিপক্ষে এ নিয়ে অনেক যুক্তি রয়েছে। কারও আছে আশীর্বাদ, কারও কাছে অভিশাপ! তবে প্রায় সকলেই একবাক্যে স্বীকার করেন, অদূর ভবিষ্যতে বিভিন্ন ক্ষেত্রেই এআই তার ছড়ি ঘোরাবে। প্রযুক্তির এই দানকে এ বার সরাসরি পাঠ্যক্রমের সঙ্গে জুড়তে চলেছে কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রক। বিশ্বের ইঁদুরদৌড়ে যেন ভারতের ছেলেমেয়েরা পিছিয়ে না-পড়ে, সেই কারণে তৃতীয় শ্রেণি থেকেই কৃত্রিম মেধাকে পড়াশোনার অঙ্গ হিসাবে জুড়ে দিতে চাইছে তারা। শুধু কি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, তার সঙ্গে পাঠ্যক্রমের অঙ্গ হবে ‘কম্পিউটেশনাল থিঙ্কিং’!
জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০-এর অধীনেই এই নয়া পাঠ্যক্রম তৈরির ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে। আগামী শিক্ষাবর্ষ, অর্থাৎ ২০২৬-২৭ শিক্ষাবর্ষ থেকেই তৃতীয় শ্রেণির পড়ুয়াদের শেখানো হবে এআই। সিবিএসই ছাড়াও কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়গুলির পাঠ্যক্রম নতুন ভাবে সাজানোর কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। কী ভাবে পড়ুয়াদের এআই জ্ঞান দেওয়া যায়, তার নীলনকশা তৈরির জন্য সিবিএসই তো বিশেষজ্ঞ কমিটিও তৈরি করেছে।
কেন তৃতীয় শ্রেণি থেকেই কৃত্রিম মেধার উপর জোর দিতে চাইছে কেন্দ্র? শুধু প্রযুক্তিগত বোধ পড়ুয়াদের মধ্যে সঞ্চার করা লক্ষ্য নয়, এআই সম্পর্কে নীতিগত ও সামাজিক সচেতনতা গড়ে তোলাও উদ্দেশ্য! অর্থাৎ, এআই কী ভাবে মানুষের কল্যাণের কাজে ব্যবহার করা যায়, তার ধারণা ছোটবেলা থেকেই পড়ুয়াদের মনে গেঁথে দেওয়ার চেষ্টা। এআই-কে যেন ভুল পথে পরিচালিত করা না-হয় সেই জ্ঞানও দেওয়া হবে পড়ুয়াদের।
পড়ুয়াদের মধ্যে কৃত্রিম মেধা সম্পর্কিত জ্ঞান ছড়িয়ে পড়বে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্যে দিয়েই। তাই তাঁদের এই বিষয়টি সম্পর্কে ধারণা স্পষ্ট হওয়া প্রয়োজন। তাই তাঁদের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা করা হবে। যাতে পড়ুয়াদের মধ্যে অপূর্ণ জ্ঞানের বিস্তার না-হয়, তা নিশ্চিত করাকেই অগ্রাধিকার দিচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রক।
২০১৪ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকেই ‘ডিজিটাল’ মাধ্যমের উপর জোর দিয়ে আসছেন নরেন্দ্র মোদী। ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’ গড়ার স্বপ্নের কথা বার বার শোনা যায় তাঁর কণ্ঠে। সম্প্রতি প্যারিসে অনুষ্ঠিত এআই সম্মেলনেও ভবিষ্যৎ ভারতের এক ছবি নিজের বক্তৃতায় তুলে ধরেছেন মোদী। ভারতেও এআই প্রযুক্তি সম্পর্কিত নানা উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। সেই তালিকায় জুড়তে চলেছে শিক্ষা মন্ত্রকের এই ভাবনা।