অন্ধ্রপ্রদেশের কাসিবুগ্গায় বেঙ্কটেশ্বর স্বামী মন্দিরে হুড়োহুড়ি। শনিবার। ছবি: এক্স।
একাদশীর ভিড়ে অন্ধ্রপ্রদেশের মন্দিরে পদপিষ্টের পরিস্থিতি। অন্তত ন’জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। আশঙ্কা, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীকাকুলাম জেলার কাসিবুগ্গায় বেঙ্কটেশ্বর স্বামী মন্দিরে শনিবার একাদশী উপলক্ষে অনেক ভক্তের সমাগম হয়েছিল। কী থেকে হুড়োহুড়ি শুরু হল, কেন এই বিপর্যয়, এখনও স্পষ্ট নয়।
শ্রীকাকুলামের জেলাশাসক জানিয়েছেন, মন্দিরে ঘটনাস্থলেই সাত জনের মৃত্যু হয়েছিল। পরে হাসপাতালে আরও তিন জনের মৃত্যু হয়। অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে জানানো হয়েছে, একাদশীর পুজো দিতে একই সময়ে এত বেশি সংখ্যক ভক্ত মন্দিরে চলে এসেছিলেন যে, পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যায়। ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। সেখান থেকেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং সকলে একসঙ্গে মন্দির থেকে বেরোনোর চেষ্টা করতে শুরু করেন। তার ফলে এই বিপর্যয় বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে। তবে ভিড়ের মধ্যে অন্য কোনও ঘটনা ঘটেছিল কি না, জানা যায়নি। কাসিবুগ্গার ডিএসপি লক্ষ্মণ রাও জানিয়েছেন, সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ এই ঘটনা ঘটেছে।
অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নায়ডু এই ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেছেন। সমাজমাধ্যমে তিনি লিখেছেন, ‘‘বেঙ্কটেশ্বর মন্দিরের পদপিষ্টের ঘটনায় আমি স্তম্ভিত। ভক্তদের মৃত্যু অত্যন্ত হৃদয়বিদারক। আমি মৃতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। যাঁরা আহত, তাঁদের দ্রুত উদ্ধার এবং চিকিৎসার বন্দোবস্ত করা হবে। সংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের সেই নির্দেশ দিয়েছি। স্থানীয় আধিকারিক এবং জনপ্রতিনিধিদের ঘটনাস্থলে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেছি। দ্রুত উদ্ধারকাজ যাতে সম্পন্ন হয়, তা নিশ্চিত করা হবে।’’
একাদশীতে বেঙ্কটেশ্বর মন্দিরে বিশেষ পুজোর আয়োজন করা হয়েছিল। শয়ে শয়ে ভক্ত পুজো দিতে গিয়েছিলেন। অধিকাংশই ছিলেন মহিলা। সমাজমাধ্যমে ঘটনাস্থলের একাধিক ছবি এবং ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, মহিলারা ভিড়ের মধ্যে হাতে পুজোর ডালি নিয়ে কী ভাবে ধাক্কাধাক্কি করছেন। প্রাণে বাঁচতে ভিড় থেকে বেরোনোর চেষ্টা করছেন সকলে। অনেকে পড়েও যাচ্ছেন। এ ছাড়া, অন্য একটি ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, মন্দির চত্বরে একাধিক মৃতদেহ পড়ে রয়েছে। এই সমস্ত ছবি বা ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম। পদপিষ্টের পরিস্থিতির খবর পেয়েই মন্দিরে পৌঁছে গিয়েছিল পুলিশ। বেশ কিছু ক্ষণের চেষ্টায় তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
অন্ধ্রপ্রদেশের ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুরা। প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় ত্রাণ তহবিল থেকে মৃতদের পরিবারকে দু’লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্যের কথা ঘোষণা করা হয়েছে। আহতদের চিকিৎসার জন্য দেওয়া হবে ৫০ হাজার টাকা করে।