—ফাইল চিত্র।
বিজেপিকে রুখতে এ বার কী হাত মেলাচ্ছেন বুয়া-ভাতিজা!
জল্পনা ছিলই। গত কাল সেই পারদকে আরও এক ধাপ উস্কে দিয়েছেন ভাতিজা অখিলেশ যাদব। জানিয়েছেন, আগামী ২৭ অগস্ট লালুপ্রসাদ যাদবের ডাকা পটনার জনসভায় নিজে উপস্থিত
থাকবেন। তার পর এক ধাপ এগিয়ে অখিলেশ বলেন, ওই সভাতে মায়াবতীও হাজির থাকবেন। লখনউয়ের রাজনীতিতে মুলায়ম-পুত্র যাঁকে বুয়া বলেই সম্বোধন করেন। অখিলেশের কথায়, ‘‘ভবিষ্যতে জোট নিয়ে যদি কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার হয়, তা হলে তা সে দিন নেওয়া হতে পারে।’’ অখিলেশের মুখ খোলার পর চব্বিশ ঘণ্টা পরেও যদিও এ নিয়ে বিএসপি শিবির নীরবই থেকেছে। তবে অনেকেই মনে করছেন, যে ভাবে অখিলেশ নিজে থেকেই মায়াবতীর হয়ে সওয়াল করেছেন, তাতে স্পষ্ট দু’শিবিরে তলে তলে বোঝাপড়ার প্রক্রিয়া এগিয়ে গিয়েছে।
সনিয়া গাঁধীর আমন্ত্রণে ১৭টি বিজেপি-বিরোধী দল এক মঞ্চে এসেছে ঠিকই। তবে অখিলেশ–মায়াবতী, তৃণমূল-সিপিএমের মতো দলগুলি নিজের নিজের রাজ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই থেকে সরে আসেনি। রাষ্ট্রপতির ভোটে বিজেপিকে ঠেকাতে এগিয়ে এলেও, বৃহত্তর রাজনৈতিক মঞ্চে এরা কী ভাবে মিলেমিশে কাজ করতে পারেন, সেটাই দেখার। বিশেষ করে প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলি জোট গড়ে মোদীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামতে পারেন কিনা সেটাই আসল পরীক্ষা। যেমন করেছিলেন নীতীশ কুমার ও লালুপ্রসাদ।
আরও পড়ুন:কুলভূষণকে পেতে জাহিরই কি অস্ত্র দিল্লির
উত্তরপ্রদেশে বিজেপিকে আটকাতে তিন বিরোধী দলের একজোট হওয়ার প্রশ্নে সরব হয়েছিলেন রাহুল গাঁধী। বিধানসভা ভোটের প্রচারে নেমে অখিলেশকে পাশে বসিয়ে প্রথম সাংবাদিক বৈঠকেই মায়াবতীর প্রশংসাও করে বসেন তিনি। সপা নেতা সে সময়ে অস্বস্তিবোধ করলেও ভোটের ফলপ্রকাশের আগের দিন মায়াবতীর সঙ্গে জোট গড়ার প্রস্তাব দিয়ে বসেন। বিজেপির বিপুল জয়ের পরে অবশ্য সেই জোট গড়ার প্রয়োজন হয়নি। কিন্তু নির্বাচনে বিজেপির বিরাট জয়ের পরেই তলে তলে কাছে আসার প্রক্রিয়া শুরু করেন বুয়া-ভাতিজা। আর গত কাল যে ভাবে অখিলেশ মায়াবতীর হয়ে দরবার করেছেন, তা দেখে বিরোধী শিবির একে শুভ সঙ্কেত বলেই মনে করেছে।
গত লোকসভা ভোটে ৩১ শতাংশ ভোট পেয়েছিল বিজেপি। শরিকেরা ভোট পায় আরও ৪-৫ শতাংশ। ফলে গত লোকসভার নিরিখে বাকি ৬৫ শতাংশ ভোট রয়েছে বিরোধীদের ঝুলিতে। ফলে একজোট হলে অঙ্ক যে তাদের সঙ্গে রয়েছে, তা বুঝতে পারছে বিরোধী শিবির। এখন প্রয়োজন রসায়নের। বুয়া-ভাতিজার মধ্যে সেই রসায়ন কাজ করে কিনা, এখন সেটাই দেখার।