নোট বাতিলের পর ব্যাঙ্ক, এটিএমের ভিড়ের কথা ভেবেই চিন্তায় ঝাড়খণ্ডের সুরাপ্রেমীরা। এ বার তেমন লম্বা লাইনে না দাঁড়াতে হয় মদের দোকানেও! আজ যেন তার আভাস মিলল কোডারমা থেকে চাইবাসা, ধানবাদ থেকে সিমডেগায়।
আগামী কাল থেকে ঝাড়খণ্ডে ঝাঁপ বন্ধ হচ্ছে সমস্ত বেসরকারি মদের দোকানের। গোটা রাজ্যে এখন ১ হাজারের বেশি মদের দোকান। ১ অগস্ট থেকে তা দাঁড়াবে ২১২টিতে। সবই সরকারি।
সোমবার দুপুরে রাঁচীর লালপুরে একটি মদের দোকানে তুমুল ভিড়। জানা গেল, মদের বোতলে মিলছে ‘বাম্পার ডিসকাউন্ট’। গুদাম খালি করতেই ওই পথে হেঁটেছেন দোকান মালিক। রাজ্যের অন্য প্রান্তেও ছবিটা ছিল একই। আগামী কাল থেকে কী হবে, তা নিয়ে সংশয়ে আগেভাগে মদের ‘ভাঁড়ার’ ভরতে এ দিন তৎপর ছিলেন নাগরিকদের একাংশ।
ঝাড়খণ্ড সরকারের আবগারি দফতরের সচিব অবিনাশ কুমার জানান, এ বার থেকে রাজ্যে মদ বিক্রি করবে ‘ঝাড়খণ্ড স্টেট বেভারেজ কর্পোরেশন লিমিটেড’। তিনি বলেন, ‘‘বেসরকারি মদের দোকানের লাইসেন্স ১ অগস্ট থেকে আর পুনর্নবীকরণ করা হবে না। তবে হোটেল, বার ওই নিয়মের বাইরে থাকবে।’’ তিনি জানান, মঙ্গলবারই রাজ্যে ২১২টি সরকারি মদের দোকান খুলে যাবে।
ঝাড়খণ্ডে মদ বিক্রি নিয়ে টানাপোড়েন। কী বলছেন প্রতিবেদক
সুরাপ্রেমীদের বেশিরভাগ এ নিয়ে আশঙ্কায় ডুবেছেন। আবগারি দফতরের প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী, সব চেয়ে বেশি সরকারি মদের দোকান খোলা হবে ধানবাদ, পূর্ব সিংভূমে। ওই দুই জেলায় ২৫টি করে দোকান থাকবে।
লালপুরের দোকানে হাজির এক জনের মন্তব্য, ‘‘কোডারমার মতো কম বসতিপূর্ণ জেলায় ১৬টি মদের দোকান থাকবে। রাজধানী রাঁচীতে মাত্র ১৫টি!’’ আরও এক জনের কথায়, ‘‘এ বার থেকে মদের কিনতে লাইনে দাঁড়ানোই দেখছি ভাগ্যে লেখা। যেন নোট বাতিলের মতো পরিস্থিতি।’’
সরকারি নিয়মে প্রত্যেক ক্রেতার মদ ক্রয়ের সর্বাধিক পরিমাণও ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। ‘ঝাড়খণ্ড স্টেট বেভারেজ কর্পোরেশন’-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর বিনোদ শঙ্কর সিংহ বলেন, ‘‘এক জন একটি দোকান থেকে এক বারে ৩ লিটারের বেশি মদ কিনতে পারবেন না।’’ তা হলে কী বিহারের মতোই মদ নিষেধের দিকে এগোচ্ছে ঝাড়খণ্ড? অবিনাশবাবু বলেন, ‘‘মদ নিষিদ্ধ করা হচ্ছে না। সুস্থ সমাজ গড়তে তার উপর নিয়ন্ত্রণ করা হবে। সাধারণ মানুষের চাহিদা অনুযায়ী পরের পদক্ষেপ করবে সরকার।’’