আশা দেবী। নির্ভয়ার মা। ছবি: সংগৃহীত।
নির্ভয়া কাণ্ডের পর পাঁচ বছর কেটে গিয়েছে। কিন্তু এই পাঁচ বছরেও মেয়েদের নিরাপত্তার ছবিটা যে বিন্দুমাত্র বদলায়নি সে বিষয়ে ক্ষোভ উগরে দিলেন নির্ভয়ার মা আশা দেবী। একই সঙ্গে হতাশা ঝরে পড়ল তাঁর গলায়।
নির্ভয়া কাণ্ডের পর সরকার ও রাজনীতিবিদরা অনেক রকম প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি শুধু মুখের কথা হিসাবেই থেকে গিয়েছে। তা পূরণ করা হয়নি বলে দাবি করেন তিনি।
আশা দেবী বলেন, “দিল্লির প্রতিটি বাসে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সরকার। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সেটা হয়নি। ২০১২-য় যে অবস্থায় ছিলাম আজও সেখানেই দাঁড়িয়ে আছি।”
আরও পড়ুন: মুম্বই-মস্কো করিডর চালু জানুয়ারিতেই
দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিনিয়তই কোনও না কোনও মেয়ে অত্যাচারের শিকার হচ্ছে। ধর্ষণ, গণধর্ষণ করে খুনের মতো ঘটনা ঘটেই চলেছে। অথচ অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় পুলিশ সে সব ঘটনার কোনও মামলাই রুজু করেনি।
সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশের বান্দায় এক তরুণীকে উত্যক্ত করছিল এক ব্যক্তি। সেই তরুণী আত্মহত্যা করেন। পরিবারের অভিযোগ, পুলিশের কাছে বিষয়টি জানালেও তারা কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। এক নাবালিকাকে এই উত্তরপ্রদেশেই দু’মাস ধরে ধর্ষণ করার অভিযোগ ওঠে তিন জনের বিরুদ্ধে। ওই নাবালিকা পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানোয় দুষ্কৃতীরা তাকে পুড়িয়ে মারে।
আরও পড়ুন: টাকা লাগে তো দেবে কেন্দ্র: মোদী
মেয়েদের প্রতি অত্যাচারের রুখতে আইন হয়েছে। কিন্তু তার পরেও মেয়েরা কোনও না কোনও ভাবে অত্যাচারের শিকার হচ্ছে। আর এ ধরনের ঘটনা নিয়ে যখনই প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় সরকার বা রাজনীতিবিদদের, তারা শুধু প্রতিশ্রুতির বাণী শুনিয়ে যান বলেই দাবি করেন আশা দেবী। যে যন্ত্রণা, কষ্ট আর অত্যাচারের শিকার হয়ে তাঁর মেয়ে মারা গিয়েছে, সেই যন্ত্রণাকে বিফলে যেতে দেবেন না বলেই জানান তিনি। তাই নির্যাতিতাদের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। এ কারণে একটি ফাউন্ডেশনও খুলেছেন। এনডিটিভি-কে বলেন, “এটাই আমার সান্ত্বনা। মেয়েকে তো আর ফিরে পাব না, কিন্তু এই ফাউন্ডেশনের উদ্দেশ্য হল মেয়েদের প্রতি অত্যাচারের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলা। যাতে এমন ঘটনার শিকার আর কেউ না হন।”
২০১২-র ১৬ ডিসেম্বর চলন্ত বাসে প্যারা-মেডিক্যালের ছাত্রী নির্ভয়াকে চলন্ত বাসে গণধর্ষণ করে ৬ জন। ১৩ দিন পর মৃত্যু হয় তাঁর। এই ঘটনার পর দেশজুড়ে আন্দোলন, প্রতিবাদের ঝড় বয়ে যায়।