রাজ্যসভায় অমিত শাহ। নিজস্ব চিত্র।
রাজ্যসভায় ‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে বিতর্কে ভারতীয় সেনার সাফল্যের চেয়েও কংগ্রেসের সমালোচনায় বেশি গুরুত্ব দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আর তা করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মতোই ‘লক্ষ্য’ হিসাবে বেছে নিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুকে।
নেহরুর গাফিলতিতেই জম্মু ও কাশ্মীরের একাংশ ১৯৪৮ সালে পাকিস্তানের দখলে গিয়েছিল বলে বলে অভিযোগ করেন শাহ। বিরোধী দল কংগ্রেসের বেঞ্চের দিকে তাকিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আপনারা পাক অধিকৃত কাশ্মীর দিয়ে দিয়েছিলেন, আমরা ফিরিয়ে আনব!’’ পহেলগাঁও গণহত্যার পর আত্মর্জাতিক মঞ্চে পাকিস্তানের পাশে দাঁড়িয়েছিল চিন। অপারেশন সিঁদুর-পর্বে ধারাবাহিক ভাবে ইসলামাবাদকে অস্ত্র ও প্রযুক্তিগত (উপগ্রহ নজরাদারি-সহ) সহায়তা জুগিয়েছে বেজিং। কিন্তু মঙ্গলবার সিঁদুর-বিতর্কে একটি বারের জন্যেও চিনের নাম নেননি মোদী। বিরোধীরা তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ইতিমধ্যেই। বুধবার রাজ্যসভায় তার জবাবে শাহ টেনেছেন, ২০০০-০৬ অর্থবর্ষে কংগ্রেস নেতা-নেত্রীদের পরিচালিত রাজীব গান্ধী ফাউন্ডেশনের চিনা অনুদান নেওয়ার সেই পুরনো অভিযোগ।
যদিও ঘটনাচক্রে, মোদীর জমানায় বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের পুত্রের পরিচালিত থিঙ্ক ট্যাঙ্ক সংস্থার বিরুদ্ধেও চিনা অনুদান নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। জওহরলাল নেহরুর জমানায় সিন্ধু জলবন্টন চুক্তির মাধ্যমে পাকিস্তানকে অন্যায্য সুবিধা পাইয়ে দেওয়া হয়েছিল বলেও অভিযোগ করেন শাহ। তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমরা কখনও পাকিস্তানকে ৮০ শতাংশ জল দেওয়ার বন্দোবন্ত করব না।’’ রাজ্যসভার কংগ্রেস সাংসদ তথা মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী পৃথ্বীরাজ চহ্বাণ পহেলগাঁওয়ের হত্যাকারীদের নিধনের অভিযানের ‘অপারেশন মহাদেব’ নামকরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। শাহ বলেন, ‘‘ভুলে যাবেন না ছত্রপতি শিবাজি তাঁর সেনারা শত্রু নিধনের সময় ‘হর হর মহাদেব’ ধ্বনি দিতেন।’’
গত সোমবার সংসদে ‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে বিতর্কের সূচনার পরেই পহেলগাঁও হত্যাকাণ্ডে জড়িত তিন সন্ত্রাসবাদী, সুলেমান শাহ ওরফে হাসিম মুসা, জিবরান এবং হামজ়া আফগানি শ্রীগরের অদূরে ভারতীয় সেনার প্যারাকমান্ডো বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয়। এই ঘটনা নিছক কাকতালীয় কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীদের একাংশ। শাহ বুধবার বলেন, ‘‘ওই সন্ত্রাসবাদীদের কী আরও কিছু দিন বাঁচিয়ে রাখা উচিত ছিল?’’ এর পরেই তাঁর মন্তব্য, ‘‘পহেলগাঁও হামলায় নিহতদের পরিবার এবং আরও অনেকে চেয়েছিলেন, যেন তিন সন্ত্রাসবাদীর মাথায় গুলি করা হয়। অপারেশন মহাদেবে তাদের সেই পরিণতি হয়েছে।’’