National news

সিএএ-প্রতিবাদীদের নাম ঠিকানা দিয়ে লখনউয়ে হোর্ডিং! হাইকোর্টের ভর্ৎসনার মুখে যোগী সরকার

৫৩ জনের মধ্যে রয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস অফিসার এস আর দারাপুরি, সমাজকর্মী মহম্মদ শোয়েব, কবি দীপক কবীরের মতো বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০২০ ১৪:৪১
Share:

এমনই হোর্ডিং টাঙানো হয়েছে লখনউ শহর জুড়ে। ছবি: টুইটার থেকে

লখনউয়ের রাস্তার মোড়ে মোড়ে বিশাল বিশাল হোর্ডিং। তাতে নাম, ঠিকানা-সহ ৫৩ জনের ছবি। যোগী আদিত্যনাথের প্রশাসনের মতে, এঁরা সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ)-বিরোধী প্রতিবাদে অংশ নিয়েছিলেন। তাই তাঁদের ছবি জনসমক্ষে টাঙানো হয়েছে। কিন্তু এমন ঘটনায় সমালোচনায় সরব সমাজকর্মী থেকে রাজনীতিবিদ সবাই। কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গাঁধী যোগী আদিত্যনাথ সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছেন। মামলা গড়িয়েছে আদালতেও। সরকারকে ভর্ৎসনার পাশাপাশি এই ঘটনাকে ‘অত্যন্ত অন্যায়’ বলে মন্তব্য করেছেন এলাহাবাদ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি গোবিন্দ মাথুর।

Advertisement

গত বৃহস্পতিবার লখনউ শহরের বড় রাস্তার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় চোখে পড়ে প্রচুর হোর্ডিং। প্রায় গোটা শহর ছেয়ে গিয়েছে ওই হোর্ডিংয়ে। ৫৩ জনের মধ্যে রয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস অফিসার এস আর দারাপুরি, সমাজকর্মী মহম্মদ শোয়েব, কবি দীপক কবীরের মতো বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব। রয়েছে কংগ্রেসের স্থানীয় মহিলা নেত্রী সাদাফ জাফরের নাম-ছবিও। উত্তরপ্রদেশ প্রশাসনের একটি সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের নির্দেশেই ওই হোর্ডিংগুলি পুলিশ-প্রশাসনের পক্ষ থেকে টাঙানো হয়েছে।

শুধু হোর্ডিং টাঙানোই নয়, সিএএ বিরোধী প্রতিবাদ-বিক্ষোভে যে সরকারি সম্পত্তির ক্ষতি হয়েছে, সেই টাকা এঁদের থেকে আদায় করা হবে বলে জানিয়েছে উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন। যোগী মন্ত্রিসভার সদস্য মহসিন রাজা বলেছেন, ‘‘সিএএ-বিরোধী প্রতিবাদের নামে এঁরা ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ করেছেন। তাঁরা রাজ্যের মানুষের ক্ষতি করেছেন এবং সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করেছেন। এখন সেই ক্ষতি তাঁদের কাছ থেকে আদায় করা হবে।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: কেরলে করোনায় আক্রান্ত একই পরিবারের পাঁচ জন, দেশে আক্রান্ত বেড়ে ৩৯

দাগী অপরাধীদের ধরতে এবং পুরস্কার ঘোষণা করেত সাধারণত পুলিশ এই রকম পোস্টার সাঁটায়। প্রায় একই কায়দায় প্রকাশ্যে ছবি দিয়ে হোর্ডিং লটকে প্রতিবাদীদের সঙ্গে ফৌজদারি অপরাধীর মতো আচরণ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে সরব অনেকেই। সমাজকর্মী দীপক কবীর বলেন, এটা অত্যন্ত লজ্জাজনক। এর কোনও দরকারই ছিল না। সরকার ভয়ের পরিবেশ তৈরি করছে। হোর্ডিংয়ে যাঁদের ছবি আছে, তাঁরা যে কোনও সময় গণপিটুনির শিকার হতে পারেন। দিল্লি হিংসার পর পরিবেশ মোটেই নিরাপদ নয়। সরকার সবাইকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিচ্ছে। প্রাক্তন আইপিএস অফিসার এস আর দারাপুরির মতে, এটা অসাংবিধানিক। সরকার তাঁদের মানহানি করছে।

যোগী আদিত্যনাথ সরকারকে আক্রমণ করতে ছাড়েননি প্রিয়ঙ্কা গাঁধীও। রবিবার টুইটারে কংগ্রেস নেত্রীর তোপ, ‘‘উত্তরপ্রদেশের বিজেপি সরকার, তাঁর মাথা এবং যে সব অফিসার তাঁদের পথ অনুসরণ করছেন, তাঁরা নিজেদের সংবিধানের ঊর্ধ্বে ভাবছেন। হাইকোর্ট সরকারকেও বলে দিয়েছে, আপনারাও সংবিধানের ঊর্ধ্বে নয়। আপনাদের ভুমিকাও বিচার করে দেখা হবে।’’

আরও পডু়ন: ইয়েস ব্যাঙ্কের প্রতিষ্ঠাতা রাণা কপূর গ্রেফতার, ডেবিট কার্ডে এটিএম থেকে টাকা তোলা যাবে, জানাল ব্যাঙ্ক

বৃহস্পতিবার লখনউ শহর জুড়ে ওই পোস্টার পড়ার পর এলাহাবাদ হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে একটি মামলা দায়ের করে। এলাহাবাদ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি গোবিন্দ মাথুরের বেঞ্চে শুনানি চলছে। আজ রবিবার যোগী সরকারকে তীব্র ভর্ৎসনা করেছেন প্রধান বিচারপতি মাথুর। তিনি বলেন, সিএএ-প্রতিবাদীদের নাম-ঠিকানা দিয়ে হোর্ডিং টাঙানো অত্যন্ত অন্যায়। সশরীরে হাজির আদালতে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয় ডিসিপি এবং মহকুমাশাসকদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন