ঘুষ নেন ইঞ্জিনিয়ার, নালিশ ঠিকাদারদের

এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারের বিরুদ্ধে কাজের বরাত পাইয়ে দেওয়ার নামে লক্ষ লক্ষ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ তুলল জলসম্পদ বিভাগের ঠিকাদার সংস্থা। আজ শিলচরের বিভাগীয় কার্যালয়ে ঘণ্টাখানেক বিক্ষোভ দেখান তাঁরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলচর শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০১৭ ০৩:০৮
Share:

এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারের বিরুদ্ধে কাজের বরাত পাইয়ে দেওয়ার নামে লক্ষ লক্ষ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ তুলল জলসম্পদ বিভাগের ঠিকাদার সংস্থা। আজ শিলচরের বিভাগীয় কার্যালয়ে ঘণ্টাখানেক বিক্ষোভ দেখান তাঁরা।

Advertisement

তবে তাঁদের অভিযোগ যাঁর বিরুদ্ধে, সেই আলতাফ হোসেন লস্কর এখন সেই অফিসে নেই। তিনি গত বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি বদরপুরে বদলি হয়েছেন। বর্তমান এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সুব্রত দাসের বদলির নির্দেশ আসতেই ঠিকাদারদের আন্দোলন রহস্যজনক বলে মনে করছে প্রশাসনের একটি মহল। আলতাফ হোসেন লস্কর বলেন, ‘‘সরকার আমাকে বদরপুরের সঙ্গে অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে শিলচর ডিভিশন দেখার নির্দেশ দিতেই ঠিকাদাররা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। গত এক বছরে গড়ে ওঠা সিন্ডিকেটরাজ ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কায় আন্দোলনে নেমেছেন তাঁরা।’’ তিনি কোনও ধরনের উৎকোচ গ্রহণের অভিযোগ অস্বীকার করেন।

ওয়াটার রিসোর্স কনট্রাক্টর্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আনোয়ার আহমেদ লস্করের অভিযোগ, ‘‘আলতাফ হোসেন লস্কর শিলচরে এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার থাকাকালীন মুখ্যমন্ত্রীর বিশেষ প্রকল্পে ৫টি কাজ, এফএমপি-তে ৩টি এবং নাবার্ডের ২টি কাজের জন্য মঞ্জুরি মেলে। ওই কাজ দেওয়ার অঙ্গীকার করে তিনি বহু ঠিকাদারের কাছ থেকে ৫ থেকে ২০ লক্ষ টাকা উৎকোচ আদায় করেন। শেষে কাজ দেন তাঁর নিকটাত্মীয়দের। কারও কোনও টাকা ফিরিয়েও দেননি।’’ তাঁর বক্তব্য, বিভাগীয় নিয়ম রয়েছে, ঠিকাদারদের রেজিস্ট্রেশন প্রতি বছর নবীকরণ করাতে হয়। ক্লাস ভেদে বিভিন্ন অঙ্কের কাজ দেওয়া হয়। তাঁরা ১৫-২০ হাজার টাকা খরচ করে বছর-বছর নবীকরণ করান। কিন্তু আলতাফ হোসেনের কাছে সে সবের মূল্য ছিল না। তিনি যাঁকে-তাঁকে ডেকে যে কোনও অঙ্কের কাজ দিয়ে দিতেন। এমন অফিসার ফের শিলচরে বদলি হলে তাঁরা কাজে যোগ দিতে দেবেন না বলে জানিয়ে দেন। টাকা ফেরতের জন্যও যে তাদের আন্দোলন চলবে, জানিয়ে দেন তা-ও।

Advertisement

কিন্তু উৎকোচ দেওয়াও কি অপরাধ নয়? অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সঙ্কর্ষণ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘কী করা যাবে, এটাই নিয়মে পরিণত হয়েছে। শুধু জলসম্পদ বিভাগ বলে নয়, অন্যান্য দফতরেও একই ভাবে কাজ আদায় করতে হয়। তবে অন্যদের বেলায় ফারাক হল, তাঁরা টাকা নিয়ে কাজ দেন। আলতাফ হোসেনের মতো প্রতারণা করেন না।’’

বর্তমান এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সুব্রত দাস জানান, ঠিকাদাররা বিভাগের অ্যাডিশনাল চিফ ইঞ্জিনিয়ার গোবিন কলিতাকেও ওই নালিশ জানিয়েছেন। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কী ভাবছে, কী করছে, তা তিনি জানেন না। ‘‘তবে এমন অভিযোগে বিভাগের সুনাম নষ্ট হয়’’— মন্তব্য করেন তিনি।

আলতাফ হোসেন লস্কর বলেন, ‘‘তাঁদের অভিযোগ যে ভিত্তিহীন, অসন্তোষ থেকেই সেই প্রমাণ মেলে। না হলে আমার শিলচর বদলিতে তাঁদের টাকা ফেরত বা কাজ আদায় করে পুষিয়ে নেওয়ার সুযোগ মিলত বলে খুশিই হতেন।’’ তবে সমস্ত ঠিকাদারদের আশ্বাসের সুরে আলতাফ হুসেন জানিয়ে দেন, ‘‘শিলচরে ফিরছি না আর। বিভাগকে সে কথা জানিয়ে দিয়েছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন