New Labour Law

নতুন শ্রম আইনে কি কোপ পড়বে বেতনে? হাতে আসা অঙ্ক কমে যাবে? কী হিসাব দিল কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রক?

নতুন চালু হওয়া শ্রম আইনের কয়েকটি বিধি নিয়ে ইতিমধ্যেই কিছু প্রশ্ন উঠেছে। তারই অন্যতম, টেক-হোম স্যালারি (হাতে পাওয়া বেতনের অংশ) সম্পর্কিত প্রশ্ন।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৬:৩৫
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

নতুন শ্রম আইনে বেসরকারি ক্ষেত্রে কর্মরতদের সঙ্গে সম্পর্কিত অনেক নিয়ম পরিবর্তন করা হয়েছে। নতুন চালু হওয়া কিছু নিয়ম নিয়ে ইতিমধ্যেই কিছু প্রশ্ন উঠেছে। তারই অন্যতম, টেক-হোম স্যালারি (হাতে পাওয়া বেতনের অংশ) সম্পর্কিত প্রশ্ন।

Advertisement

এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রকের তরফে শুক্রবার জানানো হয়েছে, সংশোধিত বেতন কাঠামোর লক্ষ্য হল, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অভিন্নতা এবং স্বচ্ছতা আনা। বেতন হ্রাস করা নয়। প্রভিডেন্ট ফান্ড (পিএফ) ছাড় যদি কেবলমাত্র বর্তমান বিধিবদ্ধ সীমার মধ্যে থাকে তবে নতুন শ্রমবিধিতে কর্মচারীদের টেক-হোম স্যালারির কোনও পরিবর্তন হবে না।

বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী, যেসব কর্মচারীর বেসিক বেতন ১৫ হাজার টাকার মধ্যে, তাদের ইপিএফও–র বিভিন্ন স্কিমে অন্তর্ভুক্ত করা বাধ্যতামূলক। আর যাঁদের বেতন এই সীমা অতিক্রম করে, তাদের ক্ষেত্রে নিয়োগকর্তা চাইলে অন্তর্ভুক্ত না–ও করতে পারেন। এই নিয়মের ফলে বেসরকারি খাতের একটি বড় অংশের কর্মচারী সংগঠিত অবসর সঞ্চয়ের আওতার বাইরে থেকে গিয়েছেন। শ্রম মন্ত্রক জানিয়েছে, যদিও পিএফ ছাড়ের ক্ষেত্রে ১৫ হাজারের সীমা অব্যাহত থাকে তবে হাতে পাওয়া বেতনের অংশ (টেক হোম স্যালারি) কমবে না। বেসিক বেতনের ১৫ হাজারের সীমার উপরে বিষয়টি ‘ঐচ্ছিক’ বলে এক্স পোস্টে জানিয়েছে শ্রম মন্ত্রক।

Advertisement

বেসরকারি কর্মীদের বেতনের পোশাকি নাম ‘কস্ট টু কোম্পানি’ বা সিটিসি। একটি অর্থবর্ষে প্রতি কর্মীর জন্য নিয়োগকারী সংস্থা একটি সুনির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে থাকে। একেই বলা হয় সিটিসি। কর্মীদের মূল বেতন বা বেসিক পে ছাড়াও এর অন্তর্ভুক্ত থাকে বিভিন্ন ভাতা, গ্র্যাচুইটি এবং এমপ্লয়িজ় প্রভিডেন্ট ফান্ড (ইপিএফ)। শ্রম আইনের নতুন নিয়মে সিটিসির হিসাবে বদল আনতে বলেছে কেন্দ্র। মোট সিটিসির ৫০ শতাংশ বাধ্যতামূলক ভাবে মূল বেতন বা বেসিক পে করতে বলা হয়েছে। বর্তমানে কোনও ব্যক্তির বার্ষিক সিটিসি ১২ লক্ষ হলে মাসে এক লাখ টাকা আয় করছেন তিনি।

এত দিন পর্যন্ত অধিকাংশ সংস্থাই মোট সিটিসির ২৫ শতাংশ মূল বেতন বা বেসিক পে হিসাবে ধার্য করে আসছিল। সেই হিসাবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি মূল বেতন হিসাবে পাচ্ছিলেন ২৫ হাজার টাকা। এ ছাড়া ইপিএফ ও গ্র্যাচুইটি বাবদ তিন হাজার এবং ভাতা বাবদ তাঁকে ৭২ হাজার টাকা দিচ্ছিল নিয়োগকারী সংস্থা। কিন্তু নতুন নিয়মে মূল বেতন বাধ্যতামূলক ভাবে সিটিসির ৫০ শতাংশ হওয়ায় ওই ব্যক্তির ক্ষেত্রে সেটা বেড়ে দাঁড়াবে ৫০ হাজার টাকা। এর উপরে পিএফ ও গ্র্যাচুইটি বাবদ ছ’হাজার এবং ভাতা বাবদ তাঁকে আরও ৪৪ হাজার টাকা দেবে নিয়োগকারী সংস্থা। মূল বেতন বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেকেই পড়বেন আয়করের আওতায়। তা ছাড়া বেসিক পে বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই পিএফ বাবদ বেশি টাকা দিতে হবে বলে জল্পনা ছিল। এর জেরে মাসের শুরুতে পাওয়া বেতনের অঙ্ক কমে যেতে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল।

কিন্তু শ্রম মন্ত্রকের যুক্তি, নতুন শ্রমবিধির পরে কর্মচারীর বেতনের অঙ্ক যা-ই হোক, পিএফ-এর বাধ্যতামূলক ছাড় শুধুমাত্র ১৫ হাজার টাকার বেতন ঊর্ধ্বসীমায় করা হয়। তাই কর্মচারী এবং নিয়োগকর্তা উভয়ের পিএফ ছাড় একই থাকবে। প্রসঙ্গত, পাঁচ বছর আগেই চারটি শ্রমবিধি (বেতন সংক্রান্ত বিধি, শিল্পের সম্পর্ক সংক্রান্ত বিধি, সামাজিক সুরক্ষা সংক্রান্ত বিধি এবং পেশাগত নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য ও কর্মপরিবেশ সংক্রান্ত বিধি) পাশ হয়ে গিয়েছিল সংসদে। চলতি সপ্তাহে তা কার্যকরের জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে কেন্দ্র।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement