অমিত শাহ। ফাইল চিত্র।
ভোর পাঁচটা থেকেই লোক আসা শুরু হয়েছে। বেলা দশটা গড়াতে হুলস্থূল। আকবর রোডে তখন ঢোল-বাজি-নাচ। চলছে কেক কাটা।
এআইসিসি দফতরের পাশেই দশ জনপথে পৌঁছে গিয়েছেন রাহুল গাঁধী। তাঁর জন্মদিন ঘিরে তখন ভিড়ে গিজগিজ আকবর রোড। হঠাৎই হুটারের শব্দ। ওই বুঝি বেরোচ্ছেন রাহুল। গোটা ভিড় ধেয়ে গেল গাড়ির দিকে। কিন্তু কোথায় কংগ্রেস সভাপতি? গাড়ির সামনের আসনে তো বিজেপির সভাপতি! অমিত শাহ।
দশ জনপথের সামনেই উন্মত্ত ভিড়ে আটকে গেল অমিতের গাড়ি। তাঁর গাড়ি ঘিরেই চলল নাচ, বাজল ঢোল। মুখে একটু হাসি রেখে উন্মাদনা মাপলেন বিজেপি সভাপতি। আকবর রোডেই থাকেন তিনি। কিন্তু বাড়ি থেকে বেরিয়ে বিজেপি দফতরে যাওয়ার মুখে চাইলে অন্য পথ নিতেই পারতেন। বিলক্ষণ জানতেন, আজ রাহুলের জন্মদিন। প্রধানমন্ত্রীও সক্কাল-সক্কাল টুইটে রাহুলকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তাঁর নিরাপত্তাকর্মীরাও জানতেন, আকবর রোড তখন যানবাহনের জন্য প্রায় স্তব্ধ।
আরও পড়ুন: মেহবুবার হাত ছাড়ল বিজেপি, উপত্যকায় চলবে রাজ্যপালের শাসন
তা হলে কি রাহুলকে ঘিরে উন্মাদনা কতটা, তা চাক্ষুস করতেই সে পথ ধরেছিলেন রাহুলের বিরোধী শিবিরের সভাপতি? কংগ্রেস নেতাদের মনে এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে। এক নেতা তো বলেই ফেললেন, ‘‘এতটা পথ এলেন যখন, শুভেচ্ছাও জানিয়ে যেতে পারতেন। রাহুল তো ভিতরেই ছিলেন। লালকৃষ্ণ আডবাণী তো দশ জনপথে এসেই সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে দেখা করেছিলেন।’’
সভাপতি হওয়ার পরে প্রথম জন্মদিনে রাহুল দলের কর্মী নেতাদের সঙ্গে দশ জনপথে দেখা করেছেন। পরে তুঘলক লেনে নিজের বাড়িতেও কথা বলেন কর্মীদের সঙ্গে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে প্রণব মুখোপাধ্যায়— শুভেচ্ছা জানিয়েছেন রাহুলকে। প্রণব নিজের টুইটারে লেখেন, ‘‘রাষ্ট্রনির্মাণে অতুলনীয় ঐতিহ্য আছে ও ভবিষ্যতে অসাধারণ দায়িত্ব। আমার শুভেচ্ছা ও আশীর্বাদ।’’ রাহুলও তাঁকে ব্যক্তিগত ভাবে জবাব দিয়েছেন, ‘‘ধন্যবাদ প্রণবদা, আপনার শুভেচ্ছার জন্য।’’ পরে টুইটারে সকলের উদ্দেশে রাহুল লিখেছেন, ‘‘দেশবিদেশ থেকে আসা শুভেচ্ছায় আমি মুগ্ধ। আপনাদের আশীর্বাদই আমার শক্তি।’’ তবে রাহুলের জন্মদিনের উন্মাদনার পাশাপাশি দলের বিভিন্ন মোর্চা বিভিন্ন কর্মসূচি নিলেও কংগ্রেস সভাপতি নিজে খুব মাতামাতি করতে চাননি। সংবাদ মাধ্যমের সামনেও আসেননি।
নেতার জন্মদিনে কর্মীরা সমস্বরে স্লোগান তুলেছেন, দেশের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী রাহুল গাঁধীই। এমনকি রাহুলকে পরের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তুলে ধরেছেন সুধীন্দ্র কুলকার্নি, যিনি একসময়ে লালকৃষ্ণ আডবাণীর সহযোগী ছিলেন।