ঠেলার নাম বাবাজি। আর তাই, শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরেকে বোঝাতে মুম্বইয়ে তাঁর বাসভবন ‘মাতুশ্রী’তে যেতে বাধ্য হলেন অমিত শাহ।
চুপসে গিয়েছে ৫৬ ইঞ্চি ছাতি। উধাও আত্মবিশ্বাস। উপনির্বাচনে হার, কর্নাটকের ব্যর্থতার পরে শাহ-মোদীরা বুঝে গিয়েছেন, একার জোরে লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া কঠিন। বিরোধীরা এককাট্টা হচ্ছে, ছন্নছাড়া এনডিএ। শিবসেনা থেকে অকালি কিংবা বিহারে নীতীশ থেকে রামবিলাস সব শরিকই সুর চড়াচ্ছে। ঘর বাঁচাতে তাই এখন শরিকদের দরজায় অমিত শাহ।
উদ্ধবের সঙ্গে বৈঠকের পরে আগামিকাল চণ্ডীগড়ে অকালি-র প্রকাশ সিংহ বাদলের সঙ্গেও দেখা করবেন অমিত। অন্ধ্রে এক দিকে চন্দ্রবাবু নায়ডুর মানভঞ্জনের চেষ্টা হচ্ছে। অন্য দিকে জগন্মোহন রেড্ডিকে পাশে পেতে উদ্যোগী বিজেপি। ওয়াইএসআর কংগ্রেসের ৫ সাংসদদের ইস্তফা দেরি করে মঞ্জুর করেছেন স্পিকার। লোকসভার আগে উপনির্বাচন এড়াতেই ওই পদক্ষেপ। নীতীশের মান ভাঙাতেও খুব দ্রুত এনডিএ-র বৈঠক ডাকছে বিজেপি।
আরও পডুন: ‘ওদের কোনও সুযোগ দিয়ো না বাবা’
গত কালই উদ্ধবের সাক্ষাৎপ্রার্থী হতে চেয়ে দরবার করেছিলেন অতিথি অমিত। অথচ, আজ দলীয় মুখপাত্র সামনা-তে অতিথির ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করেছে শিবসেনা। সম্পর্ক রক্ষায় অমিত শাহ-নরেন্দ্র মোদীর ব্যর্থতাকে তুলে ধরে সামনা-তে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, একের পর এক পরাজয়ের পরে বাস্তব বুঝেই কি এখন শরিকদের প্রয়োজন পড়েছে। জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ভবিষ্যতে ‘একলা চলো’ নীতি নেবে দল।
এর পরেও আজ মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীশকে নিয়ে ‘মাতুশ্রী’তে পৌঁছন অমিত। বৈঠকের আগে বিজেপি সভাপতি দাবি করেন, ‘‘২০১৯ কেন, ২০২৪-এও বিজেপি-শিবসেনা একসঙ্গে লড়বে।’’ শিবসেনার একাংশ একা চলার পক্ষে হলেও, বিধায়ক ও সাংসদের বড় অংশ জোটপন্থী। কারণ, মহারাষ্ট্রে কুড়ি শতাংশের কাছাকাছি ভোট পাওয়া শিবসেনা লোকসভা ও বিধানসভার ভোটে অস্বস্তিতে পড়বে বলেই তাঁদের ধারণা। তাই জোট রক্ষার প্রশ্নে আশাবাদী অমিত।
তবু দরকষাকষির রাস্তা থেকে সরে আসতে রাজি নন উদ্ধব। তাই স্বভাববিরুদ্ধ হলেও কার্যত মাথা নুইয়েই শরিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে হচ্ছে অমিতকে। বিজেপির দাদাগিরি-র বিরুদ্ধে সুর চড়াচ্ছেন শরিকেরা। ফলে ক্ষমতা ধরে রাখতে এখন ঝুঁকতে বাধ্য হচ্ছে বিজেপি।