Bihar

Youth Death: দাদরির আকলাখ কাণ্ডের ছায়া বিহারে, গোরক্ষকদের হাতে ‘খুন’ যুবক

তাঁদের বক্তব্য, নীতীশ মুখ্যমন্ত্রী হলেও শাসক জোটে তাঁর দল সংখ্যালঘু। রাজ্য প্রশাসনে বিজেপিই কার্যত নিয়ন্ত্রক। এই অবস্থায় নিজের দলের কর্মীকেও গোরক্ষকদের থেকে ‘রক্ষা’ করতে পারছেন না নীতীশ। ঘটনাটি পুলিশের মাধ্যমে ‘চাপা’ দিতে চাইছেন বলে সরব বিরোধীরা।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৮:১৯
Share:

মহম্মদ খলিল আলম।

হাত জড়ো করে এক যুবক বসে রয়েছেন মাটিতে। চোখে মুখে আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট। তাঁর দিকে ধেয়ে আসছে গালিগালাজ আর প্রশ্নবাণ। ‘খাসি, মুরগি থাকতে গোমাংস কেন খেয়েছিস? শুধু নিজে খেয়েছিস নাকি বাচ্চাদেরও খাইয়েছিস? ধর্মগ্রন্থে গোমাংস খাওয়ার কথা বলা হয়েছে নাকি’— ইত্যাদি। আতঙ্কিত যুবক কান মলে বার বার একই উত্তর দিচ্ছেন, আর খাব না কোনও দিন।

Advertisement

সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া এই ভিডিয়ো আজ দিনভর চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে দেশ জুড়ে। পুলিশ জানিয়েছে, ওই যুবকের নাম মহম্মদ খলিল আলম। তিনি বিহারের সমস্তিপুর জেলার বাসিন্দা। রাজ্যের রাজনৈতিক সূত্রের খবর, তিনি বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের দল জেডিইউ-এর সক্রিয় কর্মী। গত শুক্রবার বুড়ি গন্ডক নদীর তীরবর্তী এলাকা থেকে তাঁর আধপোড়া দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের একাংশের দাবি, যুবককে পিটিয়ে খুন করে মাটি চাপা দিয়েছে স্বঘোষিত গো-রক্ষকেরা। অন্য এক দলের দাবি, পিটিয়ে খুনের পরে যুবকের দেহে পেট্রল ঢেলে প্রথমে পুড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। পরে আধপোড়া দেহে নুন ঢেলে (যাতে দ্রুত পচন ধরে) তা মাটি চাপা দেওয়া হয়।

আনন্দবাজারের তরফে ওই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করা হয়নি। তবে ভিডিয়োটি এবং স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত এই সংক্রান্ত খবরটি দলীয় টুইটার হ্যান্ডলে পোস্ট করেছেন বিহারের প্রধান বিরোধী দল আরজেডি প্রধান তেজস্বী যাদব। শাসক জোটের কর্মীকে ‘খুনে’র অভিযোগ নিয়ে সরব তেজস্বী এই ঘটনায় নীতীশ কুমার সরকারকেই দায়ী করে তোপ দেগেছেন। টুইটে তেজস্বী লিখেছেন, ‘বিহারে বর্তমান এনডিএ সরকারের আমলে আইন-শৃঙ্খলার নামগন্ধ নেই। জেডিইউ নেতা ওই মুসলিম যুবককে পিটিয়ে খুন করে, পুড়িয়ে, তার পরে তাঁর দেহ পুঁতে দেওয়া হয়ছে। এ সব কেন হচ্ছে নীতীশ কুমার জবাব দিন।’

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে নিখোঁজ ছিলেন খলিল। বাড়ির লোকজন থানায় জানান। পরিবারের অভিযোগ, সে দিন থেকেই খলিলকে আটকে রাখা হয়েছে বলে বাড়িতে একাধিক ফোন আসে। তাতে দাবি করা হয়, ৫ লক্ষ টাকা ধার নিয়ে তা শোধ করেননি খলিল। দ্রুত ফেরত না দিলে খলিলের কিডনি কেটে বিক্রি করার হুমকিও দেওয়া হয়। তিন দিন পরে, গত শুক্রবার, বুড়ি গন্ডক নদীর চর থেকে উদ্ধার হয় খলিলের আধপোড়া, পচা দেহ। গত কাল স্থানীয় পুলিশ কিছু ভিডিয়ো ক্লিপিং হাতে পায়। সেগুলিতে খলিলকে গরু পাচারকারী ঠাউরে হেনস্থা করা হয়েছে। পুলিশের অবশ্য দাবি, এটি খুনের ঘটনা। তদন্তের নজর ঘোরাতে তাতে সাম্প্রদায়িক এবং রাজনৈতিক রং লাগানোর চেষ্টা চলছে।

বিরোধী জোটের নেতারা তা মানতে নারাজ। তাঁদের বক্তব্য, নীতীশ মুখ্যমন্ত্রী হলেও শাসক জোটে তাঁর দল সংখ্যালঘু। রাজ্য প্রশাসনে বিজেপিই কার্যত নিয়ন্ত্রক। এই অবস্থায় নিজের দলের কর্মীকেও গোরক্ষকদের থেকে ‘রক্ষা’ করতে পারছেন না নীতীশ। ঘটনাটি পুলিশের মাধ্যমে ‘চাপা’ দিতে চাইছেন বলে সরব বিরোধীরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement