Crime

প্রসাদ খাইয়ে দু’বছরে খুন ১০ জনকে, অন্ধ্রে নিরাপত্তারক্ষীর ‘কীর্তি’-তে তাজ্জব পুলিশ

পশ্চিম গোদাবরী জেলার বাসিন্দা অভিযুক্ত ওই ব্যক্তিকে ভি সিমহাদ্রি বলে শনাক্ত করা গিয়েছে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

হায়দরাবাদ শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০১৯ ২০:৩৮
Share:

বিষ মাখানো প্রসাদ খাইয়ে খুনের অভিযোগ। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

কেরলে গৃহবধূর হাতে পরিবারের ৬ সদস্যের খুনের তদন্ত শেষ হয়নি এখনও। তার মধ্যেই ফের এক চাঞ্চল্যকর খুনের ঘটনা সামনে এল। এ বার অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে। সেখানে প্রসাদে সায়ানাইড মিশিয়ে গত দু’বছরে ১০ জনকে খুন করার অভিযোগ উঠল এক নিরাপত্তারক্ষীর বিরুদ্ধে।

Advertisement

পশ্চিম গোদাবরী জেলার বাসিন্দা অভিযুক্ত ওই ব্যক্তিকে ভি সিমহাদ্রি বলে শনাক্ত করা গিয়েছে। ইলুরুর একটি বহুতল আবাসনে নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করতেন তিনি। ২০১৮-র জানুয়ারি থেকে এখনও পর্যন্ত তিনি মোট ১০ জনকে খুন করেছেন বলে দাবি পুলিশের। অক্টোবর মাসে তিনি শেষ খুনটি করেছেন বলে জানা গিয়েছে, যেখানে ব্যাঙ্কে টাকা ও সোনা মজুত রাখতে বেরিয়ে আর বাড়ি ফেরেননি এক ব্যক্তি। কয়েক ঘণ্টা পর তাঁর দেহ পাওয়া গেলেও, বাড়ি থেকে নিয়ে বেরনো টাকা ও গয়না উদ্ধার হয়নি।

একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে স্থানীয় পুলিশ অফিসার নভদীপ সিংহ জানিয়েছেন, মৃত ব্যক্তির শরীরে কোনও আঘাতের চিহ্ন ছিল না। ময়নাতদন্তে সায়ানাইডের বিষক্রিয়াও ধরা পড়েনি। তাই স্ট্রোক বা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই তাঁর মৃত্যু হয়েছিল বলে প্রথমে সন্দেহ জাগে। কিন্তু ফোনের কল রেকর্ড দেখতে গিয়ে সিমহাদ্রির সঙ্গে তাঁর যোগাযোগের বিষয়টি সামনে আসে। জানা যায়, সৌভাগ্য ফেরানোর ‘রাইস পুলিং কয়েন’-এর বিনিময়ে তাঁর কাছ থেকে দেড় থেকে দু’লক্ষ টাকা আদায় করার চেষ্টা করছিলেন সিমহাদ্রি।

Advertisement

আরও পড়ুন: ‘মায়ের কিছু হলে দায়ী থাকবে সরকার’, হুঁশিয়ারি মেহবুবা মুফতির কন্যার

আরও পড়ুন: লুঠ করল সব, তার পর সিমকার্ড আর কিছু টাকা ফেরতও দিয়ে গেল ‘মানবিক’ লুটেরা

এর পরেই সিমহাদ্রিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠানো হয়। ফোন পরীক্ষা করে ২২০টি নম্বরের মধ্যে ১০টি এমন নম্বর সামনে আসে, সাম্প্রতিক কালে রহস্যজনক ভাবে যাঁদের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে ইলুরুর চারটি খুনের ঘটনায় অভিযোগ দায়ের হলেও রাজামুন্দ্রির ছ’টি খুনের ঘটনায় কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। তা নিয়ে চেপে ধরতেই সিমহাদ্রি অপরাধ কবুল করেন বলে দাবি পুলিশের। বলা হয়, জেরায় সিমহাদ্রি জানান, নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে কাজ করলেও, কখনও সম্পত্তি কেনাবেচার দালাল, কখনও আবার অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী বলে নিজের পরিচয় দিতেন তিনি। সৌভাগ্যের কয়েন বেচে মানুষের কাছ থেকে মোটা টাকা বা গয়না দাবি করতেন। কয়েন নিতে এলে প্রসাদে সায়ানাইড মিশিয়ে খেতে দিতেন, যা খাওয়ার পরই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তেন নিরীহ মানুষজন।

দিদা এবং শ্যালিকা-সহ নিজের নিকটাত্মীয়দের মধ্য থেকে কয়েক জনকেও সিমহাদ্রি এ ভাবেই ফাঁদে ফেলেছিলেন বলে অভিযোগ পুলিশের। তাদের দাবি, বিজয়ওয়াড়ায় এক বন্ধুর কাছ থেকে তিনি সায়ানাইড জোগাড় করতেন। এখনও পর্যন্ত তাঁর কাছ থেকে ১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা এবং ২৬টি সোনার কয়েন উদ্ধার করা গিয়েছে। গত দু’বছরে রহস্যজনক ভাবে যে ১০ জনের মৃত্যু হয়, তাঁদের মধ্যে তিন-চার জনকে সমাধিস্থ করা হয়েছিল। সায়ানাইড খাইয়ে সিমহাদ্রিই তাদের খুন করেছিলেন কি না দেখতে, ওই দেহগুলির ফরেনসিক পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন