ভুবনেশ্বরে মৃত্যু নবম শ্রেণির এক পড়ুয়ার। —প্রতীকী চিত্র।
পড়ুয়ার রহস্যমৃত্যু ঘিরে ফের উত্তেজনা ছ়ড়াল ওড়িশায়। নবম শ্রেণির ওই পড়ুয়াকে খুন করা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পরিবারের। তার দেহ নিয়ে শনিবার ওড়িশার কেওনঝ়়ড়ে জেলাশাসকের দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখান পরিবারের সদস্যেরা।
১৪ বছর বয়সি ওই আদিবাসী পড়ুয়া ভুবনেশ্বরের কলিঙ্গ ইনস্টিটিউট অফ সোশ্যাল সায়েন্সের ছাত্র ছিল। বস্তুত, এটি হল আদিবাসী পড়ুয়াদের জন্য এক দাতব্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। যেখানে আবাসিক ব্যবস্থাও রয়েছে। এটি ভুবনেশ্বরের কলিঙ্গ শিল্পপ্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কেআইআইটি)-এরই একটি শাখা প্রতিষ্ঠান। ভুবনেশ্বরের এই বিশ্ববিদ্যালয় সাম্প্রতিক সময়ে পড়ুয়াদের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বিতর্কে জড়িয়েছিল। চলতি বছরে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন পড়ুয়ার মৃত্যু ঘিরে বিতর্ক দানা বাঁধে। এ বার সেই বিশ্ববিদ্যালয়েরই শাখা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এক নাবালকের মৃত্যু ঘিরে বিতর্ক বাঁধল।
ওই পড়ুয়ার বাড়ি ওড়িশার কেওনঝড়ে। ভুবনেশ্বরের ওই দাতব্য স্কুলের হস্টেলে থেকেই পড়াশোনা করত সে। পরিবারের বক্তব্য, শুক্রবার স্কুল কর্তৃপক্ষ তাঁদের বাড়িতে ফোন করেন। কর্তৃপক্ষ জানান, তাঁদের সন্তান অসুস্থ হয়ে পড়েছে। দ্রুত ভুবনেশ্বরে পৌঁছোতে বলা হয় তাঁদের। মৃত পড়ুয়ার বাবা বলেন, “আমার ছেলেকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। যখন আমি হাসপাতালে পৌঁছোই, এক চিকিৎসক জানান আমার ছেলে মারা গিয়েছে। তাঁরা অ্যাম্বুল্যান্সে করে ছেলের দেহ গ্রামে পাঠিয়ে দিয়েছে। আমি ছেলের শরীরে কিছু দাগ দেখতে পেয়েছি। আমাকে কোনও মেডিক্যাল রিপোর্ট দেওয়া হয়নি। আমি জানি না আমার ছেলে কী ভাবে মারা গিয়েছে।”
পরিবারের সন্দেহ, তাঁদের সন্তানকে খুন করে দেওয়া হয়েছে। স্কুল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে সন্দেহ পরিবারের। এই অভিযোগে শনিবার কেওনঝড়ে জেলাশাসকেদর দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখান পরিবারের সদস্যেরা। ঘটনার যথাযথ তদন্তের দাবি জানান তাঁরা। কেওনঝড় টাউন থানায় লিখিত অভিযোগও দায়ের করেন নিহতের বাবা। পরে পুলিশ এফআইআর রুজু করলে বিক্ষোভকারীরা সরে যান জেলাশাসকের দফতরের সামনে থেকে। জানা যাচ্ছে, কেওনঝড় টাউন থানায় একটি জ়িরো এফআইআর (অন্যত্র স্থানান্তরযোগ্য এফআইআর) রুজু হয়েছে। পরে সেই এফআইআরটি ভুবনেশ্বর ইনফোসিটি থানায় পাঠানো হয়।
এর আগে দুই নেপালি পড়ুয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরেও বিতর্কে জড়িয়েছিল ভুবনেশ্বরের কেআইআইটি। পদক্ষেপ করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)-ও। কেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক বা আইনি পদক্ষেপ করা হবে না, কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তার ব্যাখ্যা চেয়েছিল ইউজিসি। দুই পড়ুয়ার মৃত্যুরহস্য খতিয়ে দেখতে একটি অনুসন্ধানী দলও গঠন করেছিল ইউজিসি। গত মাসেও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেল থেকে এক পড়ুয়ার দেহ উদ্ধার হয়েছিল।