মেরি কমের পর আনসু জানসেমপা। বমডিলার এভারেস্ট-জয়ী পর্বতারোহী পৌঁছলেন বলিউডে।
চার বছরে অনেক শৃঙ্গ জিতেছেন আনসু। কিন্তু লড়াইয়ের ময়দান এখনই ছাড়তে নারাজ দুই সন্তানের জননী। ফের তিনি যাচ্ছেন এভারেস্টে। এ বার পর পর দু’বার জিততে চান বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গটিকে। মেরি কমের মতোই লড়াকু সেই মহিলাকে তাই কুর্নিশ জানাতে চায় মায়ানগরী মুম্বই। আরব সাগর তীরে সিনেমা তৈরি হচ্ছে তাঁর জীবনের কাহিনি নিয়েও।
২০১১ সালে প্রথম এভারেস্ট অভিযানে যান ৩৫ বছরের আনসু। দলের সকলে এক বার শীর্ষে আরোহণের পরে ফিরে এলেও, তিনি ফের রওনা দেন ওই শৃঙ্গের দিকে। ১০ দিনের মধ্যে দু’বার এভারেস্ট জয় করে ভারতের প্রথম মহিলা ও বিশ্বে প্রথম মা হিসেবে নজির গড়েন। ২০১৩ সালে উত্তর-পূর্ব এভারেস্ট অভিযানের সহ-দলনেত্রী হন। ফের পান সাফল্য। ভারতে একমাত্র মহিলা হিসেবে তিন বার এভারেস্ট জয়ের রেকর্ড তাঁরই দখলে। কিন্তু, ২০১৪ সালের এভারেস্ট অভিযান ব্যর্থ হয়। মৃত্যু হয় কয়েক জন শেরপার। নিখোঁজ হন বাংলার মেয়ে ছন্দা গায়েন। সে বার এভারেস্ট অধরা থাকলেও আনসু খালি হাতে ফেরেননি। তিন দিনের মধ্যে নেপাল হিমালয়ের লোবুচে (৬১১৯ মিটার), পোকালডে (৫৮৯৬ মিটার) ও আইল্যান্ড (৬১৮৯ মিটার) শৃঙ্গ জিতে ফেরেন। এখনও পর্যন্ত আনসু ৯টি শৃঙ্গে ভারতের পতাকা উড়িয়েছেন। এভারেস্ট অভিযানের জন্য বাড়ি-জমি বিক্রি করেছেন আনসু। একাধিক বার অবসাদের শিকার হয়েছেন। কিন্তু পর্বতারোহী স্বামী সেরিং ওয়াংগে, দুই মেয়ে পাসাং ও তেনজিং-এর উত্সাহে ফের লড়াইয়ে ফিরেছেন।
গত কাল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তথা স্থানীয় সাংসদ কিরেণ রিজিজু আনসুর এভারেস্ট অভিযানের উদ্বোধন করেন। তাঁর হাতে তুলে দেন জাতীয় পতাকা। আগামী কাল নেপাল পৌঁছবেন আনসু। শনিবার শুরু হবে অভিযান। তার আগে আনন্দবাজারকে তিনি জানান— রেকর্ড তৈরি নয়, হিমালয়ের অদম্য হাতছানিতেই ফের বিপদের পথে এগোচ্ছেন। নবম ও চতুর্থ শ্রেণির দুই মেয়ের দায়িত্ব যাঁর কাঁধে, তাঁর কি এমন কাজ করা উচিত? আনসু বলেন, ‘‘পাহাড়ে ওঠার সময় অনেক বার বিপদের সামনে পড়ে মেয়েদের কথা ভেবে কান্না পেয়েছে। কিন্তু, আমার স্বামী অভয় দিয়েছেন।’’ কী বলছেন আনসুর স্বামী সেরিং? তিনি বলেন, ‘‘ছন্দাদের ঘটনার পর ভয় বেড়েছে। কিন্তু, আনসুকে বেঁধে রেখে লাভ নেই।’’