শুতে যাওয়ার আগে পায়চারি করছিলেন গত কাল রাতে। তার আগে খেয়েছেন ৫টা রুটি, এক বাটি অড়হর ডাল, বাঁধাকপির তরকারি। রাঁচীর বিরসা মুন্ডা জেলের এক কর্তা জানালেন, ইচ্ছে করেই ‘হাল্কা’ খাবার দেওয়া হয়েছে লালুপ্রসাদ যাদবকে। ২০১৪ সালে হৃদ্যন্ত্রের অস্ত্রোপচার হয়েছিল তাঁর। ফলে এমনিতেও তাঁর খাওয়া-দাওয়া নিয়ে কিছু কড়াকড়ি আছে।
আরজেডি তাই জানাচ্ছে, দলের নেতাকে বাড়ির খাবার পাঠানোর কথা ভাবছে তারা। গত রাতে পায়চারি করলেও আজ সকাল থেকে লালুর চোখেমুখে চিন্তার সে রকম ছাপ ছিল না বলেই দাবি জেল কর্তৃপক্ষের। জেলে টিভি এবং খবরের কাগজ পেয়েছেন লালু। আজ সকালে অনেক ক্ষণ ধরে বেশ কয়েকটা কাগজ পড়েছেন তিনি।
পশুখাদ্য কেলেঙ্কারির দেওঘর ট্রেজারি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে জেলে গিয়ে গত কাল নেলসন ম্যান্ডেলা, মার্টিন লুথার কিংগ, বি আর অম্বেডকরের সঙ্গে নিজের তুলনা টেনেছিলেন লালু। তাঁর জেলযাত্রার জন্য টুইটারে বিজেপিকে দায়ী করেছিল আরজেডি। আজ পাল্টা খোঁচাটা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রামবিলাস পাসোয়ান। লোক জনশক্তি পার্টির প্রধান পাসোয়ান আজ বলেন, ‘‘কোনও মহান কাজের জন্য নয়, দুর্নীতি করে জেলে গিয়েছেন লালু। নিজের সঙ্গে অম্বেডকরের তুলনা করে লালু তাঁকে অপমান করেছেন।’’ পাসোয়ানের টুইট— ‘লালুজি, নিজের অপরাধ ঢাকতে বিজেপিকে দোষ দেবেন না। অম্বেডকর, মার্টিন লুথার কিংগ, ম্যান্ডেলার সঙ্গে নিজেকে তুলনা করবেন না। তাঁরা দেশের জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন।’
আজ দুপুর ১২টা নাগাদ শ’খানেক সমর্থক নিয়ে বিরসা মুন্ডা জেলে লালুর সঙ্গে দেখা করতে যান আরজেডি নেতা রঘুবংশপ্রসাদ সিংহ। কিন্তু আজ কারও সঙ্গেই লালুকে দেখা করতে দেননি জেল কর্তৃপক্ষ। তার প্রতিবাদে জেলের বাইরেই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন রঘুবংশপ্রসাদ এবং তাঁর দলবল। স্লোগান ওঠে, ‘‘লালুকে এই ভাবে দমিয়ে রাখা যাবে না।’’ রঘুবংশপ্রসাদ বলেন, ‘‘গরিবদের জন্য কাজ করছেন বলেই লালুকে বিজেপি জেলে পুরেছে।’’ একসুর আরজেডি সমর্থকেরাও। তাঁদের কারও কারও বক্তব্য, সত্যের জন্য রাজা হরিশ্চন্দ্রকে যে রকম কষ্ট সহ্য করতে হয়েছিল, লালুকেও সত্যের জন্য একই রকম কষ্ট সহ্য করতে হচ্ছে। কিন্তু লালু আরও বেশি শক্তি নিয়ে ফিরে আসবেন।