চাহিদার চেয়ে শিল্পী বেশি দিল্লির পুজোয়

সময় বদলের সঙ্গে সঙ্গে দিল্লির পুজোর পুরনো ছবি কিছুটা বদলে মূলত কলকাতার শিল্পীদের বার্ষিক মণ্ডপ তৈরি হয়েছে। এ বছরেও যার রমরমা।

Advertisement

অগ্নি রায়

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৩:৩৪
Share:

সাদা পর্দা টাঙিয়ে রাত জুড়ে কোথাও ‘হারানো সুর’, কোথাও বা ‘সপ্তপদী’। এক মণ্ডপে ছবি শেষ হতেই রিল বগলদাবা করে সাইকেলে অন্য মণ্ডপে যেতেন সে যুগের দিল্লির সিনেমা-জকিরা! মাঝে যাত্রা বা স্থানীয়দের নাটক।

Advertisement

সময় বদলের সঙ্গে সঙ্গে দিল্লির পুজোর পুরনো ছবি কিছুটা বদলে মূলত কলকাতার শিল্পীদের বার্ষিক মণ্ডপ তৈরি হয়েছে। এ বছরেও যার রমরমা। অবস্থা এমনই যে, চাহিদার চেয়েও শিল্পীদের জোগান বেশি হয়ে যাচ্ছে কিছু ক্ষেত্রে। চিত্তরঞ্জন পার্কের নবপল্লি পুজো সমিতি এ বার পঁচিশ বছরে। তৃতীয়াতেই গান গেয়ে যে পুজোর উদ্বোধন করেন অজয় চক্রবর্তী। শ্রীকান্ত আচার্য, শ্রাবণী সেন, অঞ্জন দত্ত— প্রত্যেক দিন এক জনের একক অনুষ্ঠান। আসছেন বাংলাদেশের শিল্পী শ্যামা রেহমানও।

বড় সংখ্যায় না হলেও কলকাতা বা মুম্বইয়ের এক জন বা দু’জন নামজাদা শিল্পীর দিল্লি পুজোয় আসার রেওয়াজ শুরু হয় সত্তরের দশক থেকে। হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, শ্যামল মিত্র, মান্না দে এসে গান গেয়েছেন। গত দেড় দশকে কলকাতার শিল্পীদের দিল্লির পুজোয় নিয়ে আসার কাজ করছেন অঞ্জন কাঞ্জিলাল। পেশায় নাট্যপরিচালক ও অভিনেতা। এক সময়ে চুটিয়ে নাটক করেছেন পুজোয়। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এখন শিল্পীদের চাহিদা থেকে জোগান বেশি। এখানে শ’চারেক পুজোর মধ্যে খুব বেশি হলে ২০০টিতে বড় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। গড়পড়তা ছোট-বড় শ’চারেক শিল্পী আসতে চান বা মিডলম্যানরা নিয়ে আসেন। অথচ রাতভর অনুষ্ঠান চালানোয় পুলিশি নিষেধাজ্ঞা রয়েছে বলে অনুষ্ঠানের সময়ও কমেছে আগের তুলনায়। ফলে কলকাতার শিল্পীরা পর্যাপ্ত অনুষ্ঠান করার সুযোগ পাচ্ছেন না। এত দূর এসে অন্তত পাঁচটি অনুষ্ঠান না করলে পড়তায় পোষায় না।’’

Advertisement

স্থানীয় শিল্পীদের অনুষ্ঠান করার ট্র্যাডিশনও দিল্লি ধরে রেখেছে। নবপল্লির পুজোর কর্ণধার উৎপল ঘোষ জানাচ্ছেন, ‘‘প্রবাসী বাঙালিদের নাচ, গান, আবৃত্তি প্রতিযোগিতা করানোর দু’টি উপযোগিতা। এক, তাঁরাও এতে উৎসাহ পান। কলকাতা থেকে আসা শিল্পীদের সঙ্গে একই মঞ্চে অনুষ্ঠান করা। দুই, এতে পাড়ার সব মানুষের সঙ্গে স্থানীয় পুজোর সংযোগও তৈরি হয়। পরিবারের কারও অনুষ্ঠান থাকলে অনেকে আসেন। এক বার প্রবাসী বাঙালিদের সম্পর্কটা ঝালিয়েও নেওয়া যায়।’’

পুজো কমিটিগুলির কর্তাদের একাংশের বক্তব্য, বয়স্ক প্রবাসীদের মধ্যে শিকড়ের টান বাড়ার প্রতিফলন কিন্তু দেখা যাচ্ছে হালের পুজো অনুষ্ঠানে। অল্পবয়সিদের মধ্যে টিভিতে মুখ দেখানো ‘সারেগামা’-খ্যাত গায়ক গায়িকাদের নিয়ে উন্মাদনা আছে। পাশাপাশি আছে চিৎপুরের যাত্রা, বাউল গান এবং কীর্তনও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন