বিজেপি-র অস্ত্রে বিজেপিকেই কাত করতে গিয়ে বিতর্কের মুখে পড়েছেন অসমের কংগ্রেস মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ। ‘ধর্মীয় সংখ্যালঘু হওয়ার কারণে প্রতিবেশী রাষ্ট্র থেকে বিতাড়িতদের আশ্রয় দেওয়ার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট রূপরেখা তৈরি করুক ভারত সরকার’---গত কাল রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই মর্মে একটি প্রস্তাব গ্রহণ করেছে গগৈ সরকার। ‘শরণার্থী’ ও ‘অনুপ্রবেশকারী’---বিজেপির কাছে এই দুইয়ের সংজ্ঞা আলাদা। গগৈ প্রায় সেই লাইন নেওয়ায় সরব হয়েছে আসু, অগপ। তাদের অভিযোগ, অসমের সর্বনাশ করে ভোট ব্যাঙ্ক বাড়ানোর জন্য এ হল কংগ্রেসের রাজনৈতিক চাল।
গত লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি নেতারা, এমনকী খোদ নরেন্দ্র মোদী বার বারই প্রতিবেশী রাষ্ট্র থেকে বিতাড়িতদের নিয়ে সরব হয়েছেন। শরণার্থীদের স্বাগত জানানোর পাশাপাশি অনুপ্রবেশকারীদের সম্পর্কে কঠোর মনোভাব দেখিয়েছেন। তথাকথিত ‘সন্দেহভাজন ভোটার’ নিয়ে বিস্ময় প্রকাশও করেছেন তাঁরা। দিল্লির মসনদে এখন মোদী।
অসমেও বিজেপি-র কাছে কোণঠাসা কংগ্রেস। এই পরিস্থিতিতে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য বিজেপি-র হাতিয়ারকেই ব্যবহার করতে চাইছেন গগৈ। অনুপ্রবেশ বন্ধ করা নিয়ে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি। এর পর গত কাল সন্ধ্যায় রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে পড়শি দেশ থেকে বিতাড়িত ব্যক্তিদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট রূপরেখা তৈরির প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। কেন্দ্রের কাছে এই প্রস্তাব পাঠাবে অসম সরকার।
২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগেও গগৈ সরকার বিজেপিকে কোণঠাসা করতে একই ভাবে ‘আশ্রিত’দের জন্য নাগরিকত্বের দাবি তুলেছিল। আসুর অভিযোগ, তার জেরেই সে বার বরাক উপত্যকায় ১৫টির মধ্যে ১৩টি আসন জিতে নেয় কংগ্রেস। তবে মনমোহন সিংহ সরকার বিতর্ক এড়াতে সেই বিষয় নিয়ে কোনও পদক্ষেপ করেনি। কিন্তু মোদী সরকারের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি ভিন্ন। তারা এই বিষয়টিকেই হাতিয়ার করে অসম-জুড়ে প্রচার চালিয়েছে। তাই গগৈ আগ বাড়িয়ে ওই তাস খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আসু ও অগপ-র মতে, স্রেফ ভোট ব্যাঙ্কের রাজনীতি করতে গিয়ে রাজ্যের সর্বনাশ করছেন গগৈ।