‘বাসভবন’ বাঁচাতে ওডিশায় নবকুমার

আধুনিক অসমীয়া সাহিত্যের ‘জনক’ হিসেবে পরিচিত লক্ষ্মীনাথ বেজবরুয়া একটি সংস্থায় কাজের সূত্রে সম্বলপুরের ম্যান্ডেলা চকের কাছে ওই বাড়িটিতে ১৫ বছর বাস করেছিলেন।

Advertisement

রাজীবাক্ষ রক্ষিত

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:০৯
Share:

লক্ষ্মীনাথ বেজবরুয়ার ‘বাসভবন’ বাঁচাতে ওড়িশায় যাচ্ছেন অসমের সংস্কৃতিমন্ত্রী নবকুমার দোলে ও মুখ্যমন্ত্রীর প্রেস সচিব হৃষিকেশ গোস্বামী। একটি সেতু-প্রকল্পে সম্বলপুরের ওই বাড়ি ভাঙা রুখতেই ওড়িশা সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন দোলে।

Advertisement

আধুনিক অসমীয়া সাহিত্যের ‘জনক’ হিসেবে পরিচিত লক্ষ্মীনাথ বেজবরুয়া একটি সংস্থায় কাজের সূত্রে সম্বলপুরের ম্যান্ডেলা চকের কাছে ওই বাড়িটিতে ১৫ বছর বাস করেছিলেন। সেখানে বসেই লিখেছিলেন অসমিয়া ভাষার বিখ্যাত কিছু লেখা। ১৯৩৮-তে ডিব্রুগড়ে বেজবরুয়ার মৃত্যু হয়। ওই দিনটি অসমে ‘সাহিত্য দিবস’ হিসেবে পালিত হয়। বেজবরুয়া অসমিয়া সাহিত্যে ‘সাহিত্যরথী’ হিসেবে পরিচিত। তাঁর স্ত্রী প্রজ্ঞাসুন্দরী দেবী ছিলেন মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের তৃতীয় পুত্র, হেমেন ঠাকুরের কন্যা। তাঁর লেখা বাংলার প্রথম রান্নার বই ‘আমিষ ও নিরামিষ আহার’। বেজবরুয়ার স্মৃতিবিজড়িত বাড়িটি সংরক্ষণের জন্য দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা চালাচ্ছেন ওড়িশার সাহিত্যিক দীপক পণ্ডা। তিনি জানান, বেজবরুয়ার কন্যা অরুণার কাছ থেকে এক ব্যবসায়ী বাড়িটি কিনে নেন। কিন্তু ওড়িশা সরকার ১৯৭৭ সালে জানায়, ওই জমি সরকারের কাছ থেকে লিজ নেওয়া। শুরু হয় দীর্ঘ আইনি যুদ্ধ। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বাড়িটি ‘পোড়ো বাড়ি’ হয়ে ওঠে।

২০১১-তে অসম সাহিত্য সভার একটি প্রতিনিধি দল বাড়িটি পরিদর্শন করে রাজ্য সরকার ও ওড়িশা সরকারের কাছে সেটি সংরক্ষণের জন্য আর্জি জানায়। ওড়িশা সরকার তাতে রাজিও হয়। প্রাথমিক ভাবে সিদ্ধান্ত হয়, সেখানে ভাষা গবেষণা কেন্দ্র গড়া হবে। নাম হবে বেজবরুয়া স্মৃতি ভবন। কিন্তু পরে পুরো বিষয়টিই বিশ বাঁও জলে চলে যায়।

Advertisement

সম্প্রতি স্থানীয় প্রশাসন সিদ্ধান্ত নেয়, ২২ বিঘা জমি-সহ ওই বাড়িটি অধিগ্রহণ করে, ভেঙে একটি সেতু তৈরি হবে। প্রতিবাদ জানায়িয়ে অসম সাহিত্য সভা, অসম জাতীয়তাবাদী যুব ছাত্র পরিষদ ও আসু। তাদের দাবি, বাড়িটি অবিলম্বে সংরক্ষণ করা ও রাজ্য সরকারের হেফাজতে নেওয়া উচিত। মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রীকে জরুরি পত্র পাঠিয়ে জানান, অসমবাসীর আবেগ জড়িয়ে আছে বাড়িটির সঙ্গে। অনুরোধ করেন, অসম সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা না করে যেন কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া না হয়। আগামী কালই সংস্কৃতি মন্ত্রী ও প্রেস সচিবের নেতৃত্বে অসমের প্রতিনিধিরা ভুবনেশ্বরে ওড়িশা সরকারের সঙ্গে বৈঠক করবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন