প্রশাসনিক গাফিলতি ও আইনি বিতর্কের জেরে হিমঘরে চলে যাওয়া টেট শিক্ষকদের নিয়োগ প্রক্রিয়া ফের শুরু করল সর্বানন্দ সোনোয়াল সরকার।
বিজেপির নির্বাচনী ইস্তেহারে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণের কথা উল্লেখ করে আজ শিক্ষামন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা সাংবাদিক বৈঠকে জানান, প্রথম পর্যায়ে প্রাথমিক শিক্ষকের ৭ হাজার ২৩৪টি পদ পূরণ করা হবে। পুরো প্রক্রিয়া অন-লাইন লটারি ও অন-লাইন নিয়োগপত্রের মাধ্যমে হচ্ছে। যাতে কোথাও ঘুষ দিয়ে নিয়োগ বা অন্য দুর্নীতির সুযোগ না থাকে।
টেট উত্তীর্ণ হওয়ার পরও কয়েক বছর ধরে হাজার হাজার প্রার্থী নিয়োগপত্র হাতে পাননি। এ নিয়ে হাইকোর্টে একাধিক মামলা চলছিল। পরিস্থিতি এমন হয়ে ওঠে, যে আন্দোলন করে ক্লান্ত প্রার্থীরাও হাল ছেড়ে দিয়েছিলেন। হিমন্ত বলেন, ‘‘আইনি জটিলতা অনেকটাই ছিল। কিন্তু আমরা গোটা বিষয়টি নিয়ে আন্তরিক ভাবে হাইকোর্টের সঙ্গে আলোচনা করি। হাইকোর্ট জানায়, উত্তীর্ণ পার্শ্বশিক্ষকদের নিযুক্তি দিতে কোনও সমস্যা নেই। আমরা টেট উত্তীর্ণ ৩৮ হাজার প্রার্থীকে দফায় দফায় নিয়োগ করব।’’ শিক্ষামন্ত্রী জানান, প্রথম পর্যায়ে বিএড ও ডিএড থাকা প্রার্থীদের নিয়োগ করা হচ্ছে।
হিমন্ত জানিয়েছেন, গত কাল ৬ জন পর্যবেক্ষকের উপস্থিতিতে অন-লাইন লটারি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ৭ হাজার ২৩৪ জন প্রার্থীর কে কোন জেলার কোন স্কুলে নিযুক্তি পাবেন, তা ঠিক করা হয়। গোটা প্রক্রিয়ার ভিডিও রেকর্ডিং করা হয়েছে। কেউ তথ্য-অধিকার আইনে রেকর্ডিং দেখতে চাইলে তার সিডি পাবেন।
শিক্ষামন্ত্রী জানান, লটারি অনুযায়ী ধুবুরিতে ২ হাজার ৬১৯ জন, মরিগাঁওয়ে ৮০১ জন, করিমগঞ্জে ৭০৮ জন, নগাঁওতে ৮৭৫ জন, তিনসুকিয়ায় ১৯২ জন, বরপেটায় ৮৪২ জন, বঙাইগাঁওতে ৫৮৭ জন, কাছাড়ে ২০৯ জন, দরং জেলায় ৪৮ জন ও গোয়ালপাড়া জেলায় ৩৫৫ জন নিযুক্তি পেয়েছেন। নিয়োগপত্র হাতে পেতে আগের মতো শিক্ষা দফতরে আসতে হবে না। ২৭ জুন সকাল ৯টা থেকে সংশ্লিষ্ট বিভাগের ওয়েবসাইট থেকেই নিয়োগপত্র ডাউনলোড করা যাবে। তা হাতে পেয়ে নির্দিষ্ট স্কুলে যোগাযোগ করলেই চলবে। মোট নিয়োগের ৩০ শতাংশ মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত রাখা হয়েছে। আগের সরকারের আমলের অপ্রয়োজনীয় বদলির আদেশ রদ করার পাশাপাশি অন্যায় ভাবে বদলি হওয়া শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের ফের আগের কর্মস্থলে ফেরানো হবে।
হিমন্ত আরও জানান, জুন থেকে বার্ষিক এক লক্ষ টাকার কম আয় থাকা পরিবারের ছাত্রছাত্রীদের জন্য কলেজশিক্ষা বিনামূল্যে করে দেওয়া হয়েছে। কলেজের অধ্যক্ষই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন। তার জন্য সার্কেল অফিসার বা মহকুমা আধিকারিকের দফতরে যেতে হবে না। পাশাপাশি, ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে প্রতিবন্ধীদের জন্য নবম শ্রেণি থেকে বিশ্ববিদ্যালয় স্তর পর্যন্ত শিক্ষার ভার নেবে রাজ্য সরকার।