—ফাইল ছবি
অসমের নাগরিকপঞ্জি নিয়ে আদালতে ধাক্কা খেল কেন্দ্র। সুপ্রিম কোর্টের স্পষ্ট নির্দেশ চূড়ান্ত খসড়ার কপি কেন্দ্রকে দেওয়া যাবে না। এনআরসি অধিকর্তাকে শীর্ষ আদালতের নির্দেশ, কোথাও সামান্য তথ্যও কাউকে দিতে পারবেন না তিনি। পাশাপাশি এদিন চূড়ান্ত খসড়া থেকে বাদ পড়া নাগরিকদের জন্য নতুন করে আবেদন করার প্রক্রিয়া চালু করতেও এদিন সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু করে আবেদনের জন্য দু’মাসের সময়সীমা দিতে হবে বাদ পড়া নাগরিকদের। দশটি প্রমাণপত্রের মধ্যে যে কোনও একটি দিয়েই আবেদন করতে পারবেন তাঁরা।
জুলাই মাসের শেষে প্রকাশিত অসমের চূড়ান্ত খসড়া নাগরিকপঞ্জি থেকে বাদ পড়েছিলেন ৪০ লক্ষেরও বেশি মানুষ। নতুন করে তাঁদের আবেদনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। তার মধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের হয়। সেই মামলায় বুধবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি রঞ্জন গগৈ এবং বিচারপতি আর এফ নরিম্যানের বেঞ্চ জানিয়ে দিয়েছে, আবেদনকারীদের নথিপত্র যাচাই, অন্তর্ভুক্তি ও বাদ পড়া বা অন্য কোনও প্রক্রিয়ার বিষয়েই কেন্দ্রকে কোনও তথ্য দিতে পারবে না এনআরসি কর্তৃপক্ষ। এনআরসি অধিকর্তা প্রতীক হাজেলাও কোথাও কোনও তথ্য ‘শেযার’ করতে পারবেন না।
প্রতীক হাজেলা পরামর্শ দিয়েছিলেন, ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চের আগের জমি কেনা-বেচার দলিল, পাসপোর্ট, জীবন বিমা, ভিন রাজ্যের আবাসিক সার্টিফিকেটের মতো দশটি নথির মধ্যে যে কোনও একটি দিয়ে আবেদন করার অনুমতি দেওয়া হোক। শীর্ষ আদালত এদিন সেই পরামর্শই মেনে নিয়েছে। একইসঙ্গে আদালতের পর্যবেক্ষণ, বাদ পড়া অসমবাসীকে নাগরিকত্ব প্রমাণের সব রকম সুযোগ দেওয়া হোক। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে, পুরোপুরি ছাড় দিয়ে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি ২৩ অক্টোবর।
আরও পড়ুন: ট্রাক ভর্তি নথি পাচার করেছিল নীরব মোদীরা, পিএনবি কেলেঙ্কারিতে বিস্ফোরক তথ্য
‘মেরে ঠ্যাং ভেঙে দেব’, প্রতিবন্ধীদের অনুষ্ঠানে বিতর্কিত মন্তব্য বাবুল সুপ্রিয়র
গত ৩০ জুলাই অসমের নাগরিকপঞ্জির চূড়ান্ত খসড়া তালিকা প্রকাশিত হয়। তাতে তিন লক্ষ ২৯ হাজার আবেদনকারীর মধ্যে দু’লক্ষ ৮৯ হাজারের নাম ওঠে। বাদ পড়েন ৪০ লক্ষ ৭০ হাজার ৭০৭ জন। তার মধ্যে অবশ্য দু’লাখ ৪৮ হাজার ৭৭ জনের নাম বাতিল বা অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। স্থগিত রাখা হয়েছে। এই খসড়া প্রকাশের পরই অসম জুড়ে উদ্বেগ শুরু হয়। বাদ পড়াদের ভবিষ্যৎ কী হবে তা নিয়ে শুরু হয় টানাপড়েন। এই বিপুল সংখ্যক মানুষকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হতে পারে বলেও আতঙ্কিত হয়ে পড়েন অনেকে। যদিও সেই সিদ্ধান্ত হবে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পর। তার আগে ফের একবার নাগরিকত্ব প্রমাণের সুযোগ পাচ্ছেন এনআরসি থেকে বাদ পড়া অসমবাসী।