বইমেলার মাস দেড়েক আগে সারদা তদন্তের জেরে বিপাকে অসম প্রকাশনা পরিষদ।
সারদা কেলেঙ্কারির সঙ্গে পরিষদের প্রত্যক্ষ সম্পর্ক নেই। কিন্তু তার অন্যতম দুই কর্তা, হিমন্ত বিশ্বশর্মা এবং সদানন্দ গগৈ সেই অভিযোগে জড়িয়েছেন। কাল গ্রেফতার হয়েছেন সদানন্দ। যে কোনও দিন হিমন্তকেও ডাকতে পারে সিবিআই।
সদানন্দকে ইতিমধ্যেই অসম প্রকাশনা পরিষদের সদস্য পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আজ শিক্ষা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী প্রদ্যোৎ বরদলৈ প্রকাশনা পরিষদের কার্যনির্বাহী সচিব তথা শিক্ষা কমিশনারকে এই নির্দেশ দেন। এই অবস্থায় ১ নভেম্বর থেকে নির্ধারিত বইমেলা পরিচালনার দায়িত্ব কারা সামলাবেন, তা নিয়ে চিন্তায় পরিষদের অন্য সদস্যরা। বইমেলার পরিচালন কমিটিও ভেঙে দেওয়া হচ্ছে। পরিষদের অন্য সদস্যরা জানান, হিমন্তের পদত্যাগের পর শিক্ষা দফতরের অতিরিক্ত দায়িত্ব নেওয়া রাজ্যের বিদ্যুৎ ও শিল্পমন্ত্রী প্রদ্যোৎ বরদলৈ এক বারও পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করেননি।
২০১২ সালে প্রকাশনা পরিষদের সদস্য হিসেবে যোগ দেন সদানন্দ গগৈ। প্রকাশনার সঙ্গে কোনও সম্পর্ক না থাকা গগৈকে সচিব পদে বসান তদানীন্তন শিক্ষামন্ত্রী তথা প্রকাশন পরিষদের সভাপতি হিমন্ত। পরিষদের এক সদস্য জানান, দীর্ঘ দিন সেখানে স্থায়ী সচিব ছিলেন না। তাই সদস্যদের মধ্যে থেকেই সচিব বেছে নেওয়া হয়। অন্য সদস্যরা কাজে ব্যস্ত থাকায় দায়িত্ব নেননি। তখন সদানন্দকে সচিব করা হয়। এই সিদ্ধান্তে প্রকাশকদের একাংশ প্রতিবাদ করেন। ওই বছর বইমেলার দোকান বিতরণ নিয়েও বিতর্ক হয়। কিন্তু, সদানন্দ ইস্তফা দেননি। সুদীপ্ত সেনের চিঠিতে নাম থাকার জেরে অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে পরে সরে যান তিনি।
পরিষদে অবশ্য গগৈয়ের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই। সাহিত্যিক বা প্রকাশক না হয়েও পরিষদের জন্য তিনি যে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিলেন, তা নিয়ে সদানন্দের প্রশংসা করা হয়। প্রকাশনা পরিষদের সদস্য প্রশান্ত চক্রবর্তী বলেন, “সদানন্দবাবুর উদ্যোগে অসম প্রকাশনা পরিষদ কলকাতা বইমেলায় অংশ নিয়েছে। বাংলা বইও ছাপানো হয়।” কলকাতার কলেজ স্ট্রিটের একটি প্রকাশনা সংস্থার সঙ্গে হাত মিলিয়ে সেখানে অসম প্রকাশনা পরিষদের স্থায়ী স্টল তৈরির বিষয়ে চুক্তি করেছিলেন হিমন্ত ও সদানন্দ। কিন্তু এখন দু’জনই পরিষদ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় তা বিশ বাঁও জলে।